মণিপুরে অব্যাহত হিংসা: মন্ত্রী-বিধায়কদের বাড়িতে ভাঙচুর, জনজীবনে আতঙ্ক

মণিপুরে অব্যাহত হিংসা: মন্ত্রী-বিধায়কদের বাড়িতে ভাঙচুর,  জনজীবনে আতঙ্ক
সর্বশেষ আপডেট: 20-01-2025

মণিপুরে হিংসা ও অশান্তি অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে রাজ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলিতে প্রতিবাদকারীরা মন্ত্রী ও বিধায়কদের বাড়ি লক্ষ্য করে ভাঙচুর করেছে।

ইম্ফাল: মণিপুরে হিংসার ধারা থামার নাম নেয়নি। তিনজন মহিলা ও তিনজন শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর রাজ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে, যার ফলে ব্যাপক প্রতিবাদ হচ্ছে। প্রতিবাদকারীরা মন্ত্রী ও বিধায়কদের বাড়িতে ভাঙচুর করেছে। এদিকে, বিজেপি সরকারের সহযোগী ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে, অভিযোগ করে যে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের নেতৃত্বে প্রশাসন শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং সংকট সমাধানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

তবে, বিজেপির ৩২ জন বিধায়কের সাথে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, যার ফলে সরকারের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। এই হিংসা রাজ্যের শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেছে। সরকারকে কেবল দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত নয়, বরং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সংলাপ স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

মণিপুর হিংসার ১০টি প্রধান আপডেট

১. হত্যা ও প্রতিবাদ: জিরিবাম জেলায় উগ্রবাদীদের দ্বারা তিনজন মহিলা ও তিনজন শিশুর হত্যার প্রতিবাদে ১৬ নভেম্বর তিনজন মন্ত্রী ও ছয়জন বিধায়কের বাসভবনে হামলা হয়। ঘটনার পর রাজ্যে অনির্দিষ্টকালীন কারফিউ জারি করা হয়।

২. উত্তেজনা ও অগ্নিসংযোগ: মৃতদেহের ছবি প্রচারের পর রবিবার জিরিবামে উত্তেজনা আবার বেড়ে যায়। ক্ষুব্ধ জনতা বহু রাজনৈতিক দলের কার্যালয় পুড়িয়ে দেয়।

৩. গ্রেপ্তার ও উদ্ধার: পুলিশ ইম্ফাল পূর্ব, ইম্ফাল পশ্চিম ও বিষ্ণুপুর জেলা থেকে ২৫ জন প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

৪. নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান: আসাম রাইফেলস, বিএসএফ ও রাজ্য বাহিনী প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও রাবারের গুলি ছোড়ে। হিংসায় ১৫ জনের বেশি আহত হয়।

৫. চার্চ ও বাড়িতে হামলা: আদিবাসী জনজাতীয় নেতাদের মঞ্চ (আইটিএলএফ) অভিযোগ করে যে শনিবার রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী সম্প্রদায় পাঁচটি চার্চ, একটি স্কুল, একটি পেট্রোল পাম্প ও ১৪টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়।

৬. ফ্ল্যাগ মার্চ: সেনা, আসাম রাইফেলস, বিএসএফ, সিআরপিএফ ও মণিপুর পুলিশ রাজধানী ইম্ফাল ও আশপাশের এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চ করে।

৭. বীরেন সিংহের বিরুদ্ধে অসন্তোষ: বিজেপির ১৯ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহকে সরানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি লিখে।

৮. COCOMI-এর ধর্মঘট: মৈতেই সম্প্রদায়ের সংগঠন COCOMI শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়।

৯. AFSPA পুনঃপ্রয়োগ: মণিপুর সরকার কেন্দ্রের কাছে AFSPA প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল। কেন্দ্র ১৪ নভেম্বর ইম্ফাল ও অন্যান্য সংবেদনশীল এলাকায় AFSPA পুনঃপ্রয়োগ করে।

১০. গৃহমন্ত্রীর সমাবেশ বাতিল: গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ নাগপুরের সমাবেশ বাতিল করে মণিপুরের পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে দিল্লিতে ফিরে আসেন। কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী (CRPF) প্রধান অনিশ দয়ালকে মণিপুরের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য পাঠানো হতে পারে।

Leave a comment