রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের মহারানী কলেজে অধ্যক্ষ পদ নিয়ে বিতর্ক আরও গভীর হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া নিমাली সিং সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যদি তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হয়, তবে তিনি অনশনে বসবেন। একই সময়ে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতির অভিযোগের কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে, যার পরে এই বিষয়টি এখন একটি বড় বিতর্কে পরিণত হয়েছে।
উপাচার্যের অভিযোগ: আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি
রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আল্পনা কাটেজা জানিয়েছেন যে, নিমালি সিংকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আর্থিক অনিয়মের কারণে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান (রুসা) ২.০-এর অধীনে হোম সায়েন্স বিভাগকে দেওয়া ১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার তহবিল ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে, ২০২১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে হওয়া খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এই সম্মেলনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি হিসেবে নিমালি সিং দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, সম্মেলনে অতিথিদের দেওয়া স্মারক এবং শাড়ি কেনার ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়ম ছিল। এই বিষয়ে এর আগে একটি তদন্তও করা হয়েছিল, যার পরে এই অভিযোগগুলো সামনে আসে।
নিমাली সিং-এর পাল্টা জবাব: এটিকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন
নিমাली সিং এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণরূপে খণ্ডন করে এটিকে একটি ষড়যন্ত্র বলেছেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে কোনো সঠিক জবাব দেয়নি এবং যে বিলগুলি বিতর্কিত বলা হয়েছে, সেগুলির কোনও পেমেন্টই হয়নি। সিং প্রশ্ন তুলেছেন, পেমেন্ট না করে কীভাবে কোনও অডিটের কথা বলা যায় এবং তার ওপর ভিত্তি করে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তার দাবি, তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে পদ থেকে সরানোর জন্য এই পুরো প্রক্রিয়াটি করা হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, যাকে অধ্যক্ষ করা হয়েছে, তার জন্য আগেও এই চেষ্টা করা হয়েছিল। সিং তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, যদি তার আদেশ প্রত্যাহার করা না হয়, তবে তিনি ১২ই ডিসেম্বর থেকে মহারানী কলেজে অনশনে বসবেন।
নতুন অধ্যক্ষ পায়েল লোঢ়ার নিয়োগ
রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় নিমাली সিং-এর জায়গায় পায়েল লোঢাকে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করেছে। পায়েল লোঢ়ার নিয়োগের আগে থেকেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এই পদক্ষেপটি কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল কিনা, কারণ নিমাली সিং এই বিষয়ে আগে থেকেই অনেকবার তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
শিক্ষা জগতে গভীর প্রভাব
মহারানী কলেজের এই বিতর্ক শুধু অধ্যক্ষ পদ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিক্ষা জগতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিতর্ক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মপদ্ধতির উপর প্রশ্ন তুলেছে। একই সাথে, এটি নিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যেও উত্তেজনা বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দেখতে হবে এই বিতর্কের সমাধান কীভাবে হয় এবং নিমাली সিং তার হুঁশিয়ারি বাস্তবায়ন করেন কিনা।
এই বিষয়টি রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে এবং আগামী দিনে এর উপর আরও অনেক প্রতিক্রিয়া সামনে আসতে পারে।