সরকারি নিয়োগে জালিয়াতি: সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়

সরকারি নিয়োগে জালিয়াতি: সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়
সর্বশেষ আপডেট: 11-03-2025

সরকারি নিয়োগে দুর্নীতি ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট কঠোর অবস্থান নিয়ে একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। উচ্চ আদালত রাজস্থান হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করে দিয়েছে, যা পরীক্ষায় ভুয়া প্রার্থীর ব্যবহারের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছিল।

নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে রাজস্থান হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করে, পরীক্ষা পদ্ধতিতে জালিয়াতি করা দুই অভিযুক্তের জামিন বাতিল করে দিয়েছে। একজন ছিলেন প্রার্থী, অন্যজন তাঁর স্থলে পরীক্ষা দেওয়া ব্যক্তি। উচ্চ আদালত এই অপরাধকে অত্যন্ত গুরুতর বলে আখ্যায়িত করে বলেছে যে এটি প্রশাসন ও নির্বাহী শাখায় জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করে।

আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এর উপর ভিত্তি করেই যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচন করা হয়।

পুরো ঘটনা কি?

রাজস্থানে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) (স্বায়ত্তশাসিত বিভাগ) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা-২০২২-এর সময় আসল প্রার্থী ইন্দ্রাজ সিংহের স্থলে ভুয়া প্রার্থী সালমান খান পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এই জালিয়াতি উন্মোচিত হওয়ার পর পুলিশ উভয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। নিম্ন আদালত এই কাজকে গুরুতর বলে মনে করে তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়, কিন্তু রাজস্থান হাইকোর্ট বলেন যে—

* আসল প্রার্থীর নির্বাচন হয়নি।
* উভয়েরই কোনও অপরাধমূলক ইতিহাস নেই।
* তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট কেন জামিন বাতিল করলো?

রাজস্থান সরকার এই জামিন চ্যালেঞ্জ করে, যা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি আহসানুদ্দীন আমানউল্লাহর বেঞ্চ গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে। আদালত বলেছে যে একবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর সাধারণত তা বাতিল করা হয় না, কিন্তু এই মামলায় অপরাধের সমাজে প্রভাবের কথা বিবেচনা করে জামিন বাতিল করা জরুরি।

রায়ে সুপ্রিম কোর্ট কি বলেছে?

রায় লিখে বিচারপতি সঞ্জয় করোল বলেছেন- ভারতে সরকারি চাকরির জন্য অত্যধিক প্রতিযোগিতা রয়েছে। পরীক্ষা প্রক্রিয়ার পবিত্রতা বজায় রাখা জরুরি, যাতে সঠিক ও যোগ্য প্রার্থীরা সরকারি পদে নিয়োগ পায়। যখন এই ধরণের জালিয়াতি হয়, তখন শুধুমাত্র ইমানদার প্রার্থীদের অধিকারই নয়, সমগ্র ব্যবস্থায় জনগণের আস্থাও ক্ষুণ্ণ হয়।

ট্রায়াল কোর্টের রায়ের সমর্থন

সুপ্রিম কোর্ট ট্রায়াল কোর্টের রায়কে সমর্থন করে বলেছে যে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরীক্ষার নিরপেক্ষতায় আপোষ করেছে এবং এর ফলে হাজার হাজার প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করে পরীক্ষা দিয়েছিল। আদালত বলেছে যে যদিও অভিযুক্তদের উপর অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ বলে মনে করার নীতি প্রযোজ্য, কিন্তু এই ধরণের গুরুতর মামলায় আইনকে তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দিতে হবে।

Leave a comment