অপারেশন সিন্দুর চলাকালীন পাকিস্তান আদমপুর এয়ারবেস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মিথ্যা দাবি করেছিল, যখন আসলে সেখান থেকেই ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানে সঠিক বোমাবর্ষণ করেছিল। কৌশলগত দিক থেকে এই এয়ারবেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আদমপুর এয়ারবেস: সম্প্রতি সফলভাবে সম্পন্ন ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর পাকিস্তান বিশ্বের কাছে দাবি করেছিল যে, ভারত-পাক সামরিক উত্তেজনার সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীর আদমপুর এয়ারবেস (Adampur Airbase) ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাস্তবতা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। সত্য হল, আদমপুর এয়ারবেস থেকে উড্ডয়নরত ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে সঠিক বোমাবর্ষণ করে তাদের ধ্বংস করে দিয়েছিল।
পাকিস্তানের এই মিথ্যা দাবিগুলি উন্মোচন করার এবং সেনাবাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আদমপুর এয়ারবেস পরিদর্শন করেছেন এবং সৈন্যদের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন।
আদমপুর এয়ারবেসের কৌশলগত শক্তি
ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে আদমপুর এয়ারবেসের গুরুত্ব অত্যন্ত বিশেষ। পঞ্জাবের জালন্ধর থেকে মাত্র ২১ কিলোমিটার এবং পাকিস্তান সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই এয়ারবেস ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবাহিনী স্টেশন।
আদমপুর এয়ারবেস MiG-29 যুদ্ধবিমানের ঘাঁটি। পাশাপাশি রাফেল, সুখোই-৩০ এবং মিরাজ-এর মতো অগ্রভাগের যুদ্ধবিমানগুলিও এখান থেকে পরিচালিত হয়। এ কারণেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো বড় আকাশ আঘাতে এই ঘাঁটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ইতিহাসেও এই এয়ারবেস ভারতকে গৌরবান্বিত করেছে। ১৯৬৫, ১৯৭১ এবং কার্গিল যুদ্ধে আদমপুর এয়ারবেস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অপারেশন সিন্দুরের সময়ও এখান থেকে উড্ডয়ন করে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী মোদী সৈন্যদের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন
তার পরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আদমপুর এয়ারবেসে অবস্থানরত সৈন্যদের সাথে দেখা করেছেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে পাকিস্তানকেও কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “ভারত মাতার জয় ময়দানেও গুঞ্জন করে এবং মিশনেও। ভারতের সৈন্যরা যখন মাতৃভূমি বলে, তখন শত্রুর হৃদয় কাঁপে। রাতের অন্ধকারেও আমরা সূর্য উঠিয়ে দিতে পারি।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট করে বলেছেন যে, সন্ত্রাসবাদী নেতারা বুঝতে পেরেছে যে, ভারতের দিকে নজর তোলার ফল শুধু ধ্বংস এবং মহাপ্রলয় হবে।
তিনি জানিয়েছেন যে, অপারেশন সিন্দুরের অধীনে ৯টি বড় সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে এবং ১০০-এরও বেশি সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছে। এটি ভারতের কৌশল, নীতি এবং দৃঢ়তার স্পষ্ট প্রমাণ।
অপারেশন সিন্দুর: শুধুমাত্র একটি সামরিক অভিযান নয়, ভারতের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে, অপারেশন সিন্দুর শুধুমাত্র একটি সামরিক অভিযান ছিল না। এটি ভারতের উদ্দেশ্য, নীতি এবং দৃঢ় চিন্তাধারার সমন্বয়। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, “ভারত বুদ্ধ ও গুরু গোবিন্দ সিংহ জীর ভূমি। কিন্তু যখন আমাদের বোন এবং মেয়েদের সিন্দুর মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়, তখন আমরা সন্ত্রাসবাদীদের ঘরে ঢুকে তাদের ধ্বংস করে দিই।”
এই বার্তা শুধুমাত্র পাকিস্তানের জন্যই ছিল না, বরং বিশ্বকেও দেখানোর জন্য ছিল যে ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনো পর্যায়ে আপোষ করবে না।
কেন আদমপুর এয়ারবেস পরিদর্শন প্রতীকী ছিল?
প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই পরিদর্শন শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর উৎসাহ বৃদ্ধির জন্যই ছিল না, বরং পাকিস্তানের মিথ্যা প্রচারকে উন্মোচন করার একটি সঠিক উপায়ও ছিল। আদমপুর এয়ারবেস থেকে পাকিস্তানের উপর সঠিক আঘাত ভারতের সামরিক ক্ষমতা এবং কৌশলগত চিন্তাধারা শত্রুর মিথ্যা দাবির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী তা প্রমাণ করেছে।
এই পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদী এটাও দেখিয়েছেন যে ভারত তার সামরিক শক্তিতে গর্ব করে এবং কোনো মিথ্যা প্রচারের কাছে মাথা নত করবে না।
