উত্তরাখণ্ড পঞ্চায়েত নির্বাচন: কংগ্রেসের ঐক্যের পরীক্ষা

উত্তরাখণ্ড পঞ্চায়েত নির্বাচন: কংগ্রেসের ঐক্যের পরীক্ষা
সর্বশেষ আপডেট: 20-06-2025

উত্তরাখণ্ডের আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের অন্দরে তৎপরতা তীব্রতর হয়েছে। প্রশ্ন হল, দল কি সামূহিক নেতৃত্বের শক্তির সাহায্যে বিজেপির কৌশলকে পরাজিত করতে পারবে, নাকি দলীয় টানাপড়েনই চূড়ান্ত হবে?

দেহরাডুন: উত্তরাখণ্ড কংগ্রেস এই সময় শুধুমাত্র নিজের রাজনৈতিক ভিত্তিকে পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করছে না, বরং সাংগঠনিক ঐক্য এবং নেতৃত্বের ক্ষমতার কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়েও যাচ্ছে। রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলা ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন দলের জন্য শুধুমাত্র নির্বাচনী যুদ্ধ নয়, বরং মিশন ২০২৭-এর কৌশলগত ভিত্তি হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। প্রশ্ন হল, কংগ্রেসের সামূহিক নেতৃত্ব কি রাজ্যে দলের নৌকোটিকে পারাপার করবে, নাকি পুরোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আবারও সংগঠনকে ক্ষয় করবে?

হাইকমান্দ নির্দেশ জারি করেছে

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর কংগ্রেস নেতৃত্ব সংগঠনকে অভ্যন্তরীণভাবে শক্তিশালী করার দিকে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই ক্রমেই দিল্লিতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হয়, যেখানে রাজ্যের সমস্ত বড় নেতাদের সামূহিকতা এবং সমন্বয়ের শিক্ষা দেওয়া হয়। রাজ্য সভাপতি করণ মাহরা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত, বিরোধী দলনেতা যশপাল আর্য এবং রাজ্য প্রভারী দেবেন্দ্র যাদব সকলকে দলের কৌশল অনুযায়ী এক মঞ্চে নিয়ে আসা হয়। প্রশ্ন হল, এই ঐক্য কি পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভূমি রাজনীতিতে নেমে আসবে?

পঞ্চায়েত নির্বাচনের কৌশল: দুটি স্তরে রাজনৈতিক গণিত

কংগ্রেস জেলা পঞ্চায়েত স্তরে দল সমর্থিত প্রার্থীদের ময়দানে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, ক্ষেত্র পঞ্চায়েত এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নির্বাচন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এই কৌশল দ্বিধাগ্রস্ত। একদিকে দলের জন্য ব্যাপক জনসংযোগের সুযোগ রয়েছে, অন্যদিকে इससे দলীয় টানাপড়েন এবং পারস্পরিক সংঘাতের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। পূর্বের নগরপালিকা নির্বাচনেও টিকিট বণ্টন নিয়ে টানাপড়েন দেখা দিয়েছিল, যা দলের ভাবমূর্তিকে ক্ষতি করেছিল।

সংখ্যায় শক্তি, কিন্তু সংগঠনে ছত্রভঙ্গ?

রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট ৪৭.৭২ লক্ষ গ্রামীণ ভোটার অংশগ্রহণ করবে। কংগ্রেসের জন্য এটি একটি বৃহৎ জনসমর্থন, যা অর্জিত হতে পারে, যদি দল সংগঠিতভাবে কাজ করে। জেলা পঞ্চায়েত নির্বাচনে দল নিজের নাম নিয়ে অবতরণ করছে, যাতে ভোটারদের কাছে স্পষ্ট বার্তা যাবে। কিন্তু গ্রাম ও ক্ষেত্র পঞ্চায়েতে উন্মুক্ত নির্বাচনের ফলে অনেক ক্ষেত্রে একই দলের নেতারা আলাদা আলাদা প্রার্থীদের সমর্থন করতে দেখা যাবে। এটাই সেই বিন্দু, যেখান থেকে সংগঠনের অভ্যন্তরে অসন্তোষের সূত্রপাত হতে পারে।

মিশন ২০২৭: পঞ্চায়েতের পরীক্ষা থেকেই নীতি নির্ধারণ

২০২৭ সালে উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেসের জন্য পঞ্চায়েত নির্বাচন শুধুমাত্র আসন জয়ের লক্ষ্য নয়, বরং এটি একটি সেমিফাইনালের মতো, যা আগামী নির্বাচনের জন্য জনমত জানার সুযোগ দেবে। কংগ্রেসের জাতীয় নেতৃত্ব স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে মিশন ২০২৭-এর কৌশল তৈরি করা হবে। যারা এই নির্বাচনে শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করবে, তারাই সংগঠনে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করবে।

বিজেপি রাজ্যে পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা পর্যন্ত সংগঠিত নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে অবতরণ করে। গতবার বিজেপি গ্রামে গ্রামে নিজের কর্মীদের সক্রিয় করে নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। কংগ্রেসের জন্য এই লড়াই শুধুমাত্র বিজেপির সাথে নয়, বরং নিজের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের সাথেও। যদি এবার তারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ দূর করতে পারে, তাহলে অবশ্যই রাজ্যের রাজনীতিতে পুনরায় ফিরে আসতে পারবে।

Leave a comment