বিহারের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আভাসে নেতা প্রতিপক্ষ তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং তাঁর সরকারের উপর তীব্র আক্রমণ চালিয়েছেন। তেজস্বী বিজেপি-জেডিইউ জোটকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে ঘোষণা করেছেন।
বিহার রাজনীতি: নেতা প্রতিপক্ষ তেজস্বী যাদব পটনায় আয়োজিত রাষ্ট্রীয় জনতা দলের অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর সমাবেশের সময় রাজ্য সরকারের উপর তীব্র আক্রমণ চালান। তিনি অভিযোগ করেন যে, বিহারে বেকারত্ব এবং জনসংখ্যা স্থানান্তর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। তেজস্বী বলেন, শাসন-প্রশাসনের সাহায্যে অতি পিছিয়ে পড়া মানুষদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানো হচ্ছে।
তেজস্বী অভিযোগ করেন যে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এখন বিজেপির দখলে এবং তাঁর জনসভায় এর প্রমাণ স্পষ্ট দেখা যায়, যেখানে তাঁকে বারবার স্পষ্টীকরণ দিতে হয়। তেজস্বী যাদব জেডিইউকেও লক্ষ্য করে বলেন যে, এখন দল কয়েকজন নির্বাচিত ব্যক্তির ইশারায় চলছে, যারা আসলে বিজেপির রাজনীতিকে শক্তিশালী করার কাজ করছে।
তেজস্বী যাদব স্পষ্ট ভাষায় বলেন, বিহারে এখন প্রশাসনের পরিচালনা মুখ্যমন্ত্রী নয় বরং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর করে চলছে। নীতীশ কুমার ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন এবং তাঁর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ এখন বিজেপির হাতে।
বিজেপি-জেডিইউ জোটের উপর ব্যঙ্গ: নীতীশ দখল হয়ে গেছেন
তেজস্বী অভিযোগ করেন যে, নীতীশ কুমার এখন নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে প্রতিটি জনসভায় স্পষ্টীকরণ দিতে হয় যে, কার কথায় তিনি কোথায় গেছেন। এর অর্থ স্পষ্ট যে, তিনি সম্পূর্ণরূপে বিজেপির প্রভাবে আছেন। তেজস্বী এও দাবি করেন যে, জেডিইউ এখন কয়েকজন নির্বাচিত নেতার উপর নির্ভর করে চলছে, যারা পর্দার আড়াল থেকে বিজেপির রাজনীতিকে শক্তিশালী করছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, জেডিইউ এখনও কি তাদের আদর্শের প্রতি আনুগত্যশীল রয়েছে নাকি সম্পূর্ণরূপে ক্ষমতার লোভে নতি স্বীকার করেছে।
অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর উপেক্ষার বিষয়টি তুলে ধরা
তেজস্বী যাদব তাঁর বক্তৃতায় অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ক্রমবর্ধমান উপেক্ষার বিষয়ে সরকারের উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিহারে অতি পিছিয়ে পড়া সমাজ কেবল ভোট ব্যাঙ্ক হয়ে রয়েছে। সরকার কখনও তাদের নির্ণায়ক ভূমিকা দেয়নি। আজ পর্যন্ত কোনও অতি পিছিয়ে পড়া নেতা প্রভাবশালী দপ্তর পাননি।
তেজস্বী সরকারের কাছেও প্রশ্ন করেন যে, রাজ্যে কতগুলি জেলাশাসক (ডিএম) এবং পুলিশ সুপার (এসপি) অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণী থেকে নিয়োগ পেয়েছেন? তিনি সরকারের কাছে এই তথ্যগুলি প্রকাশ্যে আনার দাবি জানান।
জাতিগত জনগণনা এবং সংরক্ষণের উপর আবার জোর
তেজস্বী যাদব কেন্দ্রের জাতিগত জনগণনা করার ঘোষণাকে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের জয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, এটি লালু প্রসাদ যাদবের চিন্তাধারা এবং করপূরী ঠাকুরের মতবাদেরই জয়। কেন্দ্র সরকার আমাদের দাবির কাছে নতি স্বীকার করেছে। তিনি এও স্পষ্ট করেন যে, রাষ্ট্রীয় জনতা দল এখন জাতিগত জনগণনার ভিত্তিতে সংরক্ষণের সীমা বাড়ানোর লড়াইও করতে যাচ্ছে। তেজস্বী বলেন, আগামী দিনে লোকসভা এবং বিধানসভায় অনুসূচিত জাতি-জনজাতির মতোই ওবিসি এবং অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য আসন সংরক্ষণের প্রয়োজন।