ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের জেরে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা ছিল। এবার ইরান তাদের আকাশসীমা খুলে দিয়েছে। ‘অপারেশন সিন্ধু’র আওতায় আজ ১০০০ ভারতীয় দিল্লি পৌঁছাবে।
তেহরানঃ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘর্ষের মধ্যে এক স্বস্তির খবর এল। ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য ইরান তাদের আকাশসীমা খুলে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে আজ শুক্রবার রাতে ১০০০ ভারতীয় নাগরিক ইরান থেকে দিল্লি ফিরে আসবে। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষভাবে চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যুদ্ধের গুরুতর পরিস্থিতি
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে। দুই দেশের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে এবং সাধারণ নাগরিকদের জীবন নিয়ে আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। সাধারণ মানুষ ভীতিতে দিন কাটাচ্ছে এবং বিপুল সংখ্যক বিদেশী নাগরিক নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইছে।
আকাশসীমা বন্ধের সিদ্ধান্ত ও পরিবর্তন
ইসরায়েলের সাথে চলমান সামরিক সংঘর্ষের কারণে ইরান সম্প্রতি তাদের আকাশসীমা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিল। এর ফলে শুধুমাত্র উড়ানেই নয়, সেখানে আটকে পড়া বিদেশী নাগরিকদের ফিরে আসাও কঠিন হয়ে পড়েছিল।
তবে, ভারত সরকারের অনুরোধ ও ইরানের সহযোগিতার পর এখন আংশিকভাবে আকাশসীমা খুলে দেওয়া হয়েছে যাতে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা যায়।
মশহাদ থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে চার্টার্ড ফ্লাইট
ইরানের মশহাদ শহর থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ফ্লাইটগুলির মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই ফ্লাইটগুলি ইরানের নিজস্ব বিমান সংস্থা পরিচালনা করবে যাতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া দ্রুত ও নিরাপদ হয়।
ইরানের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি
ইরানের স্থানীয় কর্মকর্তারা এই ফিরিয়ে আনার অভিযান সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যে কোনো ভারতীয় নাগরিক যারা দেশ ছাড়তে চায় তাদের জন্য সুবিধাজনক ও নিরাপদ বিকল্প সরবরাহ করা হবে। তাদের বক্তব্য, ক্ষেত্রীয় উত্তেজনার মধ্যেও ইরান ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বারোপ করছে এবং এটি সেই দিকে একটি পদক্ষেপ।
‘অপারেশন সিন্ধু’র পটভূমি
ভারত সরকার দুই দিন আগে ‘অপারেশন সিন্ধু’ শুরু করেছে। এই অপারেশনের লক্ষ্য ইরানে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। যুদ্ধক্ষেত্রে আটকে পড়া নাগরিকদের সাহায্য করার জন্য ভারত সবসময় প্রস্তুত এবং ‘অপারেশন সিন্ধু’ সেই নীতিরই অংশ।
বিদেশ মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় দূতাবাস এই অভিযানের তত্ত্বাবধান করছে এবং প্রভাবিত এলাকাগুলির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। ফিরিয়ে আনার আগে সকল যাত্রীর পরিচয় যাচাই, চিকিৎসা পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য এই মুহূর্তে অস্থিরতার চরমে। ইসরায়েল ও ইরানের সংঘর্ষ শুধুমাত্র দুই দেশের জন্যই নয়, সমগ্র অঞ্চলের জন্যও বিপদ ডেকে আনছে। বিমান হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ফলে অনেক বেসামরিক এলাকায় ক্ষতি হয়েছে।
