তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে উত্তালতা বেড়েছে, কারণ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপি তাদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এই প্রসঙ্গেই চেন্নাইতে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে কৌশল নিয়ে আলোচনা করছেন।
অমিত শাহের তামিলনাড়ু সফর: তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে আবারও উত্তালতা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত দুই মাসে পঞ্চমবার রাজ্য সফর করে বিজেপির ‘মিশন তামিলনাড়ু’কে নতুন গতি দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন। আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে এই সফরকে এনডিএ-র পুনর্গঠন এবং ডিএমকে-র বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী জোট গঠনের কৌশলের অংশ হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
অন্নামলাইয়ের বিদায় নিশ্চিত?
বিজেপি এখন তাদের কৌশলে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। সূত্র মতে, রাজ্য ইউনিটের প্রধান কে. অন্নামলাইকে সরানোর সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। এআইএডিএমকে, যারা লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল, অন্নামলাইকে জোটের সবচেয়ে বড় বাধা মনে করে। তাই আজ দল নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের জন্য আবেদন ডাকছে এবং আগামীকাল নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
নয়নার নাগেন্দ্রন, একজন প্রাক্তন এআইএডিএমকে নেতা এবং বর্তমানে বিজেপির বিধায়ক দলনেতা, এই প্রতিযোগিতায় সামনে রয়েছেন। এআইএডিএমকে-রও তাঁর নাম নিয়ে আপত্তি নেই, যার ফলে তাঁর নির্বাচনের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে।
চেন্নাইতে ঘন বৈঠকের ধারা
অমিত শাহ আজ চেন্নাইতে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের, কৌশলবিদদের এবং আরএসএস চিন্তাবিদ এস. গুরুমূর্তি সহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে দেখা করবেন। বিজেপি এখন তামিলনাড়ুতে একা লড়াই করার পরিবর্তে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জোট গঠনের পথে ফিরে আসতে চায়, যা ডিএমকে-কংগ্রেস জোটকে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিতে পারে। তামিল সুপারস্টার থালাপতি বিজয়ের দল এনটিকে (তামিলগা বিদুতলাই কাচি)ও এই সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বিজয় সম্প্রতি ডিএমকে-র বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, যার ফলে অমিত শাহের দল এখন তাঁর দলের দিকেও নজর রাখছে। যদি এনটিকে এনডিএতে যোগ দেয়, তাহলে এই জোট তরুণ এবং নগর ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেতে পারে।
২০২৬ সালে তামিলনাড়ুতে কি পরিবর্তন হবে সत्ता সমীকরণ?
তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দল ডিএমকে বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগ এবং হিন্দি-বিরোধী আন্দোলন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে রয়েছে। বিজেপি এই বিষয়গুলিকে ভিত্তি করে ডিএমকে-কে ঘিরে ফেলতে চায়। ডিএমকে চেষ্টা করছে নির্বাচনকে “চেন্নাই বনাম দিল্লি”র লড়াইয়ে পরিণত করার, কিন্তু বিজেপি স্থানীয় জোট এবং সামাজিক সমীকরণের মাধ্যমে এই আবেগপূর্ণ বক্তব্যকে নিরস্ত করার কৌশলে কাজ করছে।
অমিত শাহ ইতোমধ্যেই সংসদে বলেছেন যে ২০২৬ সালে তামিলনাড়ুতে এনডিএ সরকার গঠন করবে। বর্তমান সফর সেই রোডম্যাপের অংশ। যদি বিজেপি এআইএডিএমকে, এনটিকে এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের স্বপ্ন আগের চেয়ে বাস্তবের অনেক কাছে চলে আসবে।