আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন নীতা আম্বানি একটি বিশাল আয়োজন করছেন। ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, নিউইয়র্কের লিঙ্কন সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টসে ‘ইন্ডিয়া উইকেন্ড’ নামে তিন দিনব্যাপী একটি সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
নয়াদিল্লি: রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি সর্বদা সমাজসেবা এবং কলা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য আলোচনায় থাকেন। ২০২৩ সালে তিনি ‘নীতা মুকেশ আম্বানি কালচারাল সেন্টার’ উদ্বোধনের মাধ্যমে কলা ও সংস্কৃতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এবার আবারও নীতা আম্বানি ভারতের সমৃদ্ধ কলা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং লিগেসিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ভারতীয় সংস্কৃতির একটি নতুন বিশ্ব মঞ্চ
নীতা আম্বানি, যিনি সর্বদা ভারতীয় কলা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ভারতীয়তার একটি নতুন মুখ তুলে ধরার সংকল্প নিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস, সংস্কৃতি মানুষকে একত্রিত করে এবং এই আবেগের সাথে তিনি ‘ইন্ডিয়া উইকেন্ড’ কে বিশ্বের সৃজনশীল কল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। লিঙ্কন সেন্টারের মতো মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চে ভারতীয় কলার এই সমাবেশ ভারতীয় সভ্যতাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
এই আয়োজনের তিন দিন ধরে সঙ্গীত, নৃত্য, থিয়েটার, ফ্যাশন এবং খাবারের রঙ ছড়িয়ে পড়বে। প্রথম দিন একটি বিশাল স্বাগত অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হবে, যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন। এই উপলক্ষে আম্বানির হ্যান্ডলুম ব্র্যান্ড ‘স্বদেশ’র জন্য বিখ্যাত ডিজাইনার মনীষ মলহোত্রা কর্তৃক ডিজাইনকৃত বিশেষ পোশাক প্রদর্শিত হবে।
ভারতীয় ফ্যাশনের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার সংমিশ্রণ দেখাবে এই ফ্যাশন শো, যা বিশ্বকে ভারতীয় কারুশিল্প এবং নকশার অনন্য সৌন্দর্যের সাথে পরিচিত করবে।
সঙ্গীত এবং নৃত্যের বিশ্বমানের মেলা
‘ইন্ডিয়া উইকেন্ডে’ বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক শঙ্কর মহাদেবন এবং শ্রেয়া ঘোষাল তাদের মধুর কণ্ঠে শ্রোতাদের মন মোহন করবেন। এছাড়াও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উদীয়মান তারকা ঋষভ শর্মা তাঁর উপস্থাপনার মাধ্যমে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গভীরতা তুলে ধরবেন। নৃত্য এবং থিয়েটারের উপস্থাপনা এই উৎসবকে আরও স্মরণীয় করে তুলবে।
এই অনুষ্ঠানে ভারতের বিখ্যাত শেফ বিকাশ খান্নাও অংশগ্রহণ করবেন, যিনি আমেরিকান দর্শকদের ভারতীয় খাবারের আসল স্বাদের সাথে পরিচিত করাবেন। তাঁর খাবারের উপস্থাপনা ভারতীয় খাদ্য সংস্কৃতির সমৃদ্ধি তুলে ধরবে। এর সাথে সাথে ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও হস্তশিল্পের একটি বিশেষ প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হবে, যা বিশ্বকে ভারতের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক রঙের সাথে পরিচিত করবে।
‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মিউজিকাল’ থেকে ইতিহাসের জীবন্ত ঝলক
কার্যক্রমের একটি প্রধান আকর্ষণ হবে ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মিউজিকাল: সিভিলাইজেশন টু নেশন’, যার পরিচালনা করছেন বিখ্যাত থিয়েটার পরিচালক ফিরোজ আব্বাস খান। এই মিউজিকাল ৭,০০০ বছরেরও বেশি পুরানো ভারতীয় ইতিহাসকে নাটকীয়ভাবে তুলে ধরবে। ১০০ জনেরও বেশি শিল্পীর অংশগ্রহণে এই মঞ্চায়ন ভারতীয় সভ্যতার বিভিন্ন পর্যায়, ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি বিশ্বের সামনে জীবন্ত করে তুলবে।
নীতা আম্বানির এই প্রচেষ্টা শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি ভারতের কলা ও সংস্কৃতিকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দানের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। তাঁর বিশ্বাস, যখন ভারতীয় সংস্কৃতি সঠিক মঞ্চ পাবে তখন তা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা ও শিক্ষার উৎস হয়ে উঠবে।
