কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাও (Ranya Rao) এবং তাঁর সহ-অভিযুক্ত তরুণ কন্ডারু রাজু কেরলের বহুল প্রচারিত সোনা পাচার মামলায় বড় রকমের স্বস্তি পেয়েছেন। বিশেষ আদালত তাঁদের জামিন দিয়েছে, যার ফলে তাঁরা কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
সোনা পাচার মামলা: রান্যা রাও: কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পের পরিচিত অভিনেত্রী রান্যা রাও সম্প্রতি সোনা পাচার মামলায় বিশেষ আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন। এই মামলাটি দেশজুড়ে শিরোনাম দখল করেছিল, যখন রান্যা কে এই বছরের মার্চ মাসে প্রায় ১২ কিলোগ্রাম সোনার সাথে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আইনগত লড়াইয়ের পরে এখন আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছে, তবে এর সাথে সাথে কিছু কঠোর শর্তও আরোপ করা হয়েছে। আসুন এই মামলার সম্পূর্ণ তথ্য বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
সোনা পাচার মামলায় গ্রেফতার রান্যা রাও
৩ মার্চ ২০২৫-তে কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাও কে প্রায় ১২ কিলোগ্রাম সোনার সাথে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই গ্রেফতারি কেরলের বিখ্যাত সোনা পাচার মামলার সাথে জড়িত ছিল, যা দেশে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এই মামলাটি কেবলমাত্র চলচ্চিত্র শিল্প নয়, সাধারণ জনগণের মধ্যেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। রান্যার সাথে সাথে তাঁর সহ-অভিযুক্ত তরুণ কন্ডারু রাজু কেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।
আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন, কোন শর্তগুলির সাথে?
আদালত রান্যা রাও এবং তরুণ কন্ডারু কে জামিন দিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত আরোপ করেছে। প্রথম শর্ত হলো, উভয় অভিযুক্ত দেশ ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না। দ্বিতীয় শর্ত হলো, ভবিষ্যতে তাঁদের কোনও ধরণের অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না। যদি তারা এই শর্তগুলি লঙ্ঘন করে, তবে আদালত তাদের জামিন বাতিল করতে পারে।
বিচারপতি বিশ্বনাথ সি. গৌড় জামিন আদেশে বলেছেন, উভয় অভিযুক্তকে দুই জামিনদার এবং ২ লক্ষ টাকার বন্ড আদালতে জমা দিতে হবে। তবে, জামিন পাওয়া সত্ত্বেও, রান্যা এখনও পর্যন্ত জেল থেকে মুক্তি পাননি কারণ তাঁর উপর বিদেশী মুদ্রা সংরক্ষণ এবং চোরাচালান কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ
রান্যা রাও তাঁর জামিন আবেদনের জন্য কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আসলে, তাঁর জামিন আবেদন নিম্ন আদালতে পূর্বেই খারিজ করা হয়েছিল। এরপর তিনি তাঁর আইনগত লড়াই তীব্র করে হাইকোর্টে আপিল করেন। আইনজীবী বিএস গিরিশ আদালতে রান্যার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে তাঁকে জামিন দেওয়া উচিত কারণ তাঁর গ্রেফতারে অনেক প্রক্রিয়াগত অনিয়ম ছিল। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিয়ে তাঁকে জামিন দিয়েছে, কিন্তু একই সাথে শর্তও আরোপ করেছে যাতে ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
যেহেতু রান্যা রাও-এর গ্রেফতারের খবর এসেছে, তখন থেকেই এই মামলাটি মিডিয়ায় অবিরাম আলোচনার বিষয় হয়ে রয়েছে। ১২ কিলোগ্রাম সোনা পাচার মামলায় তাঁর গ্রেফতার চলচ্চিত্র শিল্প ও ভক্তদের অবাক করে দিয়েছিল। রান্যার এই আইনগত লড়াই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিভিন্ন ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ তাঁর গ্রেফতার নিয়ে অবাক হয়েছেন, আবার কেউ কেউ ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন।
রান্যা রাও কন্নড় সিনেমার একজন উঠতি অভিনেত্রী, যিনি বহু ছবিতে অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছেন। কিন্তু এই বিতর্কিত মামলার পর তাঁর ভাবমূর্তির উপর বড় প্রভাব পড়েছে। এখন জামিন পাওয়ার পর দেখার বিষয় হলো তিনি কীভাবে তাঁর কর্মজীবনকে আবার এগিয়ে নিয়ে যান। এখনও পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং তাঁর মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।