কাটিহারে অবধ আসাম এক্সপ্রেসের সাথে ট্রলি সংঘর্ষ: এক নিহত, চার আহত

কাটিহারে অবধ আসাম এক্সপ্রেসের সাথে ট্রলি সংঘর্ষ: এক নিহত, চার আহত
সর্বশেষ আপডেট: 20-06-2025

বিহারের কাটিহারে অবধ আসাম এক্সপ্রেস রেলওয়ে ট্রলির সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় ট্রলিম্যান নিহত এবং আরও চারজন কর্মী আহত হয়েছেন। পুল মেরামতের কাজ থেকে ফিরতি পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

অবধ আসাম এক্সপ্রেস: বিহারের কাটিহার জেলায় একটি মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। সোনপুর রেল বিভাগের বারৌনি-কাটিহার রেলপথে অবধ আসাম এক্সপ্রেস একটি রেলওয়ে ট্রলিকে জোরালো ধাক্কা মারে। এই দুর্ঘটনা কাটিহার জেলার সেমাপুর এবং কাড়াগোলা রোড স্টেশনের মধ্যে মহারানী কুড়িয়া নামক স্থানে ঘটে। দুর্ঘটনায় ট্রলিম্যান প্রমোদ কুমার যাদব ঘটনাস্থলেই মারা যান, এবং আরও চারজন রেল কর্মী গুরুতর আহত হন।

পুল মেরামতের কাজ শেষ করে ফিরতি পথে দুর্ঘটনা

ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সকলেই বোরোগাটের কাছে একটি রেলওয়ে সেতুর মেরামতের কাজ করে ফিরছিলেন। মেরামতের কাজ শেষ করে তারা ট্রলির মাধ্যমে আপ লাইনে ফিরছিলেন। এই সময় কাটিহার থেকে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আসার খবর পেয়ে ট্রলিটি ডাউন লাইনে নামিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কর্মীদের জানা ছিল না যে, একই লাইনে অবধ আসাম এক্সপ্রেস ইতোমধ্যেই ছুটে চলেছে।

ধাক্কার পর প্রায় এক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রলি

মহারানী কুড়িয়ার কাছে পোল নম্বর ১৬-১৬ এর কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে রেল ট্র্যাকটি তীব্রভাবে ঘুরেছে। এই সময় দ্রুত গতিতে আসা অবধ আসাম এক্সপ্রেস ট্রলিকে সরাসরি ধাক্কা মারে। ধাক্কা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, ট্রেনের ইঞ্জিন ট্রলিটিকে প্রায় এক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় ট্রলিম্যান প্রমোদ কুমার যাদব ঘটনাস্থলেই মারা যান।

আহত কর্মীদের অবস্থা গুরুতর

দুর্ঘটনায় আহত কর্মীদের পরিচয় পাওয়া গেছে পিডব্লিউএ ওয়াই বিভাগের ধনঞ্জয় কুমার, ট্রলিম্যান সূর্য কুমার, আদিত্য কুমার এবং মনোজ কুমার। তাদের প্রথমে বারারী সম্প্রদায়িক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়, যেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কাটিহার মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। তাদের সকলের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান শুরু

রেলওয়ে প্রশাসন এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যর্থতা এবং ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে সমন্বয়ের অভাবকে প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। রেলওয়ের নিরাপত্তা সংস্থা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে এবং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জবানবন্দী গ্রহণ করছে।

স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ

দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। তারা রেলওয়ের অবহেলার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং প্রশ্ন তোলে যে, এ ধরণের দুর্ঘটনা কখন বন্ধ হবে। মানুষের দাবি, রেলওয়ের ট্রলি চালানো এবং ট্রেন চলাচলের মধ্যে উন্নত সমন্বয় স্থাপন করা উচিত যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

মৃত কর্মীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি

মৃত প্রমোদ কুমার যাদবের পরিজন ও সহকর্মীরা শোকাহত। তারা রেলওয়ে প্রশাসনের কাছে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং একজন আশ্রিতকে চাকরিতে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেয়নি। তবে বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃতের পরিবারকে শীঘ্রই সাহায্য প্রদান করা হবে।

রেলওয়ে প্রশাসন জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য লাইনে ট্র্যাফিক ব্যাহত হয়, কিন্তু দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে ট্রলি সরিয়ে লাইন পরিষ্কার করা হয়। এরপর রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।

Leave a comment