G7 শীর্ষ সম্মেলনে মোদীর অংশগ্রহণ: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের সম্ভাবনা

G7 শীর্ষ সম্মেলনে মোদীর অংশগ্রহণ: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের সম্ভাবনা
সর্বশেষ আপডেট: 07-06-2025

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবারও বিশ্বমঞ্চে ভারতের কণ্ঠস্বর উচ্চারণ করতে যাচ্ছেন। অপারেশন সিন্দুরের সফল সমাপ্তির পর এটি তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক ভ্রমণ। এবার তাঁর গন্তব্য কানাডা, যেখানে তিনি G7 শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।

নয়াদিল্লি: অপারেশন সিন্দুরের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথমবারের মতো কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে যোগ দিচ্ছেন। এই বিদেশ ভ্রমণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে কারণ তিনি G7 শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যেখানে আতঙ্কবাদের বিষয়ে আবারও পাকিস্তানের ভূমিকা উন্মোচিত হতে পারে। এই শীর্ষ সম্মেলনে পিএম মোদীকে কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা মোদী মহোদয় গ্রহণ করেছেন।

আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় আঘাতের সম্ভাবনা

এই সম্মেলনে পিএম মোদী আবারও আতঙ্কবাদের বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরবেন। সূত্রের মতে, তিনি পূর্ণ মঞ্চ থেকে পাকিস্তানের আতঙ্কবাদ সমর্থনকারী নীতির কার্যকলাপ উন্মোচন করতে পারেন। বিশেষ করে অপারেশন সিন্দুরের পর, যেখানে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্ককে ভারত তীব্র জবাব দিয়েছে, পিএম মোদী সেই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব সম্প্রদায়কে ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের সাথে পরিচিত করাবেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ভারত ও কানাডার সম্পর্ক আগের তুলনায় নাজুক মোড়ে রয়েছে। তবে, উভয় দেশের সরকার এই সম্পর্ক উন্নত করার দিকে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

ভারত-কানাডা সম্পর্কের নতুন অধ্যায়

পিএম মোদী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পিএম কার্নিকে নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং G7 সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মোদী লিখেছেন, "ভারত ও কানাডা উভয়ই সজীব গণতন্ত্র এবং উভয় দেশ পারস্পরিক মূল্যবোধ ও সম্মানের সাথে কাজ করে চলেছে।" উল্লেখ্য, উভয় দেশ এখন আবার হাইকমিশনারদের নিয়োগ এবং কূটনৈতিক স্তরে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের পরিকল্পনার উপর কাজ করছে।

পূর্ব প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কর্তৃক ভারতের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের কারণে উভয় দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছিল। ট্রুডো দাবি করেছিলেন যে ভারতের সংস্থাগুলির খালিস্তান সমর্থক হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে হাত রয়েছে। ভারত এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে এবং কানাডার কাছে প্রমাণ চেয়েছিল, যা আজ অবধি জমা দেওয়া হয়নি।

নিরাপত্তা নিয়ে ভারত গুরুত্ব সহকারে

ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পিএম মোদীর ভ্রমণের সময় কানাডাকে তাঁর নিরাপত্তার বিশেষ যত্ন নিতে হবে। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী পিএম মোদীর সফরের বিরোধিতা করছে এবং পিএম কার্নির উপর চাপ সৃষ্টি করছিল যাতে তাকে আমন্ত্রণ করা না হয়। এই পরিস্থিতিতে ভারত চায় কানাডা এই ভ্রমণের সময় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করুক এবং দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।

আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সাথেও সাক্ষাতের সম্ভাবনা

G7 সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় নেতার মধ্যে এই সাক্ষাত ফেব্রুয়ারী মাসে ওয়াশিংটনে হয়েছিল। পাকিস্তান নিয়ে ভারত ও আমেরিকার উদ্বেগ একই রকম এবং উভয় দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ কৌশল নিয়ে কাজ করছে। তাই এই সাক্ষাত কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

যদিও ভারত G7-এর সদস্য নয়, তবুও গত কয়েক বছর ধরে তাকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এটি ভারতের ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী সুনাম এবং কৌশলগত গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। প্রধানমন্ত্রী মোদী আতঙ্কবাদ, বিশ্ব অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর ভারতের মতামত তুলে ধরবেন।

এই সফরের মাধ্যমে ভারত তার বিশ্বব্যাপী ছবি আরও শক্তিশালী করতে চায়। পাশাপাশি, এই ভ্রমণ একটি কূটনৈতিক ইঙ্গিত হবে যে ভারত এখন কেবলমাত্র একটি আঞ্চলিক শক্তি নয়, বরং বিশ্ব সমতা গঠনকারী দেশে পরিণত হয়েছে।

Leave a comment