সৌরভ হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ তদন্তে জানা গেছে, সাহিল শুক্লা ও মুস্কান রস্তোগী গত পাঁচ মাস ধরে কर्ण পিশাচিনী মা’র সিদ্ধি লাভের জন্য তন্ত্র-মন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছিলেন।
মেরঠ: সাহিলের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তন্ত্র-মন্ত্র ও অন্ধবিশ্বাসের দিকে ইঙ্গিত করে। সাহিলকে হত্যা করে তার মাথা ও দু’হাত কেটে ফেলা, মুস্কানের হাতে ছুরি ধরিয়ে হৃদয়ে আঘাত করা এবং রাত তিনটায় মাথা ও হাতগুলি ব্যাগে ভরে নিজের বাড়ি নিয়ে যাওয়া—এই সকল কাজে গভীর তান্ত্রিক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
এছাড়াও, সাহিলের মৃত মায়ের সাথে স্ন্যাপচ্যাটে কথা বলা এবং ঘরের দেওয়ালে ভয়ানক চিত্রকর্ম করাও মানসিক অস্থিরতা এবং কোনও গূঢ় সাধনার দিকে ইঙ্গিত করে। তদন্তে এই তথ্যও উঠে এসেছে যে সম্ভবত সাহিল ও মুস্কান ‘কর্ণ পিশাচিনী মা’র সিদ্ধি লাভের জন্য এই তন্ত্র ক্রিয়ায় লিপ্ত ছিলেন।
সিদ্ধি লাভের নামে ভয়াবহ হত্যা
সাহিল ও মুস্কান তন্ত্র-সাধনার মাধ্যমে কर्ण পিশাচিনী মা’র সিদ্ধি লাভ করতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যেই তারা সৌরভকে হত্যা করে তার মাথা ও হাতগুলি ঘরে রেখে পূজা করেছিল। হত্যাকাণ্ডের সময় সাহিল ‘বধ’ শব্দটি ব্যবহার করেছিল এবং মুস্কানকে ছুরি দিয়ে আঘাত করিয়েছিল। হত্যার পর রাত তিনটায় সাহিল মাথা ও কাটা হাতগুলি ব্যাগে রেখে নিজের বাড়ি গিয়েছিল। এই ঘটনা আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন মুস্কান থানায় তার মায়ের কাছে (কবিতা রস্তোগী) বলেছিল যে, সে তার আসল মা নয়, তার মামীই তার আসল মা।
অন্ধবিশ্বাস ও তন্ত্র-মন্ত্রের গভীর জালে আটকে ছিল দুজনেই
পুলিশ সাহিলের ঘরের দেওয়ালে ভয়ানক চিত্রকর্ম ও রহস্যময় চিহ্ন পেয়েছে। গেটে লেখা ছিল, "লবণ স্বাদ অনুযায়ী, অকড় ওকাত অনুযায়ী।" দেওয়ালে পিশাচিক চিত্র ছিল, একটি গাছে বসে থাকা পাখি, এক হাতে সিগারেট আর আরেক হাত সিগারেট চাইছে এমনভাবে আঁকা ছিল। এই সকল চিহ্ন থেকে স্পষ্ট হয় যে, সাহিল সম্পূর্ণরূপে তন্ত্র-মন্ত্রের প্রভাবে ছিল।
সিদ্ধি পাওয়ার জন্য সৌরভকে বলির পশু করা হয়েছিল
পুলিশ তদন্তে জানা গেছে, সাহিল ও মুস্কান ইউটিউব ও অন্যান্য মাধ্যম থেকে কर्ण পিশাচিনী মা’র সাধনার সাথে সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করেছিল। শনি পীঠাধীশ্বর মহামণ্ডলেশ্বর শ্রীশ্রী ১০৮ মহেন্দ্র দাসজী মহারাজের মতে, কर्ण পিশাচিনী মা’র সিদ্ধির জন্য ব্রহ্মচর্য অপরিহার্য, কিন্তু সাহিল ও মুস্কান এ ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়নি এবং ভুল পথে চলে গেছে।
হত্যার পর সাহিল ও মুস্কান লাশ গুম করার জন্য জায়গা খুঁজছিল। জায়গা না পেয়ে তারা মৃতদেহটি একটি ড্রামে রেখে সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেয়। পুলিশ ড্রামটি খুললে ভেতর থেকে সৌরভের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
পরিবারকেও দিয়েছিল অমঙ্গলের সতর্কতা
গ্রেফতারির পর সাহিল মুস্কানের মা কবিতাকে বলেছিল যে, ২৫ দিনের মধ্যে তাদের বাবা অনিল রস্তোগীও বেঁচে থাকবে না। এ কথা শুনে অনিল রস্তোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়, যা থেকে স্পষ্ট হয় যে তন্ত্র-মন্ত্রের অন্ধবিশ্বাসের প্রভাব শুধুমাত্র হত্যাকারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এর প্রভাব পরিবারের উপরও পড়েছে।
এই ভয়াবহ ঘটনার পর পুলিশ এখন তদন্ত করছে যে, সাহিল ও মুস্কান ছাড়াও আর কেউ এই তন্ত্র-মন্ত্রের প্রভাবে ছিল কিনা। পুলিশ সাধারণ জনতার কাছে আবেদন করেছে যাতে তারা কোনও ধরণের অন্ধবিশ্বাসে না পড়ে এবং কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপের তথ্য অবিলম্বে জানায়।