কানাডা ২০২৫ সালের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা স্পষ্ট করে জানায়নি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বব্যাপী বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না।
নয়াদিল্লি: কানাডা ২০২৫ সালের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা স্পষ্ট করে জানায়নি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বব্যাপী বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না। ২০২৯ সাল থেকে ভারত ক্রমাগত জি-৭ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করে আসছে, কিন্তু এবার কানাডার সাথে উত্তপ্ত সম্পর্কের কারণে পরিস্থিতি অনিশ্চিত রয়েছে।
কানাডার নীরবতার অর্থ
এই বছর ১৫-১৭ জুন আলবার্টার কানানাস্কিসে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে, কানাডিয় কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত অতিথি দেশের তালিকা, ভারত সহ, প্রকাশ করেনি। এই বিষয়টিতে কানাডার আনুষ্ঠানিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, কারণ নয়াদিল্লি ও ওটাওয়ার মধ্যে সম্প্রতি উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতকে আমন্ত্রণ দেওয়ার বিলম্ব কানাডার কৌশলগত চিন্তাভাবনা এবং দেশীয় রাজনৈতিক চাপের ফল হতে পারে। উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের মধ্যে খালিস্তান সমর্থকদের নিয়ে বিরোধ তীব্র হয়েছিল, যার ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফাটল ধরে।
ভারত কি আমন্ত্রণ পাবে?
জি-৭ মিডিয়া দলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, "অতিথি দেশদের আমন্ত্রণ নিয়ে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। উপযুক্ত সময় তথ্য শেয়ার করা হবে।" এই বিবৃতি অনেক অনুমানের জন্ম দিচ্ছে যে ভারত এবার এই শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণ করবে কি না। তবে, ভারত ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রস্তুত, যদি পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের অনুভূতি বজায় থাকে। সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো কি না, তা কানাডার পররাষ্ট্রনীতির দিকনির্দেশনাকে নির্ধারণ করবে।
মার্ক কার্নির সামনে চ্যালেঞ্জ
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে তার পথ সহজ নয়। ট্রুডোর আমলে ভারত-কানাডা সম্পর্কে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল, এবং এখন কার্নিকে সেই আস্থা পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
জি-৭ এবং ভারতের গুরুত্ব
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বিশ্বব্যাপী কূটনীতিতে এক শক্তিশালী শক্তি হিসেবে ভারত জি-৭ এর এজেন্ডায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতা সম্পর্কে ভারতের অবস্থানের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। তাই যদি কানাডা ভারতকে আমন্ত্রণ না করে, তবে তা একটি বড় রাজনৈতিক ইঙ্গিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০২৯ সাল থেকে ক্রমাগত জি-৭ বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন। তাকে প্রথম ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোন বিয়ারিটজ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি এবং জাপানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনেও ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে, কানাডার পক্ষ থেকে ভারতের আমন্ত্রণ নিয়ে রহস্যের অবস্থা এই ইঙ্গিত দেয় যে দুটি দেশের সম্পর্কে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
