গরুড় পুরাণ ১৮টি পুরাণের মধ্যে অন্যতম এবং এটিকে মহাপুরাণ হিসেবে ধরা হয়। গরুড় পুরাণের অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন ভগবান বিষ্ণু। এতে শুধু মৃত্যু এবং মৃত্যুর পরের পরিস্থিতি নিয়েই বলা হয়নি, বরং নীতি-নিয়ম, সদাচার, জ্ঞান, যজ্ঞ, তপস্যা প্রভৃতির গুরুত্ব সম্পর্কেও বলা হয়েছে। এই পুরাণ ব্যক্তিকে ধর্মের পথে চলতে উৎসাহিত করে।
গরুড় পুরাণে জীবনযাপন সম্পর্কিত এমন কিছু বিষয় বলা হয়েছে, যা যদি কোনো ব্যক্তি নিজের জীবনে আত্মস্থ করে, তাহলে সে তার জীবনকে সুখময় ও সহজ করতে পারে এবং মৃত্যুর পরেও ভালো গতি লাভ করতে পারে। আসুন, এই আর্টিকেলে আমরা গরুড় পুরাণের সেই বিষয়গুলি জেনে নিই, যা আপনার জীবনকে সঠিক পথে চালিত করতে পারে।
ভগবান শ্রীহরির শরণে যান
ভগবান বিষ্ণুকে সকল লোকের পালনকর্তা মানা হয়। তাই তিনি আপনার সব দুঃখ দূর করতে পারেন। যে ব্যক্তি তার দিনের শুরু শ্রীহরির নাম দিয়ে করে এবং সর্বদা প্রভুর ভক্তিতে মগ্ন থাকে, তার জীবনের সমস্ত সমস্যা আপনা আপনিই সমাধান হয়ে যায়। যদি আপনি দুঃখ থেকে মুক্তি চান, তাহলে শ্রীবিষ্ণু ভগবানের শরণে যান।
তুলসীর পূজা করুন
গরুড় পুরাণে তুলসী গাছের গুরুত্বও বলা হয়েছে। একে পূজনীয় মনে করা হয়। বলা হয়, প্রাণ যাওয়ার আগে যদি কোনো ব্যক্তির কাছে তুলসী পাতা থাকে, তাহলে মৃত্যুর পর সেই ব্যক্তি ভালো গতি লাভ করে। তুলসী গাছ অবশ্যই বাড়িতে রাখা উচিত এবং প্রতিদিন এর পূজা করা উচিত।
একাদশীর উপবাস করুন
শাস্ত্র মতে, একাদশী হল শ্রেষ্ঠ ব্রতগুলির মধ্যে একটি। গরুড় পুরাণেও এই ব্রতের মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে। এই ব্রত ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গীকৃত। বিশ্বাস করা হয় যে, একাদশীর ব্রত পালন করলে সমস্ত পাপের শেষ হয় এবং ব্যক্তি মোক্ষের দিকে অগ্রসর হয়। তাই, সম্ভব হলে একাদশীর ব্রত অবশ্যই পালন করুন এবং পুরো বিধি-বিধানের সাথে করুন, তবেই এই ব্রত সফল হয়।
মোক্ষদায়িনী গঙ্গা
গরুড় পুরাণে গঙ্গা নদীকে মোক্ষদায়িনী বলা হয়েছে। কলিযুগে এর জল সবচেয়ে বেশি পবিত্র বলে মনে করা হয়। ধর্মীয় কাজে গঙ্গাজল বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকেরই বাড়িতে গঙ্গাজল রাখা উচিত এবং সময়ে সময়ে গঙ্গায় স্নানও করা উচিত।
গরুড় পুরাণের উদ্দেশ্য কী?
মৃত্যুর পর গরুড় পুরাণ শোনানোর উদ্দেশ্য হল, সাধারণ মানুষ যেন জানতে পারে যে, কোনটি ধর্মের পথ আর কোনটি অধর্মের। এটি জেনে ব্যক্তি যেন আত্মসমীক্ষা করে এবং নিজেকে সৎকর্মের দিকে নিয়ে যায়। এছাড়াও, এটিও বিশ্বাস করা হয় যে, গরুড় পুরাণের পাঠ শুনলে মৃত আত্মা শান্তি পায় এবং মুক্তির পথ জানতে পারে। এরপর সে দুঃখ ভুলে গিয়ে প্রভুর দেখানো পথের দিকে অগ্রসর হয়।
এতে আত্মা প্রেতযোনি থেকে মুক্তি পায় এবং ভালো গতি লাভ করে।