কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সম্প্রতি একজন রাজনৈতিক নেতার দেওয়া ‘লঙ্গড় ঘোড়া’ সম্পর্কিত মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এবং এটিকে কেবলমাত্র অশোভনই নয়, প্রতিবন্ধীদের অপমান বলেও অভিহিত করেছেন।
নয়াদিল্লি: সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দেওয়া এক বক্তব্যে ‘লঙ্গড় ঘোড়া’ শব্দ ব্যবহারের ফলে দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি কেবলমাত্র রাজনৈতিক মর্যাদার লঙ্ঘন নয়, বরং প্রতিবন্ধীদের মর্যাদাহানিকর একটি বক্তব্য।
ভাষার মর্যাদা অপরিহার্য
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এই বক্তব্য কেবলমাত্র রাজনৈতিক মর্যাদার বিরুদ্ধে নয়, করোড়ো প্রতিবন্ধী মানুষের সম্মানের বিরুদ্ধেও, যারা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও জীবনে এগিয়ে চলেছেন। রাজনৈতিক মতবিরোধের অর্থ এই নয় যে আমরা মানবিক অনুভূতিকে পিষে ফেলব।
তিনি আরও বলেন, এই ধরণের ভাষা কেবলমাত্র গণতন্ত্রকে দুর্বল করে না, বরং সমাজে অনুভূতিহীনতা ও অপমানের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
প্রতিবন্ধী সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ
সিন্ধিয়ার বক্তব্যের পর প্রতিবন্ধী সংগঠনগুলিও উক্ত মন্তব্যের নিন্দা করেছে। ‘প্রতিবন্ধী ঐক্য মঞ্চ’র সভাপতি রমেশ চৌরসিয়া বলেন, রাজনীতিতে ব্যক্তিগত কটাক্ষ এবং অপমানজনক উপমা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ‘লঙ্গড় ঘোড়া’ এই ধরণের শব্দ ব্যবহার প্রতিবন্ধীদের মানসিকভাবে আঘাত করে। তিনি নির্বাচন কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশনকে এই বক্তব্যের বিষয়ে নোটিশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজনীতিতে শালীনতার প্রশ্ন উঠল
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নির্বাচনী বক্তৃতায় ভাষার মর্যাদা বারবার ভঙ্গ হচ্ছে। বিরোধীদের উপর আক্রমণ করা আলাদা ব্যাপার, কিন্তু যখন এই আক্রমণ সমাজের কোনও সংবেদনশীল শ্রেণীর উপর আঘাত করে, তখন রাজনীতির রূপ বিকৃত হয়ে যায়। একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেছেন, কেবলমাত্র ভোটের জন্য যখন রাজনৈতিক দলগুলি জনসম্মুখে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে, তখন তারা গণতন্ত্রের আত্মাকে আঘাত করে।
সিন্ধিয়া আরও বলেছেন, আজকের সময়ে রাজনৈতিক আলোচনা চিন্তার পর্যায়ে লড়াই করা উচিত, গালিগালাজ এবং অপমানের মাধ্যমে নয়। তিনি সকল রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন করেছেন যাতে তারা ভাষার মর্যাদা বজায় রাখে এবং এমন শব্দ ব্যবহার এড়িয়ে চলে যা কোনও নির্দিষ্ট শ্রেণীর মানুষকে অপমান করে।