ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই, ৮৫ বছর বয়সী, বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মোজতবা খামেনেইয়ের নাম উঠে আসছে।
তেহরান: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনেইয়ের স্বাস্থ্য নিয়ে সম্প্রতি গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, তিনি কোমায় চলে গেছেন এবং বর্তমানে "গুরুতর অসুস্থ"। এদিকে, এক অপ্রত্যাশিত ঘটনাক্রমে, খামেনেই হঠাৎ করেই তাঁর পুত্র মোজতবাকে তাঁর উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্ত ইরানের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে, কারণ মোজতবা খামেনেইয়ের নির্বাচন তাঁর পিতার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।
ইসরায়েলের মিডিয়া আউটলেট ওয়াইনেট নিউজের বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে কর্মকর্তারা গত মাসে একটি গোপন বৈঠকে খামেনেইয়ের উত্তরাধিকারীর নির্বাচন করেছিলেন।
খামেনেই এবং মোজতবা আমানির বৈঠক
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইয়ের সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির মধ্যে, তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁর পুত্র মোজতবা খামেনেইয়ের নাম উঠে এসেছে। খামেনেইয়ের এক্স (পূর্ব টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে তিনি লেবাননে ইরানের রাষ্ট্রদূত মোজতবা আমানির সাথে আলাপ করছেন। এর সাথে একটি ফারসি বার্তাও রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে খামেনেই মোজতবা আমানির সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং নিয়মিত বৈঠকের সময় তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছেন।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, আয়াতুল্লাহ খামেনেই নিজেই এক্সপার্ট অ্যাসেম্বলির সদস্যদের ডেকে উত্তরাধিকারীর নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এই অ্যাসেম্বলি মোজতবা খামেনেইয়ের নামে একমত হয়েছে, যদিও এই পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মোজতবা খামেনেইয়ের নাম আগে থেকেই উত্তরাধিকারী হিসেবে আলোচনায় ছিল, এবং ইরানের সরকারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ এটিকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
কোন হলেন মোজতবা খামেনেই?
মোজতবা খামেনেই, যিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইয়ের ছোট ছেলে, ১৯৬৯ সালে মশহাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৭-৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং পরে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি কুমে মৌলবি হওয়ার জন্য শিক্ষা লাভ করেছিলেন। মোজতবা তাঁর পিতার মতো ইসলামিক বিষয়ের জ্ঞানী এবং ইরানের রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, যদিও তিনি জনসমক্ষে কমই দেখা যান।
মোজতবা খামেনেই সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলে আসছিল যে তিনি তাঁর পিতার উত্তরাধিকারী হতে পারেন, এবং এই সিদ্ধান্ত সম্প্রতি একটি গোপন বৈঠকের সময় নেওয়া হয়েছে। এই অ্যাসেম্বলি মোজতবাকে আয়াতুল্লাহ খামেনেইয়ের উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করেছে।
এছাড়াও, খামেনেই সম্প্রতি তাঁর প্রথম উপদেশে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছেন এবং বলেছেন যে ইসরায়েল "দীর্ঘদিন টিকবে না"। এই বক্তব্যের পর তিনি ফিলিস্তিনি এবং লেবাননের আন্দোলনগুলির সমর্থন করেছেন এবং তেহরানের একটি মসজিদে হাজার হাজার সমর্থককে উদ্দেশ্য করে তাঁর ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলিকে "জনসেবার" রূপে যুক্তিযুক্ত করেছেন।