মুরালিধরনের কোম্পানি জম্মু-কাশ্মীরের বরাদ্দকৃত জমি ফেরত দিল

মুরালিধরনের কোম্পানি জম্মু-কাশ্মীরের বরাদ্দকৃত জমি ফেরত দিল
সর্বশেষ আপডেট: 09-03-2025

শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার মুথাইয়া মুরালিধরনের কোম্পানি জম্মু-কাশ্মীরে বরাদ্দকৃত জমি ফেরত দিয়েছে, কেননা তারা কেন্দ্রের নতুন কেন্দ্রীয় সেক্টর স্কিম (এনসিএসএস)-এর সুবিধা পাচ্ছিল না।

জম্মু-কাশ্মীর সংবাদ: জম্মু-কাশ্মীরে শিল্পকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার বিশেষ নীতি প্রয়োগ করেছিল, যার অধীনে শিল্পপতিদের ছাড় দেওয়া হচ্ছিল। এই পরিকল্পনায় আকৃষ্ট হয়ে শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটার মুথাইয়া মুরালিধরনের কোম্পানি কঠুয়া জেলায় শিল্প স্থাপনের জন্য জমি বরাদ্দ করেছিল। কোম্পানিটি ১৬৪২ কোটি টাকার বিনিয়োগে সফট ড্রিঙ্কস উৎপাদন ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিল।

সরকারি স্কিমের সুবিধা না পাওয়ায় কোম্পানি সিদ্ধান্ত নিয়েছে

মুরালিধরনের কোম্পানি কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক ঘোষিত নতুন কেন্দ্রীয় সেক্টর স্কিম (এনসিএসএস)-এর সুবিধা পাচ্ছিল না। এই কারণে কোম্পানিটি জম্মু-কাশ্মীরে তাদের শিল্প স্থাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং জমি ফেরতের আবেদন দাখিল করেছে।

বিধানসভায় প্রসংগ উঠেছে

শনিবার এই বিষয়টি জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় উঠে আসে। সিপিআই(এম) বিধায়ক মোহাম্মদ ইউসুফ তরিগামী মুরালিধরনের নাম না নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যে, একজন বিদেশী ক্রিকেটারকে কী ভিত্তিতে জমি দেওয়া হয়েছিল? তিনি সরকারের কাছে জমি বরাদ্দের হার এবং কি কোনও শুল্ক আদায় করা হয়েছিল তা স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন। কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিধায়করাও এই বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন এবং তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

২৫.৭৫ একর জমির জন্য আবেদন করেছিল

মুরালিধরনের কোম্পানি সেলান বেভারেজেস ২০২৩ সালে ২৫.৭৫ একর (২০৫ ক্যানাল) জমির জন্য আবেদন করেছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারীতে কঠুয়ায় তাদের জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে, কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক এনসিএসএস-এর অধীনে প্রদত্ত ২৮,৪০০ কোটি টাকার প্যাকেজ শেষ হয়ে গেছে, যার ফলে কোম্পানিটি পরিকল্পনার সুবিধা পায়নি। এই কারণেই কোম্পানিটি শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা ত্যাগ করেছে।

জমি বরাদ্দের প্রক্রিয়া

জম্মু-কাশ্মীরে শিল্প স্থাপনের জন্য সরকারের সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদন করা হয়। এরপর বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনা করে মেধা তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এরপর রাজ্যের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে গঠিত এপেক্স কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর জমি বরাদ্দ করা হয়। মুরালিধরনকেও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জমি দেওয়া হয়েছিল।

শিল্প বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের অবস্থা

এনসিএসএস-এর অধীনে জম্মু-কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত ৯৬০৬.৪৬ কোটি টাকার বিনিয়োগে ১৯৮৪টি শিল্প ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে, যার ফলে ৬৩,৭১০ জন কর্মসংস্থান পেয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের কাছে ১.৬৩ লক্ষ কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে, যার ফলে ৫.৯০ লক্ষ লোক কর্মসংস্থান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকারের পক্ষ 

জম্মু-কাশ্মীরের শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক অরুণ মনহাস জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী সকল বিনিয়োগকারীদের জমি বরাদ্দ করেছে। মুরালিধরন দুই দিন আগে জমি ফেরতের আবেদন দিয়েছে, কারণ তারা এনসিএসএস-এর সুবিধা পাচ্ছিল না। সরকার নিয়মানুযায়ী ২০ শতাংশ টাকা কেটে বাকি টাকা ফেরত দেবে।

Leave a comment