গুগল সিইও-র আশ্বাস: AI চাকরি কাড়বে না, বরং সহায়তা করবে

গুগল সিইও-র আশ্বাস: AI চাকরি কাড়বে না, বরং সহায়তা করবে
সর্বশেষ আপডেট: 09-06-2025

AI অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের আবির্ভাব অনেক কাজকে সহজ ও দ্রুত করে তুলেছে, তবে একই সাথে মানুষের চাকরির ব্যাপারেও উদ্বেগ বেড়েছে। অনেক বড় বড় কোম্পানি AI-এর কারণে তাদের কর্মী সংখ্যা কমিয়েছে, যার ফলে চাকরির সুযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

গুগল সিইও: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এর যুগে যেখানে প্রযুক্তি প্রতিদিন নতুন নতুন উচ্চতা অর্জন করছে, সেখানে চাকরির দিক থেকে এই পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বজুড়ে সন্দেহ ও উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে AI-এর ভূমিকা এবং এর ফলে চাকরির উপর পড়তে পারে এমন সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে নানা ধরণের অনুমান করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে গুগল এবং আলফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই AI নিয়ে এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন যা শুধুমাত্র প্রযুক্তি জগতেই নয়, যারা এই সময় তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাদের সকল সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে।

AI: প্রযুক্তি না চ্যালেঞ্জ?

আজকের সময়ে ChatGPT, Google Gemini এবং OpenAI এর মতো AI টুলস কোডিং এর ক্ষেত্রেও নিজেদের উপস্থিতি জানিয়েছে। এই টুলস মানুষের মস্তিষ্কের মতো জটিল কোডিং করতে পারে এবং তাদের গতি ও দক্ষতার কারণে অনেক সময় মানুষের চেয়েও ভালো ফলাফল দিতে পারে। এই প্রযুক্তির আগমনের পর থেকে অনেক বিশেষজ্ঞ অনুমান করেছিলেন যে আগামী বছরগুলিতে সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির ব্যাপক কমতি হতে পারে। কিছু রিপোর্ট অনুসারে, আগামী পাঁচ বছরে কোডিং করার কাজের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে যেতে পারে।

সুন্দর পিচাইয়ের AI-এর উপর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি

এমন সময়ে গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই তার সাম্প্রতিক একটি পডকাস্টে AI নিয়ে ইতিবাচক ও আশ্বস্তিদায়ক কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে গুগলের প্রায় 30% সফ্টওয়্যার কোড AI-এর সাহায্যে লেখা হচ্ছে। এটি দেখায় যে AI এখন কোম্পানির জন্য একটি সহায়ক সরঞ্জাম হয়ে উঠেছে, যা ইঞ্জিনিয়ারদের কাজকে সহজ করে, তাদের প্রতিস্থাপন করে না।

সুন্দর পিচাই স্পষ্ট করেছেন যে গুগল আগামী সময়ে তাদের সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মী সংখ্যা প্রায় 10% বাড়াবে। এর অর্থ হল কোম্পানি AI-এর সাহায্যে আরও বেশি ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি দেবে, কম করবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন যে AI যতই উন্নত হোক না কেন, তা মানুষের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং সৃজনশীল চিন্তার সাথে তুলনা করতে পারে না।

AI মানুষের জায়গা নিতে পারে না

সুন্দর পিচাই স্পষ্ট করেছেন যে AI টুলস কোডিংকে সহজ করে তুলতে পারে তবে এটি কখনোই মানুষের জায়গা নিতে পারে না। মানুষের চিন্তা-ভাবনা এবং নতুন সমাধান খোঁজার ক্ষমতা AI-তে আসা এখনও অসম্ভব। তিনি বলেছেন, মানুষ কোডিংয়ে আনন্দ পায় এবং এটাই কারণ যে AI কখনোই পুরোপুরি মানুষের জায়গা নিতে পারবে না। এই কথা বিশেষ করে যারা AI-এর বর্ধমান প্রভাব নিয়ে তাদের চাকরি নিয়ে অনিরাপদ বোধ করছিলেন তাদের জন্য বড় স্বস্তির বার্তা।

AI-এর সাথে উন্নত সহযোগিতার প্রয়োজন

সুন্দর পিচাইয়ের এই বক্তব্য আবারও স্পষ্ট করে যে ভবিষ্যতে AI এবং মানব সহযোগিতার নতুন দিকগুলো দেখা যাবে। যেখানে AI দ্রুত প্রযুক্তিগত কাজ সম্পন্ন করবে, সেখানে মানুষের মস্তিষ্ক সেই জটিল সমস্যা সমাধান করবে যার জন্য সৃজনশীলতা, অভিজ্ঞতা এবং চিন্তার প্রয়োজন। এটা বুঝতে হবে যে AI একটি সরঞ্জাম মাত্র এবং সঠিক দিকে এর ব্যবহার মানুষের কাজকে আরও উন্নত করতে পারে। AI-এর এই বর্ধমান ব্যবহারের ফলে শিল্পে নতুন চাকরির সৃষ্টি হবে, যা প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেবে।

সুন্দর পিচাইয়ের বক্তব্য সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের একটি নতুন আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। AI-এর সাহায্যে কোডিং প্রক্রিয়া শুধুমাত্র দ্রুত হবে না, বরং এটি তাদের আরও বেশি সৃজনশীল ও কৌশলগত কাজে মনোনিবেশ করার সুযোগ দেবে। কোডিংয়ে AI-এর ব্যবহার একটি সহায়ক সরঞ্জামের মতো হবে, যা ইঞ্জিনিয়ারদের জটিল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।

Leave a comment