উত্তরাখণ্ডে ধামী সরকার ১৭টি স্থানের নাম পরিবর্তন করেছে, মিয়ানওয়ালাকে রামজীবওয়ালা করার বিরোধিতা। স্থানীয়রা ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে ডিএম-কে নাম পরিবর্তন না করার আবেদন জানিয়েছে।
Uttarakhand: উত্তরাখণ্ডের পুষ্কর সিং ধামী সরকার সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে ১৭টি স্থান ও সড়কের নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপকে শাসক দল ঐতিহাসিক সংস্কার বলে দাবি করলেও বিরোধী দল তা জনগণের দৃষ্টিভ্রান্তির রাজনীতি বলে অভিহিত করেছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেহরাডুনের মিয়ানওয়ালার নাম পরিবর্তন করে রামজীবওয়ালা করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে, যার পর স্থানীয়রা প্রতিবাদে নেমেছে।
মিয়ানওয়ালার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, "মিয়ানওয়ালা" শব্দটি "মিয়ান" থেকে এসেছে, যা একটি রাজপুত উপাধি এবং এর মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। প্রতিবাদকারীরা একটি চিঠিতে দাবি করেছেন যে মিয়ানওয়ালার অস্তিত্ব দেহরাডুনের প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই ছিল। এই গ্রামটি গড়ওয়ালের রাজা ফতেহ শাহের নাতি প্রদীপ শাহের শাসনামলে (১৭১৭-১৭৭২) গুরু রাম রায়কে উপহার দেওয়া হয়েছিল।
ঐতিহাসিকদের মতে, মিয়ানওয়ালার উল্লেখ অনেক ঐতিহাসিক গ্রন্থে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে জর্জ উইলিয়ামসের ১৮৭৪ সালের ‘মেমোয়ার্স অফ দেহরাডুন’ এবং এইচ.জি. ওয়ালটনের ১৯৯০ সালের প্রকাশনা ‘দেহরাডুন গেজেটিয়ার’। এই ঐতিহাসিক দলিলগুলি এই কথা নিশ্চিত করে যে মিয়ানওয়ালা গুরু রাম রায়কে উপহার দেওয়া জমির অংশ ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তি
মিয়ানওয়ালার মানুষ নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে চিঠি লিখেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, এই এলাকাটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ এবং এর নাম পরিবর্তন করা আমাদের পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যের সাথে ছিনিমিনি খেলা। স্থানীয়রা বলেছে, তাদের মিয়ানওয়ালার নামের সাথে গভীর আবেগগত সম্পর্ক আছে এবং তারা তা যেকোনো মূল্যে পরিবর্তন করতে দেবে না। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে কিছু রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে নাম পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, যার ফলে সমাজে বিভাজন তৈরি হতে পারে।
কোন কোন স্থানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে?
ধামী সরকারের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনেক ইসলামী নামবিশিষ্ট এলাকার নাম হিন্দু দেবদেবী ও ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের নামে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- দেহরাডুনের মিয়ানওয়ালার নাম রামজীবওয়ালা করা হয়েছে।
- রুড়কীর ভগবানপুর ব্লকে ওরাংজেব নগরের নাম শিবাজী নগর করা হয়েছে।
- রুড়কীর খানপুর গ্রামের নাম এখন শ্রীকৃষ্ণ নগর।
- হালদ্বানীর নওয়াবী রোডের নাম পরিবর্তন করে অটল মার্গ করা হয়েছে।
- পঞ্চক্কি-আইটিআই মার্গের নাম গুরু গোলওয়াল্কার মার্গ করা হয়েছে।
