পহেলগাম আক্রমণের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী কঠোর সতর্কতা জারি করেছেন। ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছে, আটারী সীমান্ত বন্ধ করেছে, পাকিস্তানী ভিসা বাতিল করেছে এবং কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে।
বিহার: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সন্ত্রাসবাদ এবং তার সমর্থকদের নিয়ে বড় বক্তব্য দিয়েছেন। বিহারের মধুবনী জেলা থেকে তিনি বিশ্বকে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করেছেন— “We will identify them, we will track them, and we will not spare them.” অর্থাৎ, আমরা সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করব, তাদের খোঁজ করব এবং তাদের কোথাও লুকিয়ে থাকলেও ছাড়ব না।
প্রধানমন্ত্রী পঞ্চায়েতী রাজ দিবস উপলক্ষে মধুবনীতে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি পহেলগাম হামলায় নিহত ব্যক্তিদের নীরব শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন এবং চোখ বন্ধ করে তাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। এরপর তার বক্তব্যে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
“এটি কেবলমাত্র হামলা নয়”— প্রধানমন্ত্রী মোদী
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “পহেলগামে যে হামলা হয়েছে তা কেবলমাত্র নিরস্ত্র পর্যটকদের উপর নয়, এটি ভারতের আত্মার উপর হামলা। যারা এই হিংসার পিছনে আছে, তাদের কল্পনারও অতিক্রম করে শাস্তি দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেছেন যে, দেশব্যাপী মানুষ এই দুঃখের সময়ে একত্রিত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। সরকার সকল আহত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বার্তা
প্রধানমন্ত্রী মোদী তার বক্তব্যে ইংরেজিতে বলেছেন, “This is a message for the world. We will not rest till every terrorist and their supporter is punished. Humanity stands with India.”
তার এই বক্তব্য স্পষ্টতই পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদীদের প্রতিপালকদের বিরুদ্ধে ছিল। তিনি আরও বলেছেন যে আজ মানবতায় বিশ্বাসী প্রতিটি দেশ ভারতের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
ভারতের প্রতিরোধ
পহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সিদ্ধান্তগুলির তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন যে, ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি অবিলম্বে স্থগিত করেছে। এর সাথে সাথে আটারী সীমান্তও অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে দুটি দেশের মধ্যে যাতায়াতের উপর বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সরকার সার্ক ভিসা ছাড় প্রকল্পের আওতায় জারি করা সমস্ত পাকিস্তানী নাগরিকের ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও, নয়াদিল্লিস্থিত পাকিস্তানী হাই কমিশনে কর্মরত সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ইসলামাবাদস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, ভারত সন্ত্রাসবাদের সাথে কখনোই আপোষ করবে না। যারা সন্ত্রাসকে সমর্থন করবে, তারা দেশে থাকুক বা সীমান্ত পেরিয়ে— তাদের ক্ষমা করা হবে না।
তিনি পুনরায় বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদে ভারতের আত্মা কখনো ভাঙবে না। সন্ত্রাসীদের শাস্তি পাওয়া নিশ্চিত করা হবে।”