চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসীতার বিরুদ্ধে ফিলিপাইন ভারতকে আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে গঠিত ‘স্কোয়াড’ গোষ্ঠীর সদস্য হতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যাতে দক্ষিণ চীন সাগরে ভারসাম্য বজায় রাখা যায়।
India-Philippines-Squad: চীনের আগ্রাসী নীতির প্রতিবাদে ফিলিপাইন এখন একটি শক্তিশালী সামরিক জোট গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে ফিলিপাইন ভারতকে একটি বৃহৎ কৌশলগত জোট "স্কোয়াড"-এ যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে। এই জোটে ইতোমধ্যে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান রয়েছে। এর উদ্দেশ্য ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও আগ্রাসী কৌশলের প্রতিরোধ করা।
ফিলিপাইনের সেনাপ্রধানের বিবৃতি
ফিলিপাইনের সেনাপ্রধান জেনারেল রোমিও এস ব্রাউনার চীনের সম্প্রসারণবাদী নীতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, চীন দক্ষিণ চীন সাগরে অবৈধভাবে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করছে এবং সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে। এর উদ্দেশ্য এই অঞ্চলে নিজের আধিপত্য স্থাপন করা এবং ফিলিপাইনসহ অন্যান্য দেশের উপর চাপ প্রয়োগ করা।
জেনারেল ব্রাউনার পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলিকে এই কৌশলগত জোটের অংশ হতে হবে, যাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা শক্তিশালী করা যায়। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত রায়সিনা ডায়ালগ-এ ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ফিলিপাইনের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সমুদ্র নিরাপত্তা এবং চীন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
চীনের সম্প্রসারণবাদী নীতি নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ
ফিলিপাইনের সেনাপ্রধানের মতে, চীন ইতোমধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে তিনটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে, যা তাদের এই অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী করছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যদি এটি রোধ না করা হয়, তাহলে আগামী দিনে চীন এই সমগ্র অঞ্চল দখল করতে পারে।
ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো অনেক দেশ চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক কর্মকাণ্ডে উদ্বিগ্ন। চীন এই অঞ্চলকে নিজেদের সমুদ্র অঞ্চল বলে দাবি করে এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে চায়।
ভারতের কি ভূমিকা হবে?
ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী বলেছেন যে, ভারতের দায়িত্ব হলো হিন্দ মহাসাগর অঞ্চলকে শান্ত ও স্থিতিশীল রাখা, যাতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ব্যাহত না হয়। তিনি বলেছেন,
"ভারতীয় নৌবাহিনী ক্রমাগতভাবে নিজের উপস্থিতি বজায় রাখছে এবং এই সমগ্র অঞ্চলে প্রতিটি কর্মকাণ্ডের উপর নজর রাখছে।"
ভারত ইতোমধ্যে কোয়াড (Quad) গোষ্ঠীর সদস্য, যাতে আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া রয়েছে। যদি ভারত স্কোয়াডের সদস্য হয়, তাহলে এটি চীনের বিরুদ্ধে আরও একটি শক্তিশালী কৌশলগত সামনে হবে।
মালদ্বীপের সাবেক রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প সরকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন
রায়সিনা ডায়ালগে মালদ্বীপের সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশিদও অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি আমেরিকার নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, কি ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার সহযোগীদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে?
এর উত্তরে জেনারেল ব্রাউনার বলেছেন যে, তিনি আশাবাদী যে আমেরিকা এই অঞ্চলে তার সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে এবং চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক কর্মকাণ্ডের উপর কঠোর নজরদারি করবে।
