৬৩,০০০ কোটি টাকার মেগা চুক্তি: ভারতীয় নৌবাহিনী পাচ্ছে ২৬টি রাফেল মেরিন যুদ্ধবিমান

৬৩,০০০ কোটি টাকার মেগা চুক্তি: ভারতীয় নৌবাহিনী পাচ্ছে ২৬টি রাফেল মেরিন যুদ্ধবিমান
সর্বশেষ আপডেট: 09-04-2025

ভারতীয় নৌবাহিনীর কৌশলগত ক্ষমতায় শীঘ্রই এক ঐতিহাসিক বৃদ্ধি ঘটতে চলেছে। ভারত সরকার ফ্রান্স থেকে ২৬টি রাফেল মেরিন যুদ্ধবিমান কেনার জন্য প্রায় ৬৩,০০০ কোটি টাকার একটি মেগা চুক্তিকে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

নয়াদিল্লি: ভারত ফ্রান্স থেকে ২৬টি রাফেল মেরিন যুদ্ধবিমান কেনার জন্য একটি মেগা চুক্তিকে অনুমোদন দিয়েছে, যার আনুমানিক ব্যয় ৬৩,০০০ কোটি টাকার বেশি। এই কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে শীঘ্রই স্বাক্ষর করা হবে। চুক্তির অধীনে ভারতীয় নৌবাহিনী ২২টি একক আসনবিশিষ্ট এবং ৪টি দ্বৈত আসনবিশিষ্ট রাফেল এম যুদ্ধবিমান পাবে।

এই পদক্ষেপকে ভারতীয় নৌবাহিনীর সমুদ্র শক্তিকে আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি বড় সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর মতে, এই চুক্তি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস)-এর কাছ থেকে এই মাসেই অনুমোদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে।

এই চুক্তিতে কী বিশেষ?

এই কৌশলগত চুক্তির অধীনে ২২টি একক আসনবিশিষ্ট এবং ৪টি দ্বৈত আসনবিশিষ্ট রাফেল মেরিন বিমান ভারতীয় নৌবাহিনী পাবে। এই বিমানগুলি আইএনএস বিক্রান্ত এবং আইএনএস বিক্রমাডিৎয়ের মতো বিমানবাহী জাহাজ থেকে পরিচালিত হবে, যেখানে এগুলি বর্তমান MiG-29K বিমানগুলির জায়গা নেবে বা তাদের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে। সূত্র মতে, চুক্তিতে স্বাক্ষরের প্রায় ৫ বছরের মধ্যে রাফেল মেরিনের প্রথম কয়েকটি ভারতে পৌঁছাতে শুরু করবে।

২০২৯ সালের শেষের দিকে ডেলিভারি শুরু হওয়ার এবং ২০৩১ সালের মধ্যে সমস্ত বিমান ভারতে পৌঁছে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এতে নৌবাহিনীর গোয়েন্দা, আক্রমণ এবং কৌশলগত অভিযানে অসাধারণ শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

রাফেল মেরিন বনাম রাফেল এয়ারফোর্স

যদিও রাফেল মেরিন এবং এয়ারফোর্স সংস্করণে প্রায় ৮৫% যন্ত্রাংশ একই, তবে মেরিন সংস্করণটি আরও শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং শর্ট টেক-অফ বট অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং (STOBAR) প্রযুক্তিতে সজ্জিত, যা এটিকে বিমানবাহী জাহাজ থেকে উড়ান ভরার এবং কম জায়গায় অবতরণ করার ক্ষমতা দেয়। এই প্রযুক্তি বিশেষ করে আইএনএস বিক্রান্তের মতো স্কি-জাম্প প্ল্যাটফর্মের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

এই চুক্তি ভারতীয় বিমানবাহিনী (IAF)-এর জন্যও উপকারী হতে পারে। চুক্তির অধীনে IAF-এর বর্তমান ৩৬টি রাফেল যুদ্ধবিমানে "বডি-বডি রিফুয়েলিং" সিস্টেমের উন্নয়ন এবং অতিরিক্ত গ্রাউন্ড সাপোর্ট সিস্টেমও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, যার ফলে তাদের অপারেশনাল পরিসীমা বৃদ্ধি পাবে।

কেন এই চুক্তি প্রয়োজন?

সূত্র জানিয়েছে যে ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে এই চুক্তি কয়েক মাস ধরে কৌশলগত এবং মূল্য-সংক্রান্ত আলোচনার পর চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। ভারত চেয়েছিল যে এই চুক্তি ২০১৬ সালের মূল্যের কাছাকাছি নির্ধারিত হবে, যার উপর IAF-এর জন্য ৩৬টি রাফেল জেট কেনা হয়েছিল। ভারতের সমুদ্র সীমান্তের সুরক্ষার জন্য আধুনিক ক্যারিয়ার-ভিত্তিক যুদ্ধবিমানের দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছিল। রাফেল মেরিন স্থাপনের মাধ্যমে হিন্দ মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের কৌশলগত দখল শক্তিশালী হবে এবং চীনের মতো দেশের ক্রমবর্ধমান নৌবাহিনীর উপস্থিতির কার্যকরী জবাব দেওয়া যাবে।

Leave a comment