উত্তরাখণ্ডে হিমঝড়ের সতর্কতা: ২০০০ মিটার উচ্চতায় চলাচল নিষিদ্ধ

উত্তরাখণ্ডে হিমঝড়ের সতর্কতা: ২০০০ মিটার উচ্চতায় চলাচল নিষিদ্ধ
সর্বশেষ আপডেট: 02-03-2025

উত্তরাখণ্ডে আবহাওয়া দপ্তর হিমপাত ও হিমঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে। ২০০০ মিটারের উপরে অবস্থিত এলাকাগুলিতে সকল প্রকারের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৩ মার্চ পর্যন্ত পর্যটকদের পাহাড়ি এলাকায় যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে।

চমোলি হিমঝড়: উত্তরাখণ্ডে হিমপাত ও হিমঝড়ের আশঙ্কা বেড়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে ২০০০ মিটারের উচ্চতা সম্পন্ন এলাকায় সকল প্রকার কার্যকলাপ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশাসন পর্যটক, ট্র্যাকার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার এবং নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছে।

চমোলি হিমঝড়ের পর সতর্কতা বৃদ্ধি

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চমোলি জেলার মানা এলাকায় একটি বড় হিমঝড় আঘাত হানে, যাতে ৫৪ জন শ্রমিক পিষ্ট হন। এই ঘটনার পর প্রশাসন আরও সতর্ক হয়ে উঠেছে। জেলাশাসক আশীষ ভাটগাঁই নির্দেশ জারি করে জানিয়েছেন ২০০০ মিটারের উচ্চতা সম্পন্ন এলাকায় ৩ মার্চ পর্যন্ত পর্যটক ও ট্র্যাকারদের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলকে হাই অ্যালার্টে রাখা হয়েছে

এই সম্ভাব্য বিপদের বিষয়টি বিবেচনা করে জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলকে হাই অ্যালার্টে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইআরএস পদ্ধতির নমিনী কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় নোডাল কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সড়ক নির্মাণ সংশ্লিষ্ট বিভাগ যেমন এনএইচ, পিএমজিএসওয়াই, বিআরও এবং লোনোভিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, যদি হিমঝড় বা ভূমিধ্বসের কারণে সড়ক বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তা অবিলম্বে মেরামত করতে হবে। পাশাপাশি, সকল থানা-চৌকিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সরঞ্জাম এবং ওয়্যারলেস যোগাযোগ সহ হাই অ্যালার্টে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভূমিধ্বসে অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত

উত্তরাখণ্ডে বরফপাত এবং বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক এলাকায় ভূমিধ্বসের আশঙ্কা বেড়েছে। বিশেষ করে, বागेश्वर জেলায় বৃষ্টি এবং হিমপাতের পর রবিবার আবহাওয়া পরিষ্কার হওয়ায় মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও, সড়কে ধ্বংসাবশেষ ও ভূমিধ্বসের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে।

কপকোট এলাকা, যা ভূমিকম্প এবং ভূমিধ্বসের দিক থেকে সংবেদনশীল জোন-৫ এর অন্তর্গত, সেখানে বৃষ্টি এবং বরফপাতের কারণে বিদ্যুৎ, পানি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সড়কে ধ্বংসাবশেষ পড়ে পথ অবরুদ্ধ হয়ে গেছে, যার পরিষ্কার কাজ দ্রুত করা হচ্ছে।

ভয়ুন-গুলেড় মোটর মার্গে ভূমিধ্বস

ভয়ুন-গুলেড় মোটর মার্গে ভূমিধ্বসের ফলে সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২ কিমি দূরত্বে প্রচুর পরিমাণে ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছিল, যা সরানোর জন্য লোডার মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল। রবিবার সড়কটি আবার চালু করা হয়েছে। একইভাবে, পগনা মোটর মার্গে কাঠানী এবং পগনার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছে, যা সরানোর কাজ চলছে।

বরাতীদের আটকে থাকার খবর

শনিবার একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া ২০০ বরাতী ভূমিধ্বসের ফলে আটকে পড়েছিল। রাতের বেলা প্রশাসন ব্রিডকুলের সাহায্যে লোডার মেশিন দিয়ে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে আটকে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধার করে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রতিবেদন

জেলা দুর্যোগ কর্মকর্তা শিখা সুয়ালের মতে, বর্তমানে কোনও প্রধান সড়ক বন্ধ নেই। তবে বৃষ্টি ও বরফপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলি খোলার জন্য উদ্ধার কাজ চলছে। প্রশাসন ক্রমাগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উত্তরাখণ্ড প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের কাছে আবেদন করেছে যাতে তারা আবহাওয়া দপ্তরের নির্দেশাবলী মেনে চলে এবং কোনও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যাওয়া থেকে বিরত থাকে। আবহাওয়ার অবনতির বিষয়টি বিবেচনা করে নিরাপত্তার সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে, তবে নাগরিকদের সতর্ক থাকা জরুরি।

Leave a comment