নৈনিতালে ধর্ষণের ঘটনার পর উত্তেজনা বেড়েছে। হিংসা ও ক্ষোভের মধ্যে, পর্যটনে গভীর প্রভাব পড়েছে। হোটেলের বুকিং বাতিল হচ্ছে, শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
নৈনিতাল: নৈনিতাল, যা একসময় তার শান্ত প্রকৃতি ও পর্যটনের জন্য পরিচিত ছিল, আজ রাগ, ভয় ও উত্তেজনার ছায়ায় আচ্ছন্ন। ১২ই এপ্রিল এক কিশোরীর সাথে ধর্ষণের ঘটনা পুরো শহরকে কাঁপিয়ে তুলেছে।
এই নৃশংস ঘটনার পর স্থানীয় জনতার ক্ষোভ ফুঁসকে উঠেছে, যার ফলে শহরে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়েছে এবং এখন পর্যটনেও এর গভীর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পর্যটকরা এখন নৈনিতাল থেকে ফিরে যাচ্ছেন এবং হোটেল ও হোমস্টে'র বুকিং বাতিল করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে নৈনিতাল আবারও হয়তো লকডাউনের পর প্রথমবারের মতো নিশ্চুপ দেখাচ্ছে।
ধর্ষণের নৃশংস ঘটনা
১২ই এপ্রিল নৈনিতালের এক ১৪ বছরের ছাত্রীর সাথে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ধর্ষণ করে। অভিযুক্ত ছেলেটিকে ২০০ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তার গাড়িতে তুলে নিয়ে ছুরি দেখিয়ে তার সাথে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর কিছুদিন ছেলেটি চুপ করে ছিল, কিন্তু অবশেষে সে তার বড় বোনকে সব কথা বলে। এরপর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শহরে বেড়েছে হিংসা ও ক্ষোভ
অভিযোগ দায়ের হওয়ার সাথে সাথেই হিন্দু সংগঠন ও স্থানীয় জনতা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। কয়েকশ লোক থানার সামনে জড়ো হয় এবং সেখানে ভাঙচুর ও হিংসার ঘটনাও ঘটে। মসজিদের কাছে ভিড় জমতে দেখে পুলিশকে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করতে হয়। পাথর ছোড়াছুড়ি, মারধর ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পুলিশ ও প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মাল্লিতাল থেকে তাল্লিটাল পর্যন্ত বাজার বন্ধ করে দেয়।
১ মে বড় বিক্ষোভ হয়
১ মে, হাজার হাজার স্থানীয় নাগরিক ও সংগঠনের কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসে এবং কমিশনার কার্যালয়ে যায়। তারা উত্তরাখণ্ডের কমিশনার দীপক রাওতকে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি করে যে অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের কাছে অভিযুক্তকে হস্তান্তর করার দাবি জানায়। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পুলিশ ধারা ১৪৪ জারি করে এবং গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কতা দেয়।
প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রশ্ন উঠেছে
স্থানীয় জনতা এও প্রশ্ন তুলেছে যে ঘটনার পর জেলার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা যেমন ডিএম ও এসএসপি ঘটনাস্থলে কেন উপস্থিত ছিলেন না। পুলিশ অধীক্ষক ও এসডিএম ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন, কিন্তু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি রাগকে আরও জ্বালিয়ে তুলেছে।
পুলিশের পদক্ষেপ ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান
পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে এবং মেডিকেল পরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ মুখপাত্রের মতে, আমরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত করছি। সাধারণ মানুষের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে যেন তারা শান্তি বজায় রাখে এবং আইনকে তার কাজ করতে দেয়। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে যে অভিযুক্তকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য কোনও কোণ কাটা হবে না।