২০২৭-এর উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন: সমাজবাদী-কংগ্রেসের যৌথ কৌশল

২০২৭-এর উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন: সমাজবাদী-কংগ্রেসের যৌথ কৌশল
সর্বশেষ আপডেট: 12-04-2025

২০২৭ সালে অনুষ্ঠিত হতে চলা উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে। সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস, উভয় দলই বর্তমানে একটি যৌথ কৌশল নিয়ে কাজ করছে।

লখনউ: উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি আবার একবার নতুন মোড় নিয়েছে, এবং এবার প্রস্তুতি চলছে ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের। সমাজবাদী পার্টি (সপা) এবং কংগ্রেস উভয়েই ইতিমধ্যেই তাদের কৌশলগত ভিত্তি স্থাপন শুরু করে দিয়েছে। যদিও উভয় দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক মিত্রতার ঘোষণা হয়নি, তবে ব্রাহ্মণ, দলিত এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীকে আকর্ষণ করার যৌথ প্রচেষ্টা রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করছে।

সপার 'ব্রাহ্মণ কার্ড' আবার চালু?

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব পূর্ব বিধায়ক বিনয় শঙ্কর তিওয়ারীর গ্রেফতারকে ইস্যু করে সরাসরি যোগী সরকারের উপর জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ এনেছেন। অখিলেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় তিওয়ারী পরিবারের সাথে শেয়ার করা ছবির মাধ্যমে এই বার্তা দিতে চেয়েছেন যে ব্রাহ্মণদের ক্ষমতাসীনদের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

অখিলেশ যাদবের এই কৌশল ২০২২ সালের স্মরণ করিয়ে দেয়, যখন সপা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়কে আকর্ষণ করার জন্য ভগবান পরশুরামের সাহায্যে আবেগগত কার্ড খেলেছিল। এখন একই কৌশল আবার সপার কৌশলে দেখা যাচ্ছে।

কংগ্রেসের 'দলিত-অস্মিতা' ফোকাস

অন্যদিকে কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অজয় রায় বস্তি, বলিয়া এবং আজমগড়ের ঘটনাগুলিকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন। দলিত ও নারী নির্যাতনের অভিযোগের মাধ্যমে কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে নিজেকে একজন সংবেদনশীল ও ন্যায়নিষ্ঠ বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করছে। অজয় রায় সম্প্রতি গুজরাট কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে বলেছেন, বস্তির আদর্শ উপাধ্যায়, আজমগড়ের দলিত সুনীরা এবং বালিয়ার পূজা চৌহানের মৃত্যু সাধারণ নয়, এগুলি পুলিশি নির্যাতন এবং ক্ষমতার অবহেলার ফলাফল।

যৌথ এজেন্ডা: বিজেপির আইন-শৃঙ্খলা এবং জাতিগত ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন

সপা এবং কংগ্রেস যদিও এখনও মিত্রতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা থেকে দূরে, কিন্তু উভয় দলই বিজেপির 'আইন-শৃঙ্খলা' এবং জাতিগত বৈষম্যকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৭ সালের কৌশলে সপা-কংগ্রেসের ফোকাস থাকবে জাতিগত ন্যায়, পুলিশি দমন এবং ক্ষমতার কথিত অপব্যবহারের উপর, যাতে সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীগুলিকে একত্রিত করা যায়।

কী কৌশলের আসল লক্ষ্য?

ব্রাহ্মণদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির মূল ভোটারদের ক্ষতি করা।
দলিত নির্যাতনের ইস্যুতে কংগ্রেসকে নতুন রাজনৈতিক স্থান দান করা।
পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ভোটারদের আবার আকর্ষণ করার জন্য আবেগগত ও সামাজিক ইস্যুর আশ্রয় নেওয়া।

২০২৭ সালের নির্বাচন যদিও এখনও দূরে, তবে রাজনৈতিক উত্তাপ ইতিমধ্যেই বেড়ে উঠছে। সপা এবং কংগ্রেসের এই যৌথ কৌশল শুধুমাত্র বিজেপির বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার চেষ্টা নয়, এটি এও ইঙ্গিত দেয় যে আসন্ন নির্বাচন কেবলমাত্র উন্নয়ন এবং প্রতিশ্রুতির নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচার এবং পরিচয়ের লড়াইও হবে।

Leave a comment