অপারেশন সিন্দুরের সাফল্যের পর থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সর্বত্র প্রশংসা হচ্ছে। এই অপারেশনে ভারতীয় সৈনিকরা কেবল অদম্য সাহস ও কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শন করেননি, বরং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের শক্তি ও সংকল্পও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন।
অপারেশন সিন্দুর: ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক সম্প্রতি পরিচালিত অপারেশন সিন্দুর কেবল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের শক্তি প্রদর্শন করেনি, বরং দেশবাসীর মনেও অপার গর্বের সঞ্চার করেছে। পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে সঠিক ও প্রচণ্ড আঘাত হানিয়া সেনাবাহিনী শত্রুদের কড়া জবাব দিয়েছে।
এখন এই সামরিক সাফল্যের পর কেন্দ্রীয় সরকার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আরও জোরদার করার দিকে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিরক্ষা বাজেটে ব্যাপক বৃদ্ধি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার ঘোষণা সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে করা হতে পারে।
অপারেশন সিন্দুর: শৌর্যের প্রতীক
অপারেশন সিন্দুর ভারতের জন্য কেবল একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং এটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সিদ্ধান্তমূলক নীতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। পাহলগামে সংঘটিত কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলার পর সেনাবাহিনী যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভারত এখন যেকোনো ধরণের আক্রমণের কড়া জবাব দিতে দ্বিধা করবে না।
সেনাবাহিনী এই অভিযানে ৯টি বৃহৎ সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এই অপারেশনে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে সেনাবাহিনী এটাও দেখিয়েছে যে তারা এখন কেবল প্রতিরক্ষা নয়, আক্রমণাত্মক নীতিও অনুসরণ করছে।
সরকারের পরিকল্পনা হল প্রতিরক্ষা খাতকে আরও শক্তিশালী করার জন্য পূরক বাজেটের মাধ্যমে ৫০,০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করা। এই প্রস্তাব সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অতিরিক্ত সম্পদের ব্যবহার প্রধানত উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, গোলাবারুদ এবং কৌশলগত অবকাঠামো নির্মাণে করা হবে।
বর্তমান প্রতিরক্ষা বাজেট ইতিমধ্যেই রেকর্ড স্তরে
২০২৪-২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতের জন্য ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা বরাদ্দ। এটি গত বিত্তীয় বছরের চেয়ে ৯.৫৩% বেশি। যদি এই পূরক বাজেট যোগ করা হয়, তাহলে এই সংখ্যা ৭.৩১ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। ২০০৪-১৫ সালে যখন মোদী সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ২.২৯ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক দশকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি সংঘটিত সংঘর্ষে ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাকিস্তান কর্তৃক প্রেরিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে। এই কৃতিত্ব দেখায় যে ভারত এখন সম্পূর্ণরূপে আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত হচ্ছে এবং তার আকাশসীমা আগের চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষিত। সরকার এই দিকে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরণের আকাশের চ্যালেঞ্জ সময়মতো ব্যর্থ করা যায়।
মেড-ইন-ইন্ডিয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পাবে উৎসাহ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় এই বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়েছেন যে অপারেশন সিন্দুরের সময় মেড-ইন-ইন্ডিয়া অস্ত্র ও প্রযুক্তি চমৎকার কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, এখন সময় এসেছে যে বিশ্ব মেড-ইন-ইন্ডিয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুত্বের সাথে নেবে। ২১শতকের যুদ্ধে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তি সকলেই দেখেছে। সরকার এখন ঘরোয়া প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলিকে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা শুরু করার বিষয়েও বিবেচনা করছে।
