রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে শুক্রবার একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। একটি বেসরকারি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির ম্যানেজার পদে কর্মরত ধর্মেন্দ্র চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী সুমন চৌধুরীর মৃতদেহ ফ্ল্যাটের একটি ঘরে একই ফাঁসি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ঘটনাটি গোপালপুরা বাইপাস এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টের, যা গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো পুলিশ ফ্ল্যাটটি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, তবে পুলিশের কাছে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি, যা ঘটনাটিকে রহস্যজনক করে তুলেছে।
পুলিশের মতে, দুজনেই একই ফাঁসি ব্যবহার করে আত্মহত্যা করেছেন, যা খুবই অস্বাভাবিক। এই ভিত্তিতে, পুলিশ আত্মহত্যার পাশাপাশি মানসিক চাপ, পারিবারিক বিবাদ অথবা আর্থিক কারণ-সহ অন্যান্য সম্ভাব্য দিকগুলি খতিয়ে দেখছে। মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং ধর্মেন্দ্রর অফিসের কর্মী ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কল ডিটেইলস এবং ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে।
প্রতিবেশীরা যা বলছেন
জয়পুরের মুহানা থানা এলাকার দাদু দয়াল নগর-এর রাধা রানি অ্যাপার্টমেন্টে শুক্রবার সকালে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, যা গোটা এলাকাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাট নম্বর ৩০১-এ বসবাসকারী ধর্মেন্দ্র চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী সুমনের মৃতদেহ একই ফাঁসি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ಮೂಲত ভরতপুরের বাসিন্দা ধর্মেন্দ্র চৌধুরী একটি বেসরকারি ব্যাংকের ইনস্যুরেন্স শাখায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন, যেখানে তাঁর স্ত্রী সুমন ছিলেন গৃহিণী। এই দম্পতি তাঁদের দুই মেয়ে (১১ এবং ৮ বছর) নিয়ে এই ফ্ল্যাটে থাকতেন। প্রতিবেশীদের মতে, পরিবারটি খুবই মিশুক এবং হাসিখুশি ছিল, এমন পরিস্থিতিতে এই আকস্মিক ঘটনায় সবাই স্তম্ভিত।
স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে মৃত্যুতে চাঞ্চল্য
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে শুক্রবার এক মর্মান্তিক ঘটনায় সবাই স্তম্ভিত হয়ে যায়, যখন একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির ম্যানেজার ধর্মেন্দ্র চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী সুমনকে তাঁদের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধর্মেন্দ্র অফিসে না আসায় এবং ফোন কলের কোনো উত্তর না পাওয়ায় সহকর্মীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা এক বন্ধুর মাধ্যমে বাড়ির খবর নেওয়ার চেষ্টা করেন। বন্ধুর মেয়ে যখন ফ্ল্যাটে পৌঁছায়, তখন দৃশ্যটি ছিল হৃদয় বিদারক - একটি ঘরে সুমনের মৃতদেহ মাটিতে পড়ে ছিল, যেখানে ধর্মেন্দ্রকে ফাঁসি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কোনো পারিবারিক বিবাদের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করেন এবং পরে স্বামী তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখে শোকাহত হয়ে একই ফাঁসি ব্যবহার করে আত্মহত্যা করেন। ময়না তদন্তের পর উভয় মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়, তাঁদের শেষকৃত্যের জন্য ভরতপুর নিয়ে যাওয়া হয়। স্বামী-স্ত্রীর চিতা একসাথে সাজানো হয় এবং পূর্ণ সম্মানের সাথে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। বর্তমানে, পুলিশ আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করছে এবং প্রতিটি সম্ভাব্য দিক খতিয়ে দেখছে।
আগে থেকেই দুজনের আত্মহত্যার পরিকল্পনা ছিল
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে ইনস্যুরেন্স কোম্পানির ম্যানেজার ধর্মেন্দ্র চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী সুমনের আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশের হাতে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র এসেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার সময় স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই ফ্ল্যাটে একা ছিলেন। কয়েক দিন আগেই তাঁরা তাঁদের ১১ এবং ৮ বছর বয়সী মেয়েদের ভরতপুরে তাঁদের পৈতৃক বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। এখন তদন্তে প্রশ্ন উঠছে যে মেয়েদের আগে পাঠানো আত্মহত্যার পূর্ব-পরিকল্পনার অংশ ছিল, নাকি এটি নিছকই কাকতালীয় ঘটনা?
পুলিশ যে ফ্ল্যাটে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে, সেটি সিল করে দিয়েছে। বর্তমানে, এই মামলায় কোনো বহিরাগতের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আত্মহত্যার পেছনে কেবল পারস্পরিক বিবাদ ছিল নাকি তৃতীয় কোনো ব্যক্তিরও ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখছেন।
অন্যদিকে, ফ্ল্যাটের সামনে বসবাসকারী কথাবাচক আচার্য জিতেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী জানিয়েছেন যে চৌধুরী দম্পতি মিশুক এবং হাসিখুশি ছিলেন, যা এই ঘটনাটি পুরো অ্যাপার্টমেন্টের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পুলিশ হত্যার সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না এবং ফরেনসিক ও ময়না তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।