তৃষা কৃষ্ণনের মানবিক উদ্যোগ: মন্দিরগুলিতে মেকানিক্যাল হাতি দান

তৃষা কৃষ্ণনের মানবিক উদ্যোগ: মন্দিরগুলিতে মেকানিক্যাল হাতি দান
সর্বশেষ আপডেট: 7 ঘণ্টা আগে

সাউথের বিখ্যাত অভিনেত্রী তৃষা কৃষ্ণন তামিলনাড়ুর শ্রী অষ্টলিঙ্গ আথিশেষ সেলভা বিনয়গর এবং শ্রী অষ্টভুজ আথিশেষ বরাহী আম্মান মন্দিরগুলিতে একটি অত্যাধুনিক মেকানিক্যাল হাতি দান করেছেন।

বিনোদন: সাউথ সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃষা কৃষ্ণন আবারও তাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং সংবেদনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি তামিলনাড়ুর দুটি বিখ্যাত মন্দির, শ্রী অষ্টলিঙ্গ আথিশেষ সেলভা বিনয়গর এবং শ্রী অষ্টভুজ আথিশেষ বরাহী আম্মান মন্দিরকে একটি অত্যাধুনিক যান্ত্রিক হাতি (মেকানিক্যাল এলিফ্যান্ট) দান করেছেন, যার নাম রাখা হয়েছে গজ। এই পদক্ষেপকে শুধু তৃষার ভক্তরাই সাধুবাদ জানাননি, মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং ভক্তরাও এটিকে সাদরে গ্রহণ করেছেন।

উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ ভারতের অনেক মন্দিরে উৎসব ও ধর্মীয় শোভাযাত্রার সময় জীবিত হাতি ব্যবহারের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে পশু অধিকার সংগঠনগুলি ক্রমাগত এই বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছে যে, এই হাতিগুলিকে স্বাভাবিক পরিবেশের বাইরে এবং জোর করে কাজে লাগানো হয়। এই সমস্ত প্রশ্নের মাঝে তৃষার এই পদক্ষেপ একটি নতুন দিশা দেখাচ্ছে, যেখানে ঐতিহ্য এবং করুণাকে একসঙ্গে সম্মান জানানো হয়েছে।

ভক্তিতে করুণার গুরুত্ব

তৃষা কৃষ্ণন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ভক্তি তখনই সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয় যখন তা করুণায় নিহিত থাকে। আমাদের মন্দির প্রথাগুলিতে একটি যান্ত্রিক হাতির আগমন দয়া, উদ্ভাবন এবং সংস্কৃতির উদযাপন। আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে এমনভাবে সম্মান জানাচ্ছি যাতে কোনও প্রাণীর ক্ষতি না হয়। তৃষা আরও বলেন, তিনি চান এই উদ্যোগ আরও অনেক মানুষকে অনুপ্রাণিত করুক, যাতে ঐতিহ্য এবং করুণার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়।

ঢোল-নাকাড়ার মধ্যে গজের অভ্যর্থনা

মন্দির কর্তৃপক্ষ এই যান্ত্রিক হাতিটিকে বিশেষভাবে স্বাগত জানিয়েছে। মন্দিরের পুরোহিত ও ভক্তদের উপস্থিতিতে গজের ঐতিহ্যপূর্ণ রীতি-নীতি সহকারে উন্মোচন করা হয়। ঢাক-ঢোল ও মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে যান্ত্রিক হাতিটিকে মন্দির প্রাঙ্গণে আনা হয়, যেখানে ভক্তরা এটিকে দেখে আনন্দিত হন। পিপল ফর ক্যাটেল ইন ইন্ডিয়া (PFCI) এই পুরো অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে। সংগঠনটি তাদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে তৃষাকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছে, গজ একটি নতুন শুরুর প্রতীক, যেখানে আসল হাতিদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং ঐতিহ্যকে আধুনিক পদ্ধতিতে পালন করা হবে।

ভক্তদের জন্য নিরামিষ প্রসাদ

তৃষা শুধু যান্ত্রিক হাতিই নয়, ভক্তদের জন্য সম্পূর্ণ নিরামিষ খাবারেরও ব্যবস্থা করেছেন। এই খাবারে কোনও মাংস, দুগ্ধজাত দ্রব্য বা ডিম ব্যবহার করা হয়নি। একটি সাইন বোর্ডের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, এই নিরামিষ প্রসাদ শুধু পশু-করুণার প্রতীক নয়, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্যও একটি ভালো বিকল্প।

PFCI এই বিষয়ে বলেছে, যেভাবে আমাদের যান্ত্রিক হাতি আসল হাতিদের প্রতি দয়া দেখায়, সেইভাবে নিরামিষ খাবারও পশুদের আমাদের খাদ্যতালিকা থেকে দূরে রেখে তাদের প্রতি সম্মানের ভাব দেখায়।

তৃষার ক্রমবর্ধমান সামাজিক অবদান

চলচ্চিত্র জীবনের পাশাপাশি তৃষার সামাজিক কাজে অবদান ক্রমাগত বাড়ছে। এই বছর তাঁর বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, যেমন বিদামুয়ার্চি, গুড ব্যাড আগলি এবং ঠগ লাইফ। আগামী দিনে তিনি বিশ্বম্ভরা এবং কারুপ্পু-র মতো আলোচিত সিনেমাতেও দেখা দেবেন। তবে এই সবের মাঝে, তাঁর এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে তৃষা কেবল পর্দায় একজন শক্তিশালী শিল্পীই নন, পর্দার পিছনেও সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত।

Leave a comment