রাহুল গান্ধীর বিহার শিক্ষা ন্যায় সংবাদ অভিযান

রাহুল গান্ধীর বিহার শিক্ষা ন্যায় সংবাদ অভিযান
সর্বশেষ আপডেট: 13-05-2025

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ১৫ মে দারভঙ্গায় ‘শিক্ষা ন্যায় সংবাদ’ শুরু করবেন। কনহাইয়া কুমার জানিয়েছেন, এই অভিযানের অধীনে তিনি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করে শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যাগুলি জানবেন এবং ‘ন্যায়পত্র’ প্রস্তুত করবেন।

রাহুল গান্ধী: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ১৫ মে বিহারের দারভঙ্গা সফরে যাবেন, যেখানে তিনি ‘শিক্ষা ন্যায় সংবাদ’ শুরু করবেন। এই সফরকালে তিনি বিহারের শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যাগুলি উন্মোচন করবেন এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের সমস্যাগুলি শুনবেন। এই অভিযান সম্পর্কে কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা কনহাইয়া কুমার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। এই সংবাদ বিহারে কংগ্রেসের জনসংযোগ অভিযানের অংশ হবে, যার প্রধান উদ্দেশ্য হল বিহারের শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলি সামনে আনা।

‘শিক্ষা ন্যায় সংবাদ’র অধীনে কী হবে?

বিহারের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলি উন্মোচন করার জন্য কংগ্রেস ‘শিক্ষা ন্যায় সংবাদ’ শুরু করেছে। এই অভিযানের অধীনে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসের ৬০ জনেরও বেশি জাতীয় নেতা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাথে সংবাদ করবেন। এই সংবাদের প্রধান উদ্দেশ্য হল কংগ্রেস নেতারা ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে তাদের সমস্যা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এরপর একটি ‘ন্যায়পত্র’ প্রস্তুত করা হবে, যাতে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যার সমাধান করা হবে।

কনহাইয়া কুমার জানিয়েছেন যে, এই অভিযান সময়সীমাবদ্ধ হবে না, বরং এটি ক্রমাগত চলবে। কংগ্রেস নেতারা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রাবাস পরিদর্শন করবেন এবং ছাত্রছাত্রীদের সমস্যাগুলি জানার চেষ্টা করবেন।

শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি এবং ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা

কনহাইয়া কুমার বিহারের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত বেশ কিছু সমস্যা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, বিহারের ছাত্রছাত্রীরা বহু বছর ধরে শিক্ষা বর্ষে দেরি, প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং প্রতিবাদ করলে দমন এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তদুপরি, ছাত্রছাত্রীরা যথাযথ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না।

কংগ্রেসের এই অভিযান বিহারের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এই সংবাদের ভিত্তিতে কংগ্রেস ‘ন্যায়পত্র’ প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করেছে, যা ভারতীয় জোটের প্রতিশ্রুতির ভিত্তি হিসেবে বিহারে ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে কাজে লাগবে।

কংগ্রেসের জনসংযোগ অভিযান

প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্রসংঘের সভাপতি কনহাইয়া কুমার বলেছেন, কংগ্রেসের জনসংযোগ অভিযান কোনও ছবি নয়, যা হিট বা ফ্লপ হিসেবে দেখা হবে। তিনি জানিয়েছেন, ‘পলায়ন রোকো, নিয়োগ দাও পদযাত্রা’ শেষ হয়েছে, কিন্তু কংগ্রেসের জনগণের সাথে যোগাযোগের অভিযান ক্রমাগত চলবে। কংগ্রেসের লক্ষ্য হল বিহারের জনগণের মনে তাদের জায়গা করে নেওয়া এবং তাদের সমস্যার সমাধানের জন্য সংগ্রাম করা।

কনহাইয়া কুমার বলেছেন, জনগণের সাথে যোগাযোগ একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া। কংগ্রেসের নেতারা শুধুমাত্র নির্বাচনের সময় নয়, বরং সর্বদা জনগণের মধ্যে থেকে তাদের সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করবেন।

নীতীশ কুমার এবং ডাবল ইঞ্জিন সরকারের উপর আক্রমণ

বিহারের ডাবল ইঞ্জিন সরকারের উপরও তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে বিহার কোনও বিশেষ লাভ পায়নি। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের গৃহরাজ্য গুজরাটে বুলেট ট্রেনের মতো বড় প্রকল্প পাওয়া যাচ্ছে। বিহারের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই অসমতা কংগ্রেসের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

তিনি ডাবল ইঞ্জিন সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সমালোচনা করে বলেছেন যে রাজ্যে কোনও বাস্তব পরিবর্তন হয়নি। কংগ্রেসের ধারণা, বিহারের শিক্ষাব্যবস্থা এবং উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী ও স্থায়ী সরকারের প্রয়োজন।

জাতিগত জনগণনার প্রসঙ্গে কংগ্রেসের অবস্থান

কনহাইয়া কুমার জাতিগত জনগণনার বিষয়েও তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস জাতিগত জনগণনাকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করতে চায়, যেমন তেলেঙ্গানায় করা হয়েছিল। এর জন্য বিস্তারিত প্রশ্নাবলীর ভিত্তিতে জনগণনা করা হবে, যাতে সকল জাতি ও সম্প্রদায়ের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়।

কংগ্রেস আরও বলেছে যে, ৫০% সংরক্ষণের সীমা তুলে দেওয়ার পক্ষে থাকতে পারে। প্রয়োজন হলে ইডব্লিউএস (অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণী) সংরক্ষণও বাড়ানো যেতে পারে, যাতে সকল শ্রেণীর মানুষ তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে ন্যায় পায়। কংগ্রেস এই বিষয়ে একটি সুসংহত ও স্বচ্ছ নীতি তৈরির ইচ্ছা পোষণ করে।

Leave a comment