জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণে কানাডায় প্রধানমন্ত্রী মোদী

জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণে কানাডায় প্রধানমন্ত্রী মোদী
সর্বশেষ আপডেট: 17-06-2025

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য কানাডার ক্যালগারিতে পৌঁছে গেছেন। এই সম্মেলনটি আলবার্টার কানাকাস্কিসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদী শীঘ্রই অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন।

PM Modi in Canada: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার কানাডার আলবার্টা প্রদেশের ক্যালগারিতে পৌঁছেছেন, যেখানে তিনি ৫১তম জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন। এই সফরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ২০২৩ সালে খালিস্তান ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও কানাডার মধ্যে তীব্র কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার পর এটিই প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রথম কানাডা সফর।

সম্মেলনটি কানাডার সুন্দর পর্বতময় অঞ্চল কানাকাস্কিসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে বিশ্বের প্রধান গণতান্ত্রিক শক্তি—ফ্রান্স, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান এবং ইতালি—এক মঞ্চে একত্রিত হয়েছে। এবার জি-৭ সম্মেলনের আয়োজক দেশ কানাডা এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কর্নি। এটি ধারাবাহিকভাবে ছয়তমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী মোদী জি-৭ এর মতো বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অংশগ্রহণকে জোরদার করছেন।

ভারত-কানাডা সম্পর্কের নতুন মোড়?

কানাডা সফরের গুরুত্ব কেবলমাত্র বিশ্ব কূটনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়। এই সফরটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন ভারত ও কানাডার সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালে খালিস্তানী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের পর কানাডা প্রকাশ্যে ভারতের উপর আঙুল তুলেছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরাসরি ভারত সরকারের উপর অভিযোগ আনেন, যার ফলে উভয় দেশের মধ্যে বিশ্বাসের দেয়াল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিল।

এর পরে ভিসা সেবায় বাধা, কূটনীতিকদের প্রত্যাবর্তন এবং ব্যবসায়িক অসুবিধার মতো অনেক ফলাফল দেখা দেয়। কিন্তু এখন কানাডায় সরকার পরিবর্তন হয়েছে এবং মার্ক কর্নি-এর মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় থাকায় ভারতের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের আশা বেড়েছে।

জি-৭ সম্মেলনের এজেন্ডা: বিশ্বব্যাপী বিষয়গুলিতে ফোকাস

জি-৭ সম্মেলনে এবারের প্রধান এজেন্ডা হল—জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ইউক্রেন সংকট এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা। ভারত, যদিও জি-৭ গোষ্ঠীর সদস্য নয়, তবে বিশ্ব দক্ষিণ (Global South) এর কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত এই মঞ্চগুলিতে প্রায়ই উন্নয়নশীল দেশগুলির উদ্বেগগুলিকে সামনে এনেছে, বিশেষ করে জলবায়ু অর্থায়ন, শক্তি নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নের বিষয়গুলিতে। এবারও আশা করা হচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রযুক্তি, জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যে ভারতের অবদান তুলে ধরবেন।

যদিও সম্মেলনের প্রথম দিনে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতি কিছুটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে তিনি সম্মেলনের দ্বিতীয় সেশন শুরু হওয়ার আগেই ফিরে গেছেন। এতে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে প্রস্তাবিত বৈঠক হয়নি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন যে ট্রাম্প কেবলমাত্র যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সাথে বৈঠক করে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং তারপর অবিলম্বে ফিরে গেছেন।

Leave a comment