বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলা থেকে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা সামনে এসেছে, যা ইন্দোরের আলোচিত রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ওবরা থানা এলাকার লালা আমৌনা গ্রামের বাসিন্দা, চার সন্তানের মা পূজা, তার প্রেমিক কমলেশের সঙ্গে মিলে স্বামী বিক্কুর নৃশংসভাবে হত্যা করে। মহিলা চিকিৎসার बहाনায় স্বামীকে গয়াজীতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে এবং ফেরার পথে প্রেমিকের সঙ্গে মিলিত হয়ে সুপরিকল্পিতভাবে তাকে স্করপিও দিয়ে পিষে মারে।
পুলিশ হত্যার অভিযোগে স্ত্রী পূজাকে গ্রেপ্তার করেছে, যেখানে মূল অভিযুক্ত কমলেশ এখনও পলাতক। এই ঘটনা প্রেম-প্রসঙ্গ, প্রতারণা এবং পারিবারিক বিশ্বাসের ভাঙনের এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাড়িতেও প্রেমিকের আতঙ্ক
মৃত বিক্কুর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে পূজার প্রেমিক কমলেশ দিনের আলোয় তাদের বাড়িতে আসত। পিস্তলের নলের মুখে বিক্কু, সন্তান এবং শাশুড়িকে একটি ঘরে বন্দী করে রাখত এবং পূজা'কে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটাত। বিক্কু ভয়ে কিছু বলার সাহস পেত না। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সে ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছিল, কিন্তু সন্তানদের জন্য সবকিছু সহ্য করেছে।
মৃতের মা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, পুত্রবধূ এবং তার প্রেমিকের ফাঁসি হওয়া উচিত, যাতে এমন ঘটনা আর কেউ ঘটাতে সাহস না করে।
ঝিকটিয়া মোড় থেকে লাশ উদ্ধার
বান্দেয়া থানা এলাকার ঝিকটিয়া মোড়ের কাছে রাস্তার পাশে বিক্কুর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথমে এটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করলেও, পুলিশের সন্দেহের তীর স্ত্রী পূজার দিকে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে পূজা সত্যি কথা স্বীকার করে এবং জানায় যে সে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীর হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।
পুলিশ বর্তমানে পলাতক প্রেমিক কমলেশের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে, যে রফিগঞ্জ-এর কর্মা মাসুদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিরীহ শিশুদের কী দোষ
পুরো ঔরঙ্গাবাদে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক ও ক্রোধের আবহ তৈরি হয়েছে। মানুষ প্রশ্ন তুলছে, চারজন নিরীহ শিশুর কী দোষ ছিল, যারা মা-বাবার সম্পর্কের ফাটলের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে। একদিকে পিতার মৃত্যু, অন্যদিকে মা জেলে – শিশুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে গেছে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে এবং ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।