নেশনাল হেরাল্ড মানি লন্ডারিং মামলায় সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সমস্যা বেড়েছে, দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্ট শুক্রবার উভয়কে সহ অন্যদের নোটিশ পাঠিয়েছে।
নয়াদিল্লি: নেশনাল হেরাল্ড মানি লন্ডারিং মামলায় কংগ্রেসের প্রধান নেতা সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সমস্যা আরও একবার বেড়েছে। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্ট শুক্রবার এই মামলায় নোটিশ জারি করেছে। এই নোটিশ সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ নির্দেশালয় (ED) কর্তৃক দাখিল করা চার্জশিটের উপর জারি করা হয়েছে। কোর্ট তাদের সকলকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছে।
নেশনাল হেরাল্ড মানি লন্ডারিং মামলা
এই মামলা নেশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের সাথে জড়িত, যার প্রতিষ্ঠা ১৯৩৮ সালে পন্ডিত জওহরলাল নেহরু করেছিলেন। প্রথমদিকে এটি একটি প্রভাবশালী সংবাদপত্র হিসেবে কাজ করত, কিন্তু ২০০৮ সালে আর্থিক সংকট এবং ঘাটতির কারণে এর পরিচালনা বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর এই মামলা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে যখন এটা প্রকাশ পায় যে কংগ্রেস দল এসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (AJL) কে ৯০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল, যা পরবর্তীতে ইয়াং ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডকে স্থানান্তরিত করা হয়।
ইয়াং ইন্ডিয়ার বিনিয়োগ ও অভিযোগ
অভিযোগ উঠেছে যে AJL-এর সম্পত্তি মাত্র ৫০ লক্ষ টাকায় ইয়াং ইন্ডিয়াকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, যখন এই সম্পত্তির আসল মূল্য কয়েকশ কোটি টাকা। ইয়াং ইন্ডিয়ায় সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর ৭৬% শেয়ার আছে। এই মামলা নিয়ে ২০০২ সালে সুব্রমণ্যম স্বামী আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন, যার পরে ED মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনে এবং তদন্ত শুরু করে।
মামলার সময়রেখা
এই মামলা বছরের পর বছর ধরে আদালত এবং তদন্তকারী সংস্থার নজরে রয়েছে, এবং এখন পর্যন্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে:
২০১২: সুব্রমণ্যম স্বামী আদালতে মামলার অভিযোগ দায়ের করেন।
২০১৪: প্রয়োগ নির্দেশালয় মামলার তদন্ত শুরু করে এবং সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে সামনে হাজির করার জন্য সামন করে।
২০১৫: পটিয়ালা হাউস কোর্ট সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে জামিন দেয়।
২০২২: ED সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ পাঠায়।
২০২৫: দিল্লি কোর্ট চার্জশিটের উপর শুনানি করে নোটিশ জারি করে।
কংগ্রেস নেতাদের অবস্থান
কংগ্রেস দল এই মামলাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করে আসছে। দলের মতে, এই মামলায় কোনও ভুল কাজ হয়নি এবং সমস্ত কাজ আইনসঙ্গতভাবে করা হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল এই মামলাকে গুরুতর অভিযোগ বলে মনে করে এবং তদন্তের দাবি করে আসছে।