কংগ্রেস গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় দলীয় কলহ এবং দুর্বল সংগঠনের সাথে লড়াই করছে। রাহুল গান্ধী এই রাজ্যগুলিতে ফোকাস করে সংগঠন সৃজন অভিযান শুরু করেছেন।
রাহুল গান্ধী: কংগ্রেসের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা উদ্বেগজনক। কেন্দ্র থেকে ক্ষমতা হারানোর পর দলটি এখন মাত্র তিনটি রাজ্যে সীমাবদ্ধ। হিমাচল প্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং কর্ণাটকে কংগ্রেসের নিজস্ব সরকার আছে, কিন্তু গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানা যেমন বড় রাজ্যগুলিতে ধারাবাহিক পরাজয় এবং অভ্যন্তরীণ দলীয় কলহ কংগ্রেসকে দুর্বল করে তুলেছে। রাহুল গান্ধী এই রাজ্যগুলিতে সংগঠন সৃজন অভিযান চালাচ্ছেন, কিন্তু তাঁর জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে।
কেন্দ্র থেকে সরে যাওয়ার পর রাজ্যগুলিতে দুর্বল হয়ে পড়েছে কংগ্রেস
২০১৪ সালে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে বাদ পড়ার পর রাজ্যগুলিতেও কংগ্রেসের জনসমর্থন দ্রুত কমেছে। আজকের তারিখে দলটির কেবলমাত্র তিনটি রাজ্য—হিমাচল প্রদেশ, কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানায় নিজস্ব সরকার আছে। এর মধ্যে কোনও রাজ্যই হিন্দি বেল্টের অংশ নয়। উত্তর ভারতে কংগ্রেস ধারাবাহিকভাবে পরাজয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। এমতাবস্থায় দলটিকে জাতীয় পর্যায়ে আবার শক্তিশালী করার জন্য রাহুল গান্ধী নতুন করে কৌশল তৈরি শুরু করেছেন।
রাহুল গান্ধীর সংগঠন সৃজন অভিযান
দলকে শক্তিশালী করার জন্য রাহুল গান্ধী 'সংগঠন সৃজন অভিযান' শুরু করেছেন। এই অভিযানের শুরু তিনি গুজরাট থেকে করেছেন, তারপর মধ্যপ্রদেশ এবং তারপর হরিয়ানা ভ্রমণ করেছেন। এই রাজ্যগুলির নির্বাচন ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে কারণ এখানে কংগ্রেসের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল এবং দলীয় কলহ চরমে রয়েছে।
গুজরাট: ৩০ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে
গুজরাটে কংগ্রেস ১৯৯৫ সালের পর থেকে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। এই রাজ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের গৃহ রাজ্য, যেখানে বিজেপির ভূমি সংযোগ অত্যন্ত শক্তিশালী। রাহুল গান্ধী এখান থেকেই সংগঠন সৃজন অভিযান শুরু করেছেন, যার মাধ্যমে এই ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে দলটি কঠিন এলাকাতেও ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশ: দলীয় কলহের শিকার
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ২০18 সালে কমলনাথের নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছিল, কিন্তু এই সরকার মাত্র ১৫ মাস স্থায়ী হয়। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিদ্রোহের পর সরকার পতন হয়। বর্তমানে দলের ভিতরে দিগ্বিজয় সিং, কমলনাথ, অরুণ যাদব এবং অজয় সিংয়ের মতো অনেক নেতা রয়েছেন যাদের নিজ নিজ দল আছে। এই পারস্পারিক টানাপড়েন কংগ্রেসকে শক্তিশালী হতে দিচ্ছে না।
হরিয়ানা: ক্যাডার নয়, গোষ্ঠীর রাজত্ব
হরিয়ানায় কংগ্রেস গত তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। এখানে দলে ভূপেন্দ্র সিং হুড্ডা এবং কুমারী শৈলজা-রণদীপ সুরজেওয়ালা গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন রয়েছে। দলের সংগঠন পুরোপুরি দাঁড়াতে পারেনি। ক্যাডার নেতাদের সাথে যুক্ত, দলের সাথে নয়। এমতাবস্থায় দলের জন্য কোনও ঠোস ভিত্তি তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিজেপির দুর্গে কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ
গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানা তিনটিই রাজ্য বিজেপির শক্তিশালী দুর্গ বলে মনে করা হয়। কেন্দ্রে যুপিএর সরকার থাকাকালীনও এই রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস দুর্বল ছিল। আজ যখন বিজেপির জনপ্রিয়তা চরমে, এমতাবস্থায় কংগ্রেসের জন্য এখানে নির্বাচন জেতা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।