বিহারের মতিপুরে জেডিইউ নেতা বিনয় প্যাটেলের উপর মহাদলিত বস্তিতে উৎপাত, তিনজনকে আহত করা ও জাতিগত গালি দেওয়ার অভিযোগ, এসসি-এসটি আইনে মামলা দায়ের।
মুজফ্ফরপুর: বিহারের মতিপুর থানা এলাকার নরিয়ার বারৈঠা গ্রামের মহাদলিত বস্তিতে জেডিইউ প্রখণ্ড সভাপতি বিনয় প্যাটেল এবং তাঁর সমর্থকরা ব্যাপক উৎপাত করে। এ সময় তিনজনের সাথে মারধর করা হয়, যার ফলে তারা গুরুতর আহত হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য সমাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে (সিএইচসি) ভর্তি করা হয়েছে।
এসসি-এসটি আইনে মামলা দায়ের
ঘটনার প্রেক্ষিতে মহাদলিত বস্তির মিন্টু কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে মতিপুর পুলিশ জেডিইউ নেতা বিনয় প্যাটেল, সুমন কুমার, প্রিন্স কুমার, শুভম কুমার, প্রবীণ কুমার এবং দেবেন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে এসসি-এসটি আইনের অধীনে প্রাথমিকী দায়ের করেছে।
পশুপালের ফসল নষ্টের জেরে বিবাদ
জানা গেছে, জেডিইউ নেতা বিনয় প্যাটেলের মহাদলিত বস্তিতে জমি আছে, যেখানে তিনি ভুট্টা চাষ করেছিলেন। দুই দিন আগে কিছু পশুপাল তাঁর ফসল নষ্ট করে দেয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তাঁর সমর্থকদের সাথে বস্তিতে গিয়ে ব্যাপক হাঙ্গামা করে।
বস্তিতে গালিগালাজ ও মারধর
ক্রোধে উত্তাল জেডিইউ নেতা ও তাঁর সমর্থকরা মহাদলিত বস্তিতে গালিগালাজ করে। বস্তির লোকজন প্রতিবাদ করলে মিন্টু কুমার, রাজন কুমার এবং পাপ্পু কুমারকে নির্মমভাবে পিটানো হয়। এই ঘটনার পর বস্তিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ
বস্তির লোকজনের অভিযোগ, জেডিইউ নেতা বিনয় প্যাটেল প্রায়ই এখানে এসে দাপিয়ে বেড়ায় এবং নারীদের প্রতি অশ্লীল মন্তব্য করে। এ কারণে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিনয় প্যাটেলও প্রাথমিকী দায়ের
অন্যদিকে, জেডিইউ নেতা বিনয় প্যাটেলও আধা ডজন লোকের বিরুদ্ধে প্রাথমিকী দায়ের করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর ফসলের ক্ষতির প্রতিবাদ করার সময় কয়েকজন তাঁর সাথে গালিগালাজ এবং হুমকি দিয়েছে।
জেডিইউ নেতার অডিও ভাইরাল
এই ঘটনার পর জেডিইউ নেতার একটি অডিও ক্লিপ ইন্টারনেট মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি একটি নির্দিষ্ট জাতির বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করছেন। তবে এই অডিওর আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও সত্যতা মেলেনি, কিন্তু এরপর জেডিইউ নেতৃত্ব তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
গঠবন্ধনীয় নেতারা নীরব
জেডিইউ নেতার এই বিতর্কিত অডিও প্রকাশের পর মহাগঠবন্ধনে থাকা অন্যান্য দলগুলি এ ব্যাপারে মন্তব্য করেনি। মনে করা হচ্ছে, এই বিতর্ক সরকারের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তাই সহযোগী দলগুলি এই বিষয় থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে।
রাজদ জেডিইউ নেতার বরখাস্তের দাবি
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। রাজদ-এর ব্যবসায়ী প্রকোষ্ঠের রাজ্য উপাধ্যক্ষ রাহুল সর্রাফ জেডিইউ নেতার বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জেডিইউ যদি এই বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয় তাহলে রাজদ নেতা বিরোধী দলের নেতার মাধ্যমে এই বিষয়টি বিধানসভায় তুলবে।
