২০২৫ সালের বৈশাখী উৎসব ১৩ই এপ্রিল, রবিবার, সমগ্র ভারতে উল্লাস ও শ্রদ্ধার সাথে পালিত হবে। বিশেষ করে শিখ সম্প্রদায়ের জন্য এই দিনটি ধর্মীয় আস্থা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে, কারণ ১৬৯৯ সালে এই দিনেই গুরু গোবিন্দ সিংহ জী খালসা পন্থের স্থাপনা করেছিলেন। অন্যদিকে, কৃষকদের জন্য এটি রবি ফসল কাটার উৎসবও। এই দিনে কিছু নির্দিষ্ট কাজ করলে জীবনে ইতিবাচকতা ও সমৃদ্ধি আসে, পাশাপাশি কিছু অভ্যাস থেকে বিরত থাকাও জরুরি।
বৈশাখীতে গ্রহণ করুন এই পবিত্র উপায়
১. বৈশাখীতে করুন সূর্যোপাসনা ও শুভ আরম্ভ
বৈশাখীতে উদয়মান সূর্যকে জল অর্পণ এবং সূর্য মন্ত্র জপ করলে মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্য লাভ হয়। এই দিনটি নতুন কাজের সূচনা, ব্যবসার সম্প্রসারণ এবং জীবনে নতুন সংকল্প গ্রহণের জন্য অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
২. গুরুদ্বার বা মন্দিরে যান, করুন সেবা
এই দিনে শিখ ভক্তগণ গুরুদ্বারে গিয়ে ‘অখণ্ড পাঠ’, ‘কীর্তন’ এবং ‘লঙ্গর সেবায়’ অংশগ্রহণ করেন। অন্যদিকে, অন্যান্য ভক্তগণ মন্দির বা তীর্থস্থানে যান। কোনো দরিদ্রকে অন্ন, বস্ত্র বা ধন দান করা এই দিন অত্যন্ত পুণ্যদায়ক বলে মনে করা হয়।
৩. স্নান-দানে পুণ্য লাভ
বৈশাখীতে পবিত্র নদীতে স্নান করা অথবা ঘরেই গঙ্গাজল মিশিয়ে স্নান করা শরীর ও মনের জন্য শুভ। স্নানের পর গম, চনা, গুড়, অথবা নতুন ফসলের উৎপন্ন অন্ন দান করলে সুখ-সমৃদ্ধি লাভ হয়।
৪. ঘরকে করুন আলোকিত-দীপদানের বিশেষ গুরুত্ব
বৈশাখীর সন্ধ্যায় ঘরের মন্দির এবং প্রধান দরজায় ঘি বা তেলের প্রদীপ জ্বালানো উচিত। আটার প্রদীপ বানিয়ে জ্বালানোর মাধ্যমে নেতিবাচকতা দূর হয় এবং ঘরে লক্ষ্মীর বাস হয়। সূর্য যন্ত্র ঘরে স্থাপন করলে শুভ শক্তির আবির্ভাব ঘটে।
এই ভুলগুলি থেকে বিরত থাকুন
• এই দিন কালো বা গাঢ় নীল রঙের পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন, এই রঙ নেতিবাচক শক্তিকে আকর্ষণ করতে পারে।
• বৈশাখীতে মাংসাহার, ভাজা-ভুড়ি এবং মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন।
• ক্রোধ, ক্লেশ, অশ্লীল ভাষা এবং ঝগড়া থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ এই দিনটি শুভতা এবং আধ্যাত্মিক শুদ্ধির প্রতীক।
• মনে ঈর্ষা, দ্বেষ বা নেতিবাচক চিন্তা আসলে দিনটির পুণ্যফল কমতে পারে।
বৈশাখী- আস্থা ও অন্নের উৎসব
বৈশাখী কেবলমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আমাদের কৃষক সংস্কৃতি ও পরিশ্রমের সাফল্যের উৎসবও। সঠিক কাজ, সঠিক চিন্তা এবং সঠিক দিক নির্দেশনা অবলম্বন করে এই দিনটিকে জীবনে শুভতার দ্বার বানানো যায়।