প্রতি বছর বলিউডে শত শত শিল্পী তাদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে আসেন, কিন্তু কেবলমাত্র কয়েকজনই তাদের স্বাতন্ত্র্যসূচক পরিচয় তৈরি করতে পারেন। জন অ্যাব্রাহামও তেমনি একজন অভিনেতা, যিনি মডেলিং থেকে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন এবং পরে চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ করেছিলেন। যদিও প্রাথমিক সাফল্যের পরে তার অনেক ছবি ব্যর্থ হয়েছিল, যার ফলে ইন্ডাস্ট্রি তাকে শেষ বলে মনে করেছিল। চার বছর ধরে তিনি কোনো বড় প্রজেক্ট পাননি, কিন্তু তিনি হার মানেননি এবং অসাধারণভাবে ফিরে এসেছেন।
সংগ্রামের দিনগুলি এবং প্রাথমিক ক্যারিয়ার
জন অ্যাব্রাহাম মডেলিং থেকে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন এবং তার প্রথম বেতন ছিল মাত্র ৬৫০০ টাকা। সংগ্রামের দিনগুলিতে তিনি ৬ টাকায় লাঞ্চ করতেন এবং রাতের খাবার পর্যন্ত ছেড়ে দিতেন। তার কাছে মোবাইল ফোন ছিল না এবং কোনো ব্যয়বহুল জিনিসপত্রও ছিল না। তার প্রয়োজন ছিল শুধুমাত্র ট্রেনের পাস এবং মোটরসাইকেলের পেট্রোল।
‘জিসম’ থেকে পরিচয়, কিন্তু তারপর এসেছে সমস্যা
২০০৩ সালে ‘জিসম’ ছবি দিয়ে জন অ্যাব্রাহাম পরিচিতি পেয়েছিলেন, কিন্তু এর পরে ‘ছায়া’, ‘পাপ’, ‘এতবার’ এবং ‘লকির’ মতো ছবি ব্যর্থ হয়েছিল। ক্রমাগত ব্যর্থতার ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে তার অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং মানুষ বলতে শুরু করেছিল যে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
‘ধূম’ বদলে দিয়েছে ভাগ্য
২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ধূম’ তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। এই ছবিতে ‘কবির’ নামক স্টাইলিশ খলনায়কের চরিত্র দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিল। এই ছবির পরে তিনি ‘গরম মশলা’, ‘ট্যাক্সি নম্বর ৯২১১’ এবং ‘দোস্তানা’র মতো হিট ছবি পেয়েছিলেন। ‘রেস ২’, ‘শুটআউট অ্যাট ওয়াডালা’ এবং ‘মাদ্রাস ক্যাফে’র মতো ছবির মাধ্যমে তিনি একশন হিরোর ইমেজ তৈরি করেছিলেন।
চার বছর ধরে কাজ পাননি
২০১৫ সালে ‘ওয়েলকাম ব্যাক’ ছবির পর জনের ক্যারিয়ারে স্থবিরতা দেখা দেয়। ক্রমাগত চার বছর ধরে তিনি কোনো বড় ছবি পাননি এবং ইন্ডাস্ট্রি মনে করেছিল যে তার সময় শেষ হয়ে গেছে।
‘পরমাণু’ এবং ‘সত্যমেব জয়তে’ দিয়ে অসাধারণ প্রত্যাবর্তন
এই কঠিন সময়ের পরে ২০০৮ সালে ‘পরমাণু’ এবং ‘সত্যমেব জয়তে’র মতো ছবি দিয়ে তিনি চমৎকারভাবে ফিরে এসেছিলেন। উভয় ছবিই বক্স অফিসে ভালো ব্যবসা করেছিল এবং জন আবার আলোচনায় এসেছিলেন।
‘পঠান’ দিয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য
২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পঠান’ জন অ্যাব্রাহামের ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এই ছবিতে তিনি ‘জীম’ নামক খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যা দর্শকরা খুব পছন্দ করেছিলেন। ‘পঠান’ বক্স অফিসে ১০৫০ কোটি টাকারও বেশি আয় করেছে এবং জনকে ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় অভিনেতাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে।