কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বাদরা'র বিরুদ্ধে চলমান তিনটি মানি লন্ডারিং মামলায় এখন প্রয়োগ নির্দেশালয় (ইডি) তদন্ত ত্বরান্বিত করেছে। সূত্র মতে, ইডি আগামী তিন মাসের মধ্যে চার্জশীট দাখিল করতে পারে।
নয়াদিল্লি: রাজনৈতিক মহলে আবারও উত্তেজনা বেড়েছে, কারণ প্রয়োগ নির্দেশালয় (ইডি) কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বাদরা'র বিরুদ্ধে তিনটি মানি লন্ডারিং মামলায় চার্জশীট দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই মামলাগুলিতে আদালতে চার্জশীট দাখিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাদরা'র উপর হরিয়ানা এবং রাজস্থানে জমি কেনাবেচায় অনিয়ম এবং লন্ডনে অবস্থিত সম্পত্তির অবৈধ মালিকানার অভিযোগ রয়েছে।
রবার্ট বাদরা'র বিরুদ্ধে চলমান তিনটি মামলা?
১. হরিয়ানার শিকোহপুর জমি কেনাবেচার মামলা
এই মামলাটি ২০০৮ সাল থেকেই আলোচনায় রয়েছে, যখন বাদরা'র কোম্পানি স্কাইলাইট হসপিটালিটির উপর মানেসর-শিকোহপুর এলাকায় ৩.৫ একর জমি মাত্র ৭.৫ কোটি টাকায় কেনার অভিযোগ উঠেছিল। এই জমিটি कथিতভাবে একদিনের মধ্যেই বাদরা'র কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এক মাসের মধ্যেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডার সরকার এই জমিতে আবাসিক প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল, যার ফলে এর মূল্য অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছিল।
পরে ডিএলএফ প্রায় ৫৮ কোটি টাকায় এটি কিনতে সম্মত হয়, যার ফলে বাদরা'র অর্থনৈতিকভাবে বিপুল লাভ হয়। এই ঘটনায় বাদরা, ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডা এবং আরও অনেক রিয়েল এস্টেট কোম্পানির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। ইডি এই মামলায় তদন্ত শেষ করে চার্জশীট প্রস্তুত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
২. রাজস্থানের বিকানেরে জমি কেলেঙ্কারি
দ্বিতীয় মামলায় বাদরা'র উপর অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ৭২ লক্ষ টাকায় ২৭৫ বিঘা জমি কিনে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে ৬১৫% লাভ করেছেন। ২০১৯ সালে ইডি বাদরা এবং তার মায়ের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। ইডি'র প্রতিবেদনের মতে, বাদরা'র কোম্পানি জমি কেনার সময় প্রয়োজনীয় "ডু ডিলিজেন্স" করেনি। চেক সরাসরি একজন কোম্পানির প্রতিনিধির নির্দেশে "জমি মালিকদের" নামে জারি করা হয়েছিল। এই মামলাটিও চার্জশীট দাখিলের পথে।
৩. লন্ডনের সম্পত্তির বিবাদ
তৃতীয় মামলাটি ব্রিটিশ অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারীর সাথে জড়িত, যেখানে অভিযোগ রয়েছে যে, ২০০৯ সালে লন্ডনের ১২ ব্রায়ানস্টন স্কোয়ারে একটি সম্পত্তি ভান্ডারী কিনেছিলেন, যা বাদরা'র নির্দেশে সংস্কার করা হয়েছিল এবং এর জন্য বাদরা कथিতভাবে অর্থ প্রদান করেছিলেন। যদিও বাদরা কোনও প্রকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মালিকানা অস্বীকার করেছেন এবং এটিকে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। ২০২৩ সালে ইডি তাদের চার্জশীটে বলেছিল যে, ভান্ডারী এবং বাদরা'র মধ্যে আর্থিক লেনদেন এবং যোগাযোগের বিষয়টি অনেক নথি দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।
ইডি'র পরবর্তী পরিকল্পনা
ইডি এই তিনটি মামলায় চার্জশীট দাখিল করার পর আদালতের কাছ থেকে মামলা শুরু করার অনুমতি চাইবে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) অনুসারে, যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে বাদরা'র সম্পত্তি জব্দ করা হতে পারে। রবার্ট বাদরা সবসময় তাঁর উপর লাগানো সকল অভিযোগকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন।
তার দাবি, এটি সরকার কর্তৃক তাকে এবং তার স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা। বাদরা'র দাবি, তিনি কোন নিয়ম ভঙ্গ করেননি এবং কোনও সম্পত্তি অবৈধভাবে কিনেননি।
```