কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ওয়াকফ সংশোধনী বিল অনুমোদন

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে সংসদের যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) কর্তৃক প্রস্তাবিত ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীকে অনুমোদন দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পরে, বিলটি এখন মার্চ মাসে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্যায়ে সংসদে উত্থাপন করা হবে।

নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে সংসদের যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) কর্তৃক প্রস্তাবিত ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীকে অনুমোদন দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পরে, বিলটি এখন মার্চ মাসে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্যায়ে সংসদে উত্থাপন করা হবে। ১০ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ অধিবেশনে বিল নিয়ে আলোচনা এবং ভোট গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।

ক্যাবিনেটের অনুমোদনে বিল এগিয়ে গেল

এই বিলের উদ্দেশ্য হল ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা এবং প্রশাসনিক সংস্কার নিশ্চিত করা। ১৩ ফেব্রুয়ারী যখন জেপিসি রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপিত হয়, তখন বিরোধী দল তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালের নেতৃত্বাধীন যৌথ কমিটি ১৩ ফেব্রুয়ারী বিরোধী দলের প্রতিবাদের মধ্যেই তাদের রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপন করে। এই রিপোর্টে ৬৭টি প্রস্তাবিত সংশোধনের মধ্যে ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী অনুমোদিত হয়। বিরোধী দল কর্তৃক প্রস্তাবিত ৪৪টি সংশোধনী বাতিল করা হয়।

নতুন ওয়াকফ বিলে কি পরিবর্তন আসবে?

* বিলের নাম পরিবর্তন করা হবে – এখন একে 'একীভূত ওয়াকফ ব্যবস্থাপনা, সবলীকরণ, দক্ষতা এবং উন্নয়ন বিল' বলা হবে।
* ওয়াকফ বোর্ডে মুসলিম ওবিসি সম্প্রদায় থেকেও একজন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হবে।
* বোর্ডে নারীদেরও প্রতিনিধিত্ব দেওয়া হবে।
* অ-মুসলমানদেরও ওয়াকফ বোর্ডের অংশ হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
* সকল ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ ছয় মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় পোর্টালে আপলোড করা বাধ্যতামূলক হবে।
* ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তির সীমা নির্ধারণ করা হবে।
* সম্পত্তির সম্পূর্ণ রেকর্ড ডিজিটালকরণ করা হবে।
* বোর্ডে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (CIO) হিসেবে নিয়োগ করা হবে।
* অডিট ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে, যা আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
* সম্পত্তির তত্ত্বাবধানে জেলাশাসকের ভূমিকা বৃদ্ধি করা হবে।
* ওয়াকফ সম্পত্তির স্বরূপ নিশ্চিত করার জন্য সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
* ওয়াকফ সম্পত্তির দাবিতে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা হবে।
* অবৈধ দখল রোধে কঠোর বিধান প্রয়োগ করা হবে।
* ওয়াকফ সম্পত্তির অনধিকার প্রয়োগে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হবে।

১৯২৩ সালের ওয়াকফ আইন বাতিল হবে

ক্যাবিনেট মুসলমান ওয়াকফ (বাতিল) বিল, ২০২৪ কেও অনুমোদন দিয়েছে, যা ১৯২৩ সালের ব্রিটিশ আমলের ওয়াকফ আইন বাতিল করবে। এই পুরানো আইন বর্তমান প্রয়োজনীয়তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না এবং এটিকে বাতিল করে একটি আধুনিক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিযোগ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বিরোধী দল ওয়াকফ সংশোধনী বিলে ৪৪টি পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু সেগুলো বাতিল করা হয়। বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির প্রস্তাবিত ২৩টি পরিবর্তনের মধ্যে ১৪টি অনুমোদন পায়।