ধুবুরীতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাতে গুলি করে মারার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে RAF ও CRPF মোতায়েন করা হয়েছে।
Assam: অসমের ধুবুরী জেলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধির পর মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে রাতে “দেখেই গুলি করা” (Shoot-at-sight) নির্দেশ জারি করেছেন। একটি মন্দিরের কাছে মাংসের টুকরো পাওয়া এবং পরবর্তী উস্কানিমূলক ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মন্দিরের কাছে মাংস পাওয়ার পরে উত্তেজনা
ধুবুরী জেলায় উত্তেজনার সূত্রপাত হয় ৭ই জুন হনুমান মন্দিরের সামনে একটি গরুর মাথা পাওয়া গেলে। এই ঘটনা বকরিদের একদিন পরে ঘটে, যার ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে এলাকায় উস্কানিমূলক ঘটনা আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু পরের দিনই মন্দিরের সামনে একই ঘটনা আবার ঘটে এবং রাতে পাথর ছোড়াও হয়। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
মুখ্যমন্ত্রী ধুবুরী সফর
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শুক্রবার ধুবুরী সফর করেন। তিনি পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে কঠোর নির্দেশ জারি করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটি “সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী” এলাকায় শান্তিভঙ্গের ষড়যন্ত্র করছে, যা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। তিনি “দেখেই গুলি করার” নির্দেশ দিয়ে বলেন যে, রাতে কেউ যদি কোনও উস্কানিমূলক কাজ করে, তাহলে পুলিশকে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, RAF ও CRPF মোতায়েন
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলায় র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (RAF) এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী (CRPF)-এর জওয়ানদের মোতায়েন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, শান্তিভঙ্গকারী কোন ব্যক্তিকেই ছাড়া হবে না। সকল দোষীকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
‘নবীন বাংলা’ সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ
শর্মা অভিযোগ করেছেন যে, বকরিদের আগে ‘নবীন বাংলা’ নামে একটি সংগঠন ধুবুরীকে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে উস্কানিমূলক পোস্টার লাগিয়েছিল। এই সংগঠনের কর্মকাণ্ডকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে এবং তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই পোস্টারগুলির উদ্দেশ্য ছিল এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানো এবং মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করা। এ ধরণের সংগঠনের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
নতুন গোমাংস মাফিয়ার সক্রিয় হওয়ার দাবি
মুখ্যমন্ত্রী শর্মা আরও জানিয়েছেন যে, এবার বকরিদের উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ থেকে হাজার হাজার গবাদিপশু আনা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ধুবুরীতে একটি নতুন “গোমাংস মাফিয়া” সক্রিয় হয়েছে, যারা উৎসবের আগে বড় পরিমাণে পশু কিনে জবাই করেছে।
শর্মা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন এই ব্যবসার গভীর তদন্ত করতে এবং এর সাথে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করতে। তিনি বলেছেন, রাজ্যে এ ধরণের অপরাধ কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।