মহারাষ্ট্র, যা দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী, ২০২৪ সালে সবচেয়ে ধনী রাজ্য ছিল। এর অনুমানিত মোট রাজ্যের দেশজ উৎপাদন (GSDP) ৪২.৬৭ লক্ষ কোটি টাকা, যা জাতীয় GDP-এর ১৩.৩%।
বছর শেষের ২০২৪: ২০২৪ সালটি ভারতীয় অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সফল বছর প্রমাণিত হয়েছে। এই বছরে ভারত ৮.২% GDP বৃদ্ধি রেকর্ড করেছে, যা সরকারের আনুমানিক ৭.৩% বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি। এর ফলে ভারতের GDP ৪৭.২৪ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। এই পারফরম্যান্স ভারতকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে আরও শক্তিশালী করেছে।
দেশের সবচেয়ে ধনী রাজ্য
২৮টি রাজ্য, ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং একটি রাজধানী সহ ভারতের বৈচিত্র্য তার অর্থনৈতিক শক্তিকে সংজ্ঞায়িত করে। এর মধ্যে কিছু রাজ্য কেবলমাত্র আঞ্চলিকভাবে নয়, জাতীয় পর্যায়েও অর্থনৈতিক বিকাশের প্রধান কেন্দ্র হিসাবে উঠে এসেছে। GDP এবং GSDP-এর ভিত্তিতে, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটক এই বছরের সবচেয়ে ধনী রাজ্যগুলির মধ্যে ছিল।
মহারাষ্ট্র সবচেয়ে ধনী রাজ্য
মহারাষ্ট্র, যাকে দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী বলা হয়, ২০২৪ সালে সবচেয়ে ধনী রাজ্য ছিল। এর অনুমানিত মোট রাজ্যের দেশজ উৎপাদন (GSDP) ৪২.৬৭ লক্ষ কোটি টাকা, যা জাতীয় GDP-এর ১৩.৩%। মহারাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শক্তির একটি বড় অংশ তার আর্থিক সেবা, শিল্প এবং চলচ্চিত্র শিল্প থেকে আসে। রাজ্যের রাজধানী মুম্বাই, জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র। রিলায়েন্স এবং টাটা-র মতো কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ও একে অন্যান্য রাজ্য থেকে আলাদা করে।
তামিলনাড়ু দ্বিতীয় স্থানে
তামিলনাড়ু, যাকে 'এশিয়ার ডেট্রয়েট' বলা হয়, ৩১.৫৫ লক্ষ কোটি টাকা GSDP-এর সাথে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এর অর্থনীতিতে মোটরগাড়ি, পাট ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো শিল্পের বড় অবদান রয়েছে। তামিলনাড়ুর মাথাপিছু GDP ৩.৫০ লক্ষ টাকা (অর্থ বছর ২০২৩-২৪) ছিল, যা এটিকে মাথাপিছু আয়ের দিক থেকেও একটি শক্তিশালী রাজ্য করে তোলে।
কর্ণাটক তৃতীয় স্থানে
কর্ণাটক ২৮.০৯ লক্ষ কোটি টাকা GSDP-এর সাথে তৃতীয় স্থানে ছিল। এর জাতীয় GDP-তে অবদান ৮.২%। বেঙ্গালুরু, যাকে ভারতের "সিলিকন ভ্যালি" বলা হয়, রাজ্যের অর্থনৈতিক শক্তির প্রধান উৎস। তথ্যপ্রযুক্তি, স্টার্টআপ এবং নতুন আবিষ্কারে এই রাজ্য সবচেয়ে এগিয়ে।
গুজরাট চতুর্থ স্থানে
গুজরাট ২৭.৯ লক্ষ কোটি টাকা GSDP-এর সাথে চতুর্থ স্থানে ছিল। এর জাতীয় GDP-তে অবদান ৮.১%। এই রাজ্য তার শক্তিশালী শিল্প ভিত্তি এবং ব্যবসার পরিবেশের জন্য পরিচিত। পেট্রোকেমিক্যাল, পাট এবং হীরা পালিশিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতে এই রাজ্য অগ্রগামী।
উত্তর প্রদেশ ৫ম স্থানে
ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য, উত্তর প্রদেশ, ২৪.৯৯ লক্ষ কোটি টাকা GSDP এবং ৮.৪% জাতীয় GDP অবদানের সাথে পঞ্চম স্থানে ছিল। তবে, রাজ্যের মাথাপিছু আয় মাত্র ০.৯৬ লক্ষ টাকা, যা অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় রাজ্যের তুলনায় কম।
তালিকায় আরও কিছু রাজ্য
পশ্চিমবঙ্গ: ১৮.৮ লক্ষ কোটি টাকা GSDP এবং ৫.৬% জাতীয় অবদানের সাথে ষষ্ঠ স্থানে।
তেলঙ্গানা: ১৬.৫ লক্ষ কোটি টাকা GSDP এবং ৪.৯% অবদানের সাথে দ্রুত উত্থানশীল রাজ্য, তালিকায় ৮ম স্থানে।
আন্ধ্র প্রদেশ: ১৫.৮৯ লক্ষ কোটি টাকা GSDP এবং ৪.৭% অবদানের সাথে ৮ম স্থানে।
দিল্লি: ভারতের রাজধানী, ১১.০৭ লক্ষ কোটি টাকা GSDP রেকর্ড করেছে। এটি জাতীয় GDP-তে ৩.৬% অবদান রাখে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
S&P Global Market Intelligence-এর মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে। এই বৃদ্ধির কারণ প্রধান রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক অবদান এবং তাদের মৌলিক অবকাঠামো।
```