মধ্যপ্রদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট: নারী, কৃষক ও অবকাঠামো উন্নয়নে ফোকাস

মধ্যপ্রদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট: নারী, কৃষক ও অবকাঠামো উন্নয়নে ফোকাস
সর্বশেষ আপডেট: 12-03-2025

মধ্যপ্রদেশের অর্থমন্ত্রী জগদীশ দেওড়া বিধানসভায় বাজেট উত্থাপন করেছেন। এতে কেন্দ্রের পরিকল্পনার সাথে ‘লাড়লি বোন’দের সংযুক্ত করা, ১ লক্ষ কিমি সড়ক নির্মাণ এবং নতুন বিনিয়োগ নীতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

MP Budget 2025: মধ্যপ্রদেশ সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট উত্থাপন করেছে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী জগদীশ দেওড়া বিধানসভায় এটি উপস্থাপন করেছেন। ৪.২০ লক্ষ কোটি টাকার এই বাজেটে নারী, কৃষক, শিল্প ও অবকাঠামো উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মোহন যাদব সরকারের এই দ্বিতীয় বাজেটে কোনো নতুন কর আরোপ করা হয়নি।

মহিলাদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা

- ‘মুখ্যমন্ত্রী লাড়লি বহনা’ পরিকল্পনার জন্য ১৮,৬৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
- নারীশক্তি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরিকল্পনার জন্য ২৬,৭৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
- কর্মজীবী মহিলাদের জন্য নতুন হোস্টেল নির্মাণ করা হবে।
- আঙ্গনওয়াড়ি সেবার জন্য ৩,৭২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

কৃষি ও কৃষকদের বড় উপহার

- কৃষকদের শূন্য সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা।
- কৃষক উৎসাহ পরিকল্পনার জন্য ৫,২৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ‘সম্বল’ পরিকল্পনার জন্য ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ধান বোনাসের জন্য ৮৫০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
- কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য ৫৮,২৫৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৩,৪০৯ কোটি টাকা বেশি।

সড়ক ও অবকাঠামোতে বড় বিনিয়োগ

- আগামী ৫ বছরে ১ লক্ষ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের লক্ষ্য।
- ৫ বছরে ৫০০ রেলওয়ে ওভার ব্রিজ ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
- এই বছর ৩,৫০০ কিলোমিটার নতুন সড়ক ও ৭০টি সেতু নির্মাণ করা হবে।
- উজ্জয়িনির বিমানবন্দর উন্নয়ন করা হবে।
- ‘জল জীবন মিশন’এর জন্য ১৭,১৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ‘সিংহস্থ ২০২৮’ এর প্রস্তুতির জন্য ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।

শিল্প ও কর্মসংস্থানের উন্নয়ন

- রাষ্ট্রে ১০,০০০ নতুন স্টার্টআপ স্থাপনের লক্ষ্য।
- আগামী ৫ বছরে শিল্পকে ৩০,০০০ কোটি টাকা ইনসেন্টিভ দেওয়ার পরিকল্পনা।
- এই বছর শিল্পের জন্য ৩,২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ৩৯টি নতুন শিল্প এলাকা উন্নয়ন করা হচ্ছে, যার ফলে ৩ লক্ষের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
- ‘এক জেলা-এক পণ্য’ পরিকল্পনাকে উৎসাহিত করা হবে।
- প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বড় বরাদ্দ

- মধ্যপ্রদেশে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
- ‘সিএম রাইজ’ স্কুলের জন্য ১,০১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ২২টি নতুন আইটিআই কলেজ তৈরি করা হবে।
- বিদেশে পড়াশোনার জন্য ৫০ জন ছাত্রকে বৃত্তি দেওয়া হবে।
- ‘আয়ুষ্মান ভারত’ পরিকল্পনার জন্য ২০৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- স্বাস্থ্য খাতের মোট বাজেট ২৩,৫৩৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন

- ওঙ্কারেশ্বরে ‘মহালোক’ উন্নয়ন করা হবে।
- ‘রাম পথ গমন’ পরিকল্পনার জন্য ৩০ কোটি টাকা, ‘শ্রীকৃষ্ণ পথেয়’ পরিকল্পনার জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পর্যটন উন্নয়নের জন্য ১৪টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে ৫০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে।
- গীতা ভবনের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- তীর্থদর্শন পরিকল্পনার জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।

পরিবেশ ও শক্তি খাতে বড় পদক্ষেপ

- মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের মধ্যে ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
- ২০৬০ টি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামকে সৌরশক্তিতে আলোকিত করার পরিকল্পনা।
- মুরেনায় রাজ্যের প্রথম সৌরশক্তি সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য ঘোষণা

- গৃহ বিভাগের জন্য ১২,৮৭৬ কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়েছে।
- ৪টি নতুন কারাগার নির্মাণ করা হবে।
- পুলিশ বাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য নতুন পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে।
- বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘর্ষ রোধের জন্য ৩,০০০ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া দেওয়া হবে।

নগর ও গ্রামীণ উন্নয়ন

- নগর উন্নয়নের জন্য ১৮,৭১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস’ পরিকল্পনার জন্য ৪,৪০০ কোটি টাকা, ‘মনরেগা’র জন্য ৪,০৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- পঞ্চায়েতের উন্নয়নের জন্য ৬,০০৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে।
- ‘জলগঙ্গা সংবর্ধন’ অভিযানের আওতায় ধর্মীয় স্থান ও ঘাটের সংস্কার করা হবে।

খেলা ও যুব উন্নয়ন

- প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।
- খেলার স্টেডিয়াম হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং প্যাড হিসেবেও ব্যবহার করা হবে।
- ‘মুখ্যমন্ত্রী সুগম পরিবহন’ পরিকল্পনার জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ।

বাজেটে কোনো নতুন কর নেই

অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে বাজেটে কোনো নতুন কর আরোপ করা হয়নি এবং কোনো বিদ্যমান করের হারও বৃদ্ধি করা হয়নি। এই বাজেট রাজ্যকে উন্নত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেখানে সকল শ্রেণীর মানুষের প্রতি দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

```

Leave a comment