সমাজবাদী সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্কের উপর ১.৯১ কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে জরিমানা

সমাজবাদী সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্কের উপর ১.৯১ কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে জরিমানা
সর্বশেষ আপডেট: 25-05-2025

সমাজবাদী পার্টির সম্ভলের সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্কের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। তার উপর ইতিমধ্যেই সম্ভলে দাঙ্গা ছড়ানোর অভিযোগে তদন্ত চলছে, এবার বিদ্যুৎ বিভাগ তাকে ১.৯১ কোটি টাকার বিশাল জরিমানা করেছে।

সম্ভল: সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্কের সমস্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একদিকে দাঙ্গা ছড়ানোর অভিযোগে তদন্ত চলছে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ তাকে ১.৯১ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। এই জরিমানা তার বাসভবনে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে আরোপ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের পাঠানো চূড়ান্ত নোটিশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে তার কেবল দুটি বিকল্প আছে – অথবা জরিমানা পরিশোধ করতে হবে অথবা আদালতে যাওয়া। এই ঘটনা সম্ভলসহ সারা রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

কিভাবে উন্মোচিত হলো?

সম্পূর্ণ ঘটনাটি ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের, যখন বিদ্যুৎ বিভাগের দল সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্কের বাসভবনে অভিযান চালায়। তদন্তের সময় দল দুটি মিটার পায়, একটি সাংসদ জিয়া উর রহমানের নামে এবং অন্যটি তার দাদা ও প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ শফিকুর রহমান বর্কের নামে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, উভয় মিটারেই ব্যবহার সম্পূর্ণ শূন্য ছিল, যদিও ওই বাড়িতে নিয়মিতভাবে বিদ্যুতের প্রচুর ব্যবহার হয়। এই ভিত্তিতে বিভাগ গভীর তদন্ত করে এবং ব্যাপক বিদ্যুৎ চুরির তথ্য পায়।

জরিমানার হিসাব কেমন হলো?

বিদ্যুৎ বিভাগ ঘটনার তাত্ত্বিক ও অর্থনৈতিক তদন্তের পর সিদ্ধান্ত নেয় যে মোট ১.৯১ কোটি টাকার বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে সাংসদের উপর জরিমানা আরোপ করা হয়, যা এখনও পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি এবং কোনও আইনি আপত্তিও জানানো হয়নি। সম্ভলের নির্বাহী প্রকৌশলী নবীন গৌতমের মতে, আমরা আগেও তাকে নোটিশ পাঠিয়েছি কিন্তু কোনও উত্তর না পেয়ে এখন চূড়ান্ত নোটিশ জারি করেছি। যদি এখনও পরিশোধ না হয়, তাহলে আমরা আরসি (রিকভারি সার্টিফিকেট) জারি করব।

এই পুরো ঘটনা রাজনৈতিক রূপ ধারণ করেছে। সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্ক এটিকে প্রশাসনের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে স্থানীয় প্রশাসন তাকে রাজনৈতিক চাপে ফেলে দুর্নাম করার ষড়যন্ত্র করছে। সাংসদের দাবি, আমাকে অকারণে এই ঘটনায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পুরো কর্মকাণ্ড রাজনীতিপ্রণোদিত। আমি আইনগত বিকল্পগুলি বিবেচনা করছি এবং শীঘ্রই আদালতে আপিল করব। তবে, বিদ্যুৎ বিভাগকে এখনও তার পক্ষ থেকে কোনও সরকারি উত্তর পাঠানো হয়নি।

জরিমানা না দিলে কী হবে?

যদি সাংসদ জরিমানা না দেন এবং আদালতেও চ্যালেঞ্জ না করেন, তাহলে বিদ্যুৎ বিভাগ আইনগত প্রক্রিয়া অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে উদ্ধারের ব্যবস্থা শুরু করবে। এতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা, সম্পত্তি জব্দ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা ইত্যাদি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। এটি প্রথম ঘটনা নয় যখন জিয়া উর রহমান বর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এর আগেও তার উপর সাম্প্রদায়িক বক্তব্য এবং সম্ভলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত চলছে।

Leave a comment