আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প দাবি করেছেন যে ভারত ট্যারিফ কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে এবং এর জন্য নিজেই কৃতিত্ব দাবি করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে এর আগেও অনেক দেশের ট্যারিফ কমানো হয়েছে।
ট্যারিফ যুদ্ধ: আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন যে ভারত আমেরিকার ট্যারিফ কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। তিনি এটাকে তার নীতির বিজয় বলে দাবি করেছেন এবং বলেছেন যে তার সরকার ভারতের উপর চাপ প্রয়োগ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনও এই দাবীর কোনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা চলছে, কিন্তু ট্যারিফ কমানো নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি।
সত্যিই কি ভারত ট্যারিফ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে?
সূত্রের খবর, ভারত সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড এবং নরওয়ে-র মতো অনেক দেশের সাথে বাণিজ্য চুক্তির অধীনে ট্যারিফ কমিয়েছে। এই প্রক্রিয়া ভারতের ব্যাপক বাণিজ্য নীতির অংশ এবং কোনও বিশেষ চাপের ফল নয়। কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে বলেছেন যে ভারত আমেরিকার সাথেও বাণিজ্যিক আলোচনা করছে, কিন্তু এটাকে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের সাথে যুক্ত করে দেখা উচিত নয়।
আমেরিকার দাবি এবং ভারতের অবস্থান
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকা চায় ভারত প্রায় সব ধরণের পণ্যের উপর ট্যারিফ প্রত্যাহার করুক, কৃষি পণ্য ছাড়া। যদি ভারত এই দাবী মেনে নেয়, তাহলে তাকে তার বাণিজ্য সুরক্ষা ব্যবস্থায় ঢিলেঢালা হতে হবে, আর বিনিময়ে তেমন কোনও বড় ছাড় পাবে না। ভারত এই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে এবং পারস্পরিক লাভজনক চুক্তির উপর জোর দিচ্ছে।
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য আলোচনার বর্তমান পরিস্থিতি
ভারত এবং আমেরিকা এই বছরের শেষের মধ্যে একটি বহু-ক্ষেত্রীয় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (BTA) এর প্রথম পর্যায় নিয়ে আলোচনা করার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে। এই চুক্তির লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো। ফেব্রুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওয়াশিংটন সফরের সময় এই দিকে আলোচনা হয়েছিল, যেখানে উভয় দেশ বাণিজ্যিক বাধা কমাতে এবং বাজার অ্যাক্সেস বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছিল।
ভারতীয় প্রতিনিধিদলের আমেরিকা সফর
মার্চের শুরুতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটন সফর করে। এই সময় আমেরিকার বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারের সাথে বৈঠক হয়। আলোচনায় ট্যারিফ এবং অ-ট্যারিফ বাধা কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হয়, কিন্তু কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
২ এপ্রিল থেকে আমেরিকা কর্তৃক আরোপিত ট্যারিফের প্রভাব
আমেরিকা ২ এপ্রিল থেকে পারস্পরিক ট্যারিফ আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে, যার ফলে ভারতের কিছু প্রধান রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ভারতীয় নীতি নির্ধারক এবং ব্যবসায়ীরা এর সম্ভাব্য প্রভাব কমানোর জন্য কৌশল তৈরি করছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত সরকার কিছু প্রধান আমেরিকান পণ্যের উপর ট্যারিফ কমানোর কথা ভাবছে, যাতে বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় থাকে।
