আরবিআইয়ের ডেপুটি গভর্নর টি. রবি শঙ্কর ১৬তম অর্থ কমিশনের সদস্য নিযুক্ত

আরবিআইয়ের ডেপুটি গভর্নর টি. রবি শঙ্কর ১৬তম অর্থ কমিশনের সদস্য নিযুক্ত
সর্বশেষ আপডেট: 07-06-2025

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) এর ডেপুটি গভর্নর টি. রবি শঙ্করকে কেন্দ্রীয় সরকার ১৬তম অর্থ কমিশনের পার্টটাইম সদস্য নিযুক্ত করেছে। এই নিয়োগ এমন সময়ে হয়েছে যখন কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য এবং প্রাক্তন অর্থ সচিব অজয় নারায়ণ ঝা ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন।

নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) এর ডেপুটি গভর্নর টি. রবি শঙ্করকে ১৬তম অর্থ কমিশনের अंशকালীন (পার্টটাইম) সদস্য নিযুক্ত করেছে। এই নিয়োগ তখন হয়েছে যখন প্রাক্তন অর্থ সচিব এবং ১৬তম অর্থ কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য অজয় নারায়ণ ঝা ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। শঙ্কর ৩ মে ২০২৫ থেকে কমিশনে তাঁর নতুন ভূমিকা পালন করবেন এবং কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর্যন্ত অথবা ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত পদে থাকবেন, যেটি আগে হবে।

১৬তম অর্থ কমিশন: ভূমিকা এবং গুরুত্ব

৩১ ডিসেম্বর ২০২৩-এ ১৬তম অর্থ কমিশন গঠিত হয়। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পাণ্ডেগড়িয়া। এই কমিশন কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির মধ্যে অর্থ বণ্টনের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে। এছাড়াও, এটি বাজেট এবং অর্থ সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলির জন্যও পরামর্শ তৈরি করে। আশা করা হচ্ছে এই কমিশন ৩১ অক্টোবর ২০২৫-এর মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে, যা ১ এপ্রিল ২০২৬ থেকে কার্যকর হবে।

অর্থ কমিশনের গুরুত্ব এই বিষয়টিতে নিহিত যে এটি কেন্দ্র-রাজ্য আর্থিক সম্পর্ককে ভারসাম্য করে এবং রাজ্যগুলিকে আর্থিক সম্পদের যথাযথ অংশ নিশ্চিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ১৫তম অর্থ কমিশন কেন্দ্রের বিভাজ্য কর পুলের ৪১% রাজ্যগুলিকে বরাদ্দ করার সুপারিশ করেছিল।

টি. রবি শঙ্কর: RBI-তে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা

টি. রবি শঙ্কর ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে প্রথমবারের জন্য RBI-এর ডেপুটি গভর্নর হন। তাঁর নিয়োগ তিন বছরের জন্য হয়েছিল, যা ২০২৪ সালের মে মাসে এক বছরের জন্য বৃদ্ধি করা হয়। ৩ মে থেকে তাঁর দ্বিতীয় कार्यकाल শুরু হয়েছে। তিনি RBI-এর প্রধান বিভাগগুলির নেতৃত্ব দেন, যার মধ্যে রয়েছে মুদ্রা ব্যবস্থাপনা, বহির্বিশ্বের বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন এবং আর্থিক বাজার নিয়ন্ত্রণ।

বিশেষ করে, তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা (CBDC) এর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, যা ভারতের আর্থিক প্রযুক্তিতে একটি বিপ্লবী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাসে তাকে ফিনটেক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে, যা ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে উন্নীত করতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।

পেশাদার পটভূমি এবং সাফল্য

টি. রবি শঙ্কর ১৯৯০ সালে RBI-তে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তাঁর কর্মজীবনের প্রধান ফোকাস ছিল পেমেন্ট সিস্টেম, IT, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা। তিনি RBI-তে বহু উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর পরামর্শদাতাও ছিলেন।

সেখানে তিনি সরকারী বন্ড বাজার এবং ঋণ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রকল্পে কাজ করেছেন। এছাড়াও, তিনি ইন্ডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি অ্যান্ড অ্যালাইড সার্ভিসেস (IFTAS)-এর চেয়ারম্যানও ছিলেন, যা আর্থিক সেবা প্রদানকারীদের জন্য প্রযুক্তিগত সমাধান তৈরি করে।

শিক্ষা এবং দক্ষতা

টি. রবি শঙ্কর জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে M.Phil ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা তাকে ভারতের আর্থিক নীতি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার একজন প্রভাবশালী বিশেষজ্ঞ করে তুলেছে। তাঁর অবদানের ফলে শুধুমাত্র RBI-এর নীতিগুলিকে শক্তিই মিলেনি, বরং আর্থিক ব্যবস্থার ডিজিটালকরণ এবং উদ্ভাবনেও নতুন দিশা মিলেছে।

১৬তম অর্থ কমিশনে তাঁর ভূমিকা

১৬তম অর্থ কমিশনে একজন अंशকালীন সদস্য হিসেবে টি. রবি শঙ্করের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। যেহেতু তিনি RBI-এর ডেপুটি গভর্নরও, তাই তাঁর আর্থিক নীতি এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কে বোঝাপড়া কমিশনের সিদ্ধান্তগুলিকে আরও প্রভাবশালী করে তুলবে। বিশেষ করে আর্থিক সম্পদের যথাযথ বণ্টন এবং রাজ্যের আর্থিক ভারসাম্য নিয়ে তাঁর বিশেষজ্ঞ মতামত কমিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।

তাঁর নিয়োগের ফলে কমিশন আর্থিক নিয়ন্ত্রণ, বাজারের প্রবণতা এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনগুলিকে বিবেচনা করে নীতিগত পরামর্শ প্রদান করতে সাহায্য পাবে। এটি ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কেন্দ্র-রাজ্য আর্থিক সম্পর্কের উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য সহায়ক হবে।

Leave a comment