হলিউডের জনপ্রিয় হরর ফ্র্যাঞ্চাইজি ফাইনাল ডেস্টিনেশনের ষষ্ঠ পর্ব, ‘Final Destination: Bloodlines’ মুক্তির সাথে সাথেই বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। মাত্র চার দিনের মধ্যেই এই ছবি ‘Mission Impossible’ এর মতো অ্যাকশন ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে।
Final Destination Bloodlines Box Office Collection Day 4: বলিউডে যেখানে অজয় দেবগনের ছবি ‘রেইড ২ (Raid 2)’ বক্স অফিসে চমৎকার সাফল্য অর্জন করছে, সেখানে এবার তাকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিতে হলিউড থেকে এসেছে এক নতুন ছবি। ফাইনাল ডেস্টিনেশন ফ্র্যাঞ্চাইজির ষষ্ঠ পর্ব ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইন্স’ ১৫ মে সিনেমা হলে মুক্তি পেয়ে তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছে।
জ্যাক লিপোভস্কি এবং অ্যাডাম স্টেইনের পরিচালনায় নির্মিত এই ছবি ভারতীয় বক্স অফিসে অসাধারণ আয় করে দর্শকদের আসনে বন্দি করে রেখেছে। কেবলমাত্র ভারতেই নয়, বিশ্বব্যাপী মাত্র চার দিনে এত বড় ব্যবসা করেছে এই ছবি যা এ বছর কোনো বলিউড ছবিই করতে পারেনি।
২৫ বছরের ঐতিহ্য, ১৪ বছর পর তুমুল প্রত্যাবর্তন
‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইন্স’ ২০০০ সালে শুরু হওয়া এই ফ্র্যাঞ্চাইজির ষষ্ঠ পর্ব, যা ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পঞ্চম পর্বের পর দীর্ঘ বিরতির পর দর্শকদের কাছে ফিরে এসেছে। জ্যাক লিপোভস্কি এবং অ্যাডাম স্টেইনের পরিচালনায় নির্মিত এই ছবি আবারও ‘মৃত্যুকে পরাজিত করা’ ধারণাকে নতুন ধরণ এবং টুইস্টের সাথে উপস্থাপন করেছে।
এইবার গল্পের কেন্দ্রে আছে আইরিস নামের এক যুবতী, যে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার ভয়ঙ্কর পূর্বাভাস পায় এবং সময়মতো সেখানে উপস্থিত কয়েক ডজন মানুষকে বাঁচিয়ে নেয়। কিন্তু মৃত্যু এত সহজে হেরে যায় না। এরপর শুরু হয় একের পর এক তাদের রহস্যময় এবং ভয়াবহ মৃত্যুর ধারা, যা থেকে বাঁচা অসম্ভব বলে মনে হয়।
চার দিনে ৪১০ কোটি টাকার ঝড়, ভারতেও জমজমাট ‘মৃত্যু’
মাত্র চার দিনের মধ্যে ‘Final Destination: Bloodlines’ বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ৪১০ কোটি টাকার ঘর পার করে গেছে। এই আয় এ বছরের যেকোনো বড় হলিউড বা বলিউড ছবির চেয়ে অনেক বেশি। ভারতেও ছবিটি দারুণ সাফল্য পেয়েছে। ভারতীয় বক্স অফিসে ছবির পারফরম্যান্স (স্যাকনিলকের তথ্য অনুযায়ী):
- প্রথম দিন - ৪.৫ কোটি
- দ্বিতীয় দিন - ৫.৩৫ কোটি
- তৃতীয় দিন - ৬.০০ কোটি
- চতুর্থ দিন - ৬.৪৯ কোটি
- মোট (৪ দিন) - ২২.৩৪ কোটি
এই আয় বিশেষ করে তাই আলোচিত কারণ একই সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত অজয় দেবগনের ‘রেইড ২’ কেও আয়ের দিক থেকে এটি পেছনে ফেলে দিয়েছে। ‘রেইড ২’ যেখানে ১৮তম দিনে মাত্র ৫.৫ কোটি টাকা আয় করতে পেরেছে, সেখানে ‘ব্লাডলাইন্স’ চতুর্থ দিনেই ৬.৪৯ কোটি টাকা আয় করেছে।
ভয় যা বন্দি করে রাখে, এবং গল্প যা শেষ পর্যন্ত চমকে দেয়
‘Final Destination’ ফ্র্যাঞ্চাইজির বিশেষত্ব এর অনন্য চিত্রনাট্য, যেখানে ভাগ্য, ভবিষ্যদ্বাণী এবং মৃত্যুর মধ্যে এক রহস্যময় লড়াই চলে। ‘ব্লাডলাইন্স’ এই ঐতিহ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়, কিন্তু এবার আরও বেশি মানসিক গভীরতা এবং মানসিক চাপের সাথে। ছবির সিনেমাটোগ্রাফি, সাউন্ড ডিজাইন এবং ভিএফএক্স এটিকে এক অসাধারণ সিনেমার অভিজ্ঞতা করে তুলেছে। বিশেষ করে সেই দৃশ্যগুলোতে যেখানে মৃত্যুর আভাসও পাওয়া যায় না, সেখানে দর্শকদের হৃৎস্পন্দন থেমে যায়।
- ফ্র্যাঞ্চাইজির জনপ্রিয়তা: আগের পাঁচটি ছবির বিশাল ভক্তসংখ্যা ইতোমধ্যেই ছিল, এবং মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এর পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় ছিল।
- বাস্তবসম্মত হরর উপাদান: গল্পে হরর ব্যবহার করা হয়েছে শুধুমাত্র ভয় দেখানোর জন্য নয়, বরং ঘটনার জটিলতা বাড়ানোর জন্য।
- পরিচালনা এবং চিত্রনাট্য: জ্যাক লিপোভস্কি এবং অ্যাডাম স্টেইনের জুটি চিত্রনাট্যকে সুন্দর এবং উত্তেজনাময় রেখেছে।
- বিশ্বব্যাপী আকর্ষণ: এটি কেবলমাত্র আমেরিকান দর্শকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং ইউরোপেও এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
যদি এভাবেই ছবিটি দর্শকদের সিনেমা হলে টেনে আনতে থাকে, তাহলে এর ১০০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতে এর আগামী সপ্তাহান্তগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, যেখানে এটি ‘দ্য নান’, ‘দ্য কনজুরিং’, এবং এমনকি ‘ইট’ এর মতো সুপারহিট হরর ছবির আয়ের রেকর্ডকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।