জুন মাসে হিমাচল প্রদেশের উঁচু অঞ্চলে নতুন করে বরফ পড়া পর্যটকদের জন্য এক বিরাট আশীর্বাদ। কুল্লু-মনালির রোহতাং পাস, লাহৌল-স্পিতি এবং চাম্বা জেলার সচে পাসের কাছে বরফ পড়ায় পর্যটন স্থানগুলির আকর্ষণ আরও বেড়ে গেছে।
HP Tourism: হিমাচল প্রদেশের সুন্দর উপত্যকাগুলি এখন গরম থেকে মুক্তি খুঁজে বেড়ানো পর্যটকদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, দেশের বেশিরভাগ অংশ তীব্র গরমে জ্বলছে, তবুও জুন মাসে হিমাচলের উঁচু অঞ্চলে নতুন করে বরফ পড়েছে। কুল্লু-মনালির রোহতাং পাস, লাহৌল-স্পিতির উঁচু পাহাড় এবং চাম্বার সচে পাসের মতো অঞ্চলে তাজা বরফের চাদর বিছিয়ে গেছে, যা পর্যটকদের হিমালয়ের দিকে টেনে নিয়েছে।
বরফে ঢাকা পাহাড়ের আকর্ষণ বেড়েছে
জুনের প্রথম সপ্তাহে বরফ পড়া আবারও হিমাচলকে শীতকালীন পর্যটনের মতো পরিবেশ দিয়েছে। সাধারণত এই সময় বরফ পড়ার আশা করা হয় না, তবে আবহাওয়ার এই অপ্রত্যাশিত অনুগ্রহ পর্যটনকে নতুন গতি দিয়েছে। বরফে ঢাকা পাহাড়, ঠান্ডা বাতাস এবং পরিষ্কার নীল আকাশ—এগুলি মিলে পর্যটকদের কুল্লু-মনালি, লাহৌল-স্পিতি এবং চাম্বা-খাজিয়ারের দিকে আকর্ষণ করেছে।
শিমলা, কুফরি, নারকান্ডা, কসৌলি, ধর্মশালা এবং ম্যাকলেডগঞ্জের মতো ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও এখন পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় দেখা যাচ্ছে। হিল স্টেশনগুলির তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম, যার ফলে সমতল অঞ্চলের লোকেরা বেশিরভাগই স্বস্তি পেতে পাহাড়ের দিকে ছুটে যাচ্ছে।
যানবাহনের অসুবিধা, দীর্ঘ যানজট সমস্যা সৃষ্টি করেছে
পর্যটকদের ব্যাপক আগমনে রাজধানী শিমলার যানবাহন ব্যবস্থার উপর চাপ বেড়ে গেছে। গত তিন দিন ধরে শিমলার প্রধান রাস্তা কার্ট রোডে দুপুরের সময় যানজটের অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবারও দুপুর ১২ টা থেকে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ ধীর হয়ে পড়ে এবং ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহন ক্রীড়া করতে দেখা গেছে। স্থানীয় প্রশাসন পার্কিং এবং যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করছে, তবে পর্যটকদের সংখ্যা এত বেশি যে ব্যবস্থাগুলি অপর্যাপ্ত প্রমাণিত হচ্ছে। শিমলার কিছু এলাকায় পর্যটকদের হোটেল থেকে পর্যটন স্থানে পৌঁছাতেও অনেক সময় লেগে যাচ্ছে।
হোটেল শিল্পে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
অল হিমাচল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গজেন্দ্র চাঁদ ঠাকুর বলেন, জুনের শুরু থেকেই হিমাচলের সকল প্রধান স্থানে পর্যটকদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সপ্তাহান্তে পরিস্থিতি অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে, শিমলা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উপ-সভাপতি প্রিন্স কুকরেজার মতে, ভিড়ের পরও হোটেলে অকিউপেন্সিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়নি।
শুক্রবার শিমলার হোটেলে অকিউপেন্সি মাত্র ৫০ শতাংশ ছিল। কুকরেজা মনে করেন, অনেক পর্যটক এখন অনলাইন হোমস্টে, বাজেট লজ বা ব্যক্তিগত আবাসের বিকল্প বেছে নিচ্ছে, যার ফলে ঐতিহ্যবাহী হোটেল ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে।
আগামী দিনগুলিতে পর্যটন আরও বাড়বে
পর্যটন বিভাগের মতে, যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে এবং তাপমাত্রা একইভাবে কম থাকে, তাহলে আগামী সপ্তাহগুলিতে পর্যটকদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। বিভাগটি হোটেল পরিচালক এবং ট্যুর অপারেটরদের পর্যটকদের জন্য আরও ভালো সুযোগ-সুবিধা প্রদানের পরামর্শ দিয়েছে। বরফ পড়া হয়তো জুন মাসকে শীতল করে তুলেছে, কিন্তু এটি হিমাচল প্রদেশের পর্যটন শিল্পকে উষ্ণতার সাথে ভরে দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনগুলিতে রাজ্যের অর্থনীতিতে পর্যটন থেকে বড় অবদান পাওয়া যাবে, যদি যানবাহন এবং ব্যবস্থাপনার উপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ থাকে।