মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহের ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশির বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। অপারেশন সিন্দুরের ব্রিফিং দিচ্ছিলেন এমন কর্নেল সোফিয়ার প্রতি মন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হচ্ছে।
এন্টারটেইনমেন্ট: মধ্যপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী বিজয় শাহ আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এবার তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশির বিরুদ্ধে এমন বক্তব্য দিয়েছেন যা নিয়ে শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায়ই নয়, রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তার এই বক্তব্য এখন আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। অপারেশন সিন্দুরের ব্রিফিং দিচ্ছিলেন এমন কর্নেল সোফিয়ার প্রতি মন্ত্রীর দেওয়া মন্তব্যকে অসংবেদনশীল এবং অপমানজনক বলে মনে করা হচ্ছে। দেশজুড়ে মানুষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছে।
এটা প্রথমবার নয় যখন বিজয় শাহ এই ধরণের কোনও কাজের জন্য শিরোনামে আসছেন। ২০২১ সালেও তিনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন, যখন তিনি বিদ্যা বালনের ছবি ‘শেরনি’-এর শুটিং মধ্যপ্রদেশে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, মন্ত্রী বিজয় শাহ তার ব্যক্তিগত অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ছবির শুটিং প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছিলেন, যার ফলে চলচ্চিত্র ইউনিটকে গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এই হস্তক্ষেপের ফলে শুটিং মাঝপথে বন্ধ করতে হয়েছিল, যার ফলে প্রোডাকশন টিমকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
এখন আবার যখন বিজয় শাহ মহিলা সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, তখন চার বছর আগের এই ঘটনা আবারও শিরোনামে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীরা এটাকে ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণ বলে মনে করছে, অন্যদিকে বিরোধী দলও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। অনেক নেতা জনসম্মুখে মন্ত্রীকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় হল রাজ্য সরকার এই বর্ধমান বিতর্কে কী অবস্থান নেয়।
‘শেরনি’র শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
মধ্যপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী বিজয় শাহ আবারও বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর মহিলা কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশির বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর একটি পুরোনো ঘটনা এখন আবারও শিরোনামে এসেছে। এই ঘটনাটি ২০২০ সালের, যখন বিজয় শাহ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের ক্যাবিনেটে বনমন্ত্রী ছিলেন এবং বিদ্যা বালন তার ছবি ‘শেরনি’র শুটিংয়ের জন্য বলাঘাটের জঙ্গলে উপস্থিত ছিলেন।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সে সময় শুটিংয়ের সময় জেলা বন কর্মকর্তা প্রোডাকশন টিমের গাড়িগুলিকে সীমিত করে দিয়েছিলেন এবং শুধুমাত্র দুটি গাড়িকে জঙ্গলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ঠিক এ সময় হঠাৎ মন্ত্রী বিজয় শাহ শুটিং বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে দিলেন। কারণ জেনে সবাই অবাক হয়ে গেল। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে মন্ত্রী বিজয় শাহ এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন কারণ বিদ্যা বালন তার সাথে ডিনার করার আগ্রহ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এই অভিযোগের কারণে শুধুমাত্র চলচ্চিত্র ইউনিটই নয়, শুটিংও অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনাটি সে সময়ও শিরোনামে ছিল, কিন্তু এখন আবার কর্নেল সোফিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যের পরে এই পুরোনো বিতর্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে। বিরোধী দল যেখানে মন্ত্রীর ইস্তফার দাবি করছে, সেখানে সাধারণ মানুষও তার আচরণকে ক্ষমতার অহংকারের উদাহরণ বলে মনে করছে।
বিজয় শাহ স্পষ্টীকরণ দিয়েছিলেন
২০২০ সালে বিদ্যা বালনের ছবি ‘শেরনি’র শুটিং নিয়ে উঠে আসা বিতর্কের সময় মধ্যপ্রদেশের বনমন্ত্রী বিজয় শাহ তার স্পষ্টীকরণ দিয়েছিলেন। তার উপর অভিযোগ ছিল যে তিনি অভিনেত্রীর ডিনারের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করার পরে ছবির শুটিং বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে বিজয় শাহ এই দাবিগুলিকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে এটিকে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেছিলেন।
মিডিয়ার সাথে আলাপচারিতায় বিজয় শাহ বলেছিলেন, “যারা শুটিংয়ের জন্য অনুমতি চেয়েছিল, আমি তাদের জন্যই বলাঘাটে উপস্থিত ছিলাম। তারাই আমাকে ডিনারের জন্য ডেকেছিল, কিন্তু আমি নিজেই সেই আমন্ত্রণকে নম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম।” তিনি আরও বলেছিলেন যে শুটিং বন্ধ করার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং এই বিষয়টি অযথা বড় আকার ধারণ করেছে।
অন্যদিকে যদি ‘শেরনি’ ছবির কথা বলি, তাহলে এটি ২০২১ সালের জুন মাসে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে সরাসরি ওটিটি রিলিজ হয়েছিল। ছবিটি দর্শক এবং সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছিল। বিদ্যা বালন এতে একজন সৎ বন কর্মকর্তার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যিনি একটা মানুষ খাওয়া বাঘিনী ধরার মিশনে রয়েছেন। ছবির গল্প, নির্দেশনা এবং সামাজিক বার্তা নিয়ে এটিকে অনেক পছন্দ করা হয়েছিল।