এমবিবিএস শিক্ষা ঋণ: ৭.৫ লক্ষ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুযোগ

এমবিবিএস শিক্ষা ঋণ: ৭.৫ লক্ষ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুযোগ
সর্বশেষ আপডেট: 22-05-2025

এমবিবিএস করার জন্য ছাত্ররা ৭.৫ লক্ষ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ নিতে পারেন। সরকারি ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়াই ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়। মরটোরিয়াম পিরিয়ডের পর EMI শুরু হয়।

শিক্ষা ঋণ: দেশে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী, কিন্তু এমবিবিএস পড়াশোনার খরচ অনেক সময় সেই স্বপ্নের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলে ফি কম হয়, কিন্তু বেসরকারি কলেজগুলিতে মেডিকেল পড়াশোনা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা ঋণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে দেখা দেয়। এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে বলব এমবিবিএসের জন্য কত ঋণ পাওয়া যায়, কীভাবে এই ঋণ পরিশোধ করতে হয় এবং কোন বিষয়গুলির দিকে নজর রাখা উচিত।

এমবিবিএসের জন্য কত টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়?

ভারতে প্রায় সকল বড় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেডিকেল পড়াশোনার জন্য শিক্ষা ঋণ প্রদান করে। এমবিবিএস-এর মতো পেশাদার কোর্সের জন্য ছাত্রছাত্রীরা ৭.৫ লক্ষ টাকা থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা অথবা তার চেয়েও বেশি ঋণ পেতে পারেন। সাধারণত সরকারি ব্যাংক কোনও নিরাপত্তা ছাড়াই ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়। যদি ছাত্রকে তার চেয়ে বেশি অর্থের প্রয়োজন হয়, তাহলে তার জন্য কোনও গ্যারান্টর বা কো-অ্যাপ্লিক্যান্ট প্রয়োজন।

কিছু বেসরকারি ব্যাংক বা NBFC (Non-Banking Financial Companies) কলেজের খ্যাতি, ছাত্রের মেধা এবং ভর্তির চিঠি দেখে ৭৫ লক্ষ টাকারও বেশি ঋণ প্রদান করে। এখানে মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, ঋণের পরিমাণ কলেজের ফি স্ট্রাকচার এবং অন্যান্য খরচ (যেমন হোস্টেল, বই, ল্যাব ফি) দেখে নির্ধারিত হয়।

শিক্ষা ঋণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ঋণ পেতে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে রয়েছে ছাত্রের ভর্তির চিঠি, কোর্স এবং ফি স্ট্রাকচার, পূর্ববর্তী ক্লাসের মার্কশীট, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং কো-অ্যাপ্লিক্যান্টের আয়ের প্রমাণ। অনেক ব্যাংক অনলাইন আবেদনের সুবিধাও দেয় যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে সহজ করে তোলে।

ঋণ পরিশোধের প্রক্রিয়া কী?

শিক্ষা ঋণের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল ছাত্রকে পড়াশোনার সময় ঋণ পরিশোধ শুরু করতে হয় না। এটাকে "মরটোরিয়াম পিরিয়ড" বলা হয়। এটি সেই সময়কাল যখন ছাত্র পড়াশোনা করছে এবং তাকে কোনও EMI দিতে হয় না। সাধারণত এই পিরিয়ড কোর্সের সময়কাল প্লাস ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত হয়।

মরটোরিয়াম পিরিয়ড শেষ হলেই ব্যাংক EMI নেওয়া শুরু করে। ঋণ পরিশোধের সময়কাল ব্যাংকের উপর নির্ভর করে, কিন্তু এটি সাধারণত ৫ বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। ঋণের পরিমাণ যত বেশি হবে, পরিশোধের সময়ও তত বেশি পাওয়া যেতে পারে।

ব্যাজের হার কী?

শিক্ষা ঋণের উপর ব্যাজের হার ব্যাংক এবং ঋণের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। সরকারি ব্যাংক সাধারণত বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় কম সুদের হারে ঋণ দেয়। বর্তমানে ভারতে শিক্ষা ঋণের সুদের হার গড়ে ৮% থেকে ১২% এর মধ্যে। অনেক ব্যাংক মহিলা এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সুদের হারে ছাড়ও দেয়।

সরকারের পরিকল্পনা এবং সাবসিডি

ভারত সরকার শিক্ষা ঋণকে উৎসাহিত করার জন্য "ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড ফর এডুকেশন লোন" (CGFEL) এবং "ইন্টারেস্ট সাবসিডি স্কিম"-এর মতো অনেক প্রোগ্রাম চালু করেছে। যদি ছাত্র গরিব বা EWS শ্রেণীভুক্ত হয় এবং সরকারি অথবা স্বীকৃত কলেজে ভর্তি হয়, তাহলে তাকে সুদের উপর সাবসিডি দেওয়া হয়। এতে ঋণের খরচ কমে যায় এবং ভবিষ্যতে পরিশোধ করতে সুবিধা হয়।

Leave a comment