মহাকুম্ভ ২০২৫: প্রয়াগরাজে চলমান মহাকুম্ভ ২০২৫-এর আকর্ষণ আরও বেড়ে উঠতে চলেছে পাকিস্তান থেকে আগমনকারী সাধু ও তাঁদের অনুসারীদের দলের আগমনের ফলে। মহাকুম্ভের পবিত্র ভূমিতে পাকিস্তান থেকে প্রায় ৫০ জন সাধু ও তাঁদের অনুসারী সংগমে শ্রদ্ধার স্নান করতে আসছেন। এই সম্প্রদায় সিন্ধু প্রদেশের প্রধান ধর্মীয় স্থল সচ্চো সতারাম ধামের পীঠাধীশ্বর সাই সাদারাম তীর্থরাজের নেতৃত্বে মহাকুম্ভে অংশগ্রহণ করবেন। তাঁদের সাথে আরও ৫০ জন অনুসারী থাকবেন, যারা সংগম তীরে পবিত্র স্নান করবেন এবং এখানকার বিশেষ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ধারায় অংশগ্রহণ করবেন।
মহাকুম্ভে পাকিস্তান থেকে আগমনকারী সাধুরা
সাই সাদারাম তীর্থরাজ ও তাঁর অনুসারীরা ফেব্রুয়ারী মাসে মহাকুম্ভে সংগম স্নানের জন্য আসছেন। এর জন্য পাকিস্তান থেকে ভিসা আবেদন করা হয়েছে এবং মহাকুম্ভে তাঁদের স্বাগত এবং স্বাগতোৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এটি ভারতীয় ও পাকিস্তানী হিন্দু সমাজের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ, যেখানে তারা পারস্পরিক সম্পর্ককে জোরদার করে একত্রিত হয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। মহাকুম্ভের সময় এই পাকিস্তানী সাধুরা কাশীও যাবেন, যেখানে তাঁদের ব্যাপক উৎসাহের সাথে স্বাগত জানানো হবে।
সচ্চো সতারাম ধামের প্রধান
সাই সাদারাম তীর্থরাজের সচ্চো সতারাম ধাম সিন্ধি সমাজের একটি প্রধান ধর্মীয় স্থল, যা ঝুলেলালের প্রকাট্য স্থলী রেহড়কীতে অবস্থিত। তাঁর ধর্মীয় কর্মকাণ্ড এবং আস্থাপূর্ণ সেবার জন্য তিনি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত। তাঁর এই আস্থার সাথে জড়িত যাত্রা মহাকুম্ভে কেবল ভারতীয় নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও ব্যাপক আকর্ষণ সৃষ্টি করছে। মহাকুম্ভে তাঁর উপস্থিতি এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে আরও বিশাল ও অনুপ্রেরণাদায়ক করে তুলছে।
মহাকুম্ভে পাকিস্তান থেকে আগমনকারী সাধুদের স্বাগত
মহাকুম্ভের আয়োজনে সাধুদের আগমন এবং বিশেষ করে পাকিস্তান থেকে আগমনকারী সাধুদের স্বাগত একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই পাকিস্তানী সাধুদের আমন্ত্রণ ভারতের সাধু-সন্তদের দ্বারা প্রেরণ করা হয়েছিল, যেখানে তাঁদের মহাকুম্ভের এই পবিত্র আয়োজনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। জুনা আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী অবধেশানন্দ মহারাজের শিবিরে এই সাধুদের স্বাগত জানানো হবে। এই প্রক্রিয়ার ফলে কেবল ধর্মীয় ঐক্য বৃদ্ধি পাবে না, বরং এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাংস্কৃতিক সংলাপেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হবে।
মহাকুম্ভে আমেরিকান যোগা শিক্ষিকা
মহাকুম্ভের সময় কেবল ভারতীয় শ্রদ্ধাঞ্জলিই নয়, বিদেশী শ্রদ্ধাঞ্জলিও এখানে এসে তাদের আস্থার স্নান করছে। আমেরিকার ৫৫ বছর বয়সী যোগা শিক্ষিকা কুশলাও মহাকুম্ভে এসে সংগম তীরে পবিত্র স্নান করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি এখানে এসে অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছেন। কুশলা মহাকুম্ভকে অদ্ভুত ও অনন্য অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে এটি বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। তিনি জানিয়েছেন যে তিনি বারাণসীতে তার ভ্রমণের সময় মহাকুম্ভের আয়োজন সম্পর্কে শুনেছিলেন এবং এটি দেখার ইচ্ছা করেছিলেন।
মহাকুম্ভে ৪২ লক্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি
মহাকুম্ভের প্রথম অমৃত স্নানের পর শ্রদ্ধাঞ্জলির উৎসাহ অব্যাহত রয়েছে। শনিবার ৪২ লক্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি সংগম ও গঙ্গা নদীর ঘাটে স্নান করেছেন। এর মধ্যে ১০ লক্ষ কল্পবাসী শ্রদ্ধাঞ্জলি ছিলেন, যারা মহাকুম্ভের বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য এসেছিলেন। এই সংখ্যা মহাকুম্ভের আস্থা এবং ধর্মীয় শক্তিকে প্রতিফলিত করে, যা কেবল ভারত থেকেই নয়, বিদেশ থেকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি আকর্ষণ করছে।
পাকিস্তানী সাধুদের মহাকুম্ভে যোগদান
মহাকুম্ভ ২০২৫-এর আয়োজন কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এটি ঐতিহাসিক হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। পাকিস্তান থেকে আগমনকারী সাধুদের সংগমে স্নান করা এবং ভারতে তাঁদের স্বাগত এই ধর্মীয় মিলনকে আরও জোরদার করবে। এই পদক্ষেপ ধর্মীয় ঐক্যকে বৃদ্ধি করবে এবং উভয় দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে নতুন দিক নির্দেশ করবে।